গর্ভপাতের দিকে ঝুঁকছে দেশটির নারীরা! কিন্তু কেন?

জিকা ভাইরাসের প্রদুর্ভাব এবং গর্ভের সন্তান মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে লাতিন আমেরিকায় নারীরা গর্ভপাতের দিকে ঝুঁকছে।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ব্রাজিলে গর্ভপাত করাতে চান এমন নারীর সংখ্যা অতীতের তুলনায় অন্তত দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য দেশে এই হার এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে।

লাতিন আমেরিকার অনেক দেশের সরকার জিকা ভাইরাসের প্রদুর্ভাবের মধ্যে নারীদের গর্ভধারণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শও দিয়েছে। যদিও লাতিন আমেরিকার অনেক অঞ্চলে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেক সংস্থা অনানুষ্ঠানিকভাবে গর্ভপাতের ওষুধ নারীদের হাতে তুলে দিচ্ছে।

সেগুলোর অন্যতম একটি হল, ‘উইমেন অন ওয়েব’। এরা অনলাইনে নারীদের পরামর্শ দেয় এবং পরে গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ করে।

২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর ‘প্যান আমেরিকান হেল্থ অরগানাইজেশন’ লাতিন আমেরিকায় জিকা সতর্কতা জারি করে।

উইমেন অন ওয়েবে পেরুর এক নারী লেখেন, “আমি খুবই উদ্বিগ্ন। আমি দুই মাসের গর্ভবতী এবং আমার দেশে জিকা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে।”

“আমরা সবাই খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি এবং আমি কোনও ভাবেই একটি অসুস্থ শিশুর জন্ম দিতে চাই না। দয়া করুন, আমি গর্ভপাত করাতে চাই। কারণ এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।”

ভেনিজুয়েলা থেকে আরেক নারী লেখেন, “আমি চারদিন আগে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি।”

“আমি বাচ্চাদের ভালবাসি। কিন্তু জিকার কারণে ঝুঁকিতে থাকা গর্ভের শিশুকে পৃথিবীতে আনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে আমার মনে হয় না। আমার গর্ভপাত প্রয়োজন। দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন।”

গবেষকদের একজন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. ক্যাথেরিন এইকেন বলেন, “সব দেশের সরকার বলছে, গর্ভবতী হবেন না। সেখানে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এবং সেখানে অনেক নারী বিষয়টিকে নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছে।”

“পুরো অঞ্চল জুড়ে গর্ভপাতের হার ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।”

সরকার পক্ষ থেকে নারীদের গর্ভধারণে বিরত থাকার পরামর্শের সমালোচনা করে এইকেন আরও বলেন, “এই বার্তা ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয়। এর ফলে নারীদের মধ্যে ভয়, উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো মানেই হয় না।”

‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’ এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।



মন্তব্য চালু নেই