হাসিনা-খালেদাকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল না : জেএমবি

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা জামায়াতুল ‍মুজাহিদিনের (জেএমবি) নেই। ভারতীয় পত্রিকাগুলোতে এ সংক্রান্ত যেসব সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া সাত সদস্যের তদন্তকারী দলের জেরার মুখে গ্রেপ্তারকৃত জেএমবির শীর্ষ নেতা রহমতউল্লাহ ওরফে সাজিদ এই কথা বলেছেন।

অন্যদিকে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে যে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল তা কোনো নাশকতার উদ্দেশ্যে করা হয়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি।

ভারত সফরে যাওয়া তদন্ত দলের এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বর্ধমান বিস্ফোরণ ঘটনার পর আটককৃত জঙ্গিদের বরাত দিয়ে ভারতের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৩০০ জঙ্গি বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এমন সংবাদের পর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। গত ১৭ নভেম্বর ভারতীয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইয়ের মহাপরিচালক শারদ কুমারের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে। উভয় দেশের গোয়েন্দাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই বিষয়টি উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। কিন্তু তখনও ভারতীয় গোয়েন্দারা বিষয়টি নিশ্চিত করনেনি।

তবে এমন সংবাদ প্রথম প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স। বার্তাসংস্থাটির ভারতীয় সাংবাদিক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করেন, জেএমবি জঙ্গিরা খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে।

ভারতীয় গোয়েন্দা দল ঢাকা ত্যাগ করার গত ২৭ থেকে ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল ভারত সফরকালে কথা বলেন আটককৃত জেএমবির শীর্ষ নেতা সাজিদের সঙ্গে। কিন্তু বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি এ ধরনের কোনো তথ্যের সত্যতা স্বীকার করেননি।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেসব জঙ্গি ভারতে আত্মগোপন করেছে তারা মাঝারি ধরনের কোনো নাশকতা করার মতো শক্তিও এখনো পর্যন্ত অর্জন করে উঠতে পারেনি।

ভারতে পলাতক জঙ্গিদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। তারা তাদের সদস্যদের স্ত্রীদের মাধ্যমে বোরকা তৈরি করে বিভিন্ন দোকান ও বাসায় ফেরি করে বিক্রি করে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করছে। গত দুই বছর ধরে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতের বর্ধমানে ঘাঁটি তৈরি করে। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা নজরদারির কারণে তারা ঘনঘন স্থান পরিবর্তন করতো।

ভারত সফরকালে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বর্ধমানের বোমা বিস্ফোরণের স্থানটি পরিদর্শন করে। এসময় তারা বিস্ফোরিত বোমার আলামতও পরীক্ষা করে। বর্ধমানে যে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনানো হয়েছিল সেটি বিশেষ ধরনের কোনো বোমা ছিল না। বাংলাদেশে হরতালের সময় ককটেল তৈরিতে যে ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয়, বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় ব্যবহৃত বোমার উপকরণও ছিল সেরকমই।

বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সাজিদ আরো জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা হয় বর্ধমানে। এই ছিনতাই ঘটনার নেতৃত্ব দেয়া জঙ্গি নেতা আনোয়ার হোসেন ফারুক ঘটনায় ৫ মাস আগে গত সেপ্টেম্বরে বর্ধমানে আসে এই হামলার পরিকল্পনা করতে।

বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনার সময় ক্রিশালের ঘটনায় ছিনতাই হওয়া জঙ্গি বোমারু মিজান ও সালেহিনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান সাজিদ।



মন্তব্য চালু নেই