গ্রাহকদের গোপন তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছে ইয়াহু

গ্রাহকদের ওপর নজরদারি এবং তাদের তথ্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে ইয়াহু। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে।

কয়েকজন সাবেক ইয়াহু কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স-এর ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গোয়েন্দাদের প্রয়োজন মতো গ্রাহকদের নির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহের জন্য ইয়াহু একটি বিশেষ সফটওয়্যারও তৈরি করেছিল। প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন সরকারের চাহিদা অনুযায়ী হাজার হাজার ইমেইল অ্যাকাউন্টে নজরদারি চালিয়েছে এবং সেসব তথ্য ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর কাছে তুলে দিয়েছে।

ঠিক কোন কোন তথ্য ইয়াহু গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, গোয়েন্দারা হয়তো কয়েকটা শব্দ বা বাক্য দিয়ে সার্চ করতে বলেছিলেন ইয়াহুকে।

রয়টার্স-এর পক্ষ থেকে ওই অনুসন্ধানের বিষয়ে ইয়াহু-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রতিষ্ঠানটি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানায়, ‘ইয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে চলা প্রতিষ্ঠান, আর প্রতিষ্ঠানটি প্রচলিত সব আইন মেনে চলে।’ তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ইয়াহুর প্রধান তথ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন অ্যালেক্স স্ট্যামোস। ইয়াহুর দুই সাবেক কর্মকর্তার মতে, তখন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ম্যারিসা মায়েরের নির্দেশনার বিরুদ্ধে ছিলেন কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। অ্যালেক্স তাদেরই একজন। তিনি এখন ফেসবুকে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন। তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করা হলেও ফেসবুকের মুখপাত্র তা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এনএসএ-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব প্রশ্নের উত্তর তারা দেবে না। তারা জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালকের দফতরে যোগাযোগ করতে বলে। কিন্তু সেখান থেকেও কোনও মন্তব্য করতে রাজী হয়নি কেউ।

মার্কিন ফোন ও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো আগে থেকেই গোয়েন্দা সংস্থার কাছে গ্রাহকদের তথ্য সরবরাহ করে আসছে। তবে কয়েকজন সাবেক সরকারি-বেসরকারি নজরদারি বিশেষজ্ঞের মতে, এতে বড় সংখ্যার ওয়েব তথ্যের চাহিদা বা এজন্য নতুন সফটওয়্যার তৈরি করার মতো ঘটনা এর আগে চোখে পড়েনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এনএসএ বা এফবিআই অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানির কাছেও নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য চেয়ে থাকে। অভ্যন্তরীণ নজরদারির জন্য এনএসএ এফবিআই-এর মাধ্যমে তথ্য চেয়ে থাকে। তাই কোন তথ্য কোন গোয়েন্দা সংস্থার জন্য যাওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করা কষ্টকর।

ইয়াহুর মতো অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানির কাছেও তথ্য চাওয়া হয়। দুই বৃহৎ ইমেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গুগল ও মাইক্রোসফটের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও, তারা রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।



মন্তব্য চালু নেই