প্রতিবাদের চুম্বনও চলছে, চলছে গ্রেফতারও
যুগলদের ঠোঁটে ঠোঁট রেখে প্রতিবাদ কলকাতায় ( ভিডিও )

কেরলের পর কলকাতাতেও নীতিপুলিশগিরির প্রতিবাদে সরব হয়েছে তরুণ-তরুণীরা। কলকাতা শহরে আজ বুধবার দুটি সভার আয়োজন করা হয়েছে। একটি যাদবপুরে, একটি কলেজস্ট্রিটের কফি হাউসের সামনে। আয়োজকদের বক্তব্য, নীতিপুলিশ গিরি মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু কারোর ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানোকে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। তাই এই প্রতিবাদের আয়োজন। সম্প্রতি কেরলের একটি কফি শপে প্রেমিক-প্রেমিকা চুম্বনের একটি দৃশ্য স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচারিত হওয়ার পর বিজেপির সদস্যরা সেই কফি শপে হামলা চালায়। কিছুদিনের মধ্যেই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটের হাত ধরে এই নীতিপুলিসের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বিদ্রোহের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ডাক দেওয়া হয়েছিল ভালবাসাকেই প্রতিবাদের হাতিয়ার করার। সেইমত কোচির সমুদ্র সৈকতে চুম্বন অভিযানের ডাক দিযেছিল একটি সংগঠন। পুলিশ অবশ্য সংগঠকদের গ্রেপ্তার করে চুম্বন অভিযান বন্ধ করতে চেযেছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারও যেমন চলেছে তেমনি চুম্বনও চলেছে। তবে কেরলের তরুণ-তরুণীদের প্রতিবাদের ঢেউ এসে পড়েছে কলকাতাতেও। আর তাই কলকাতার তরুণ-তরুণীরাও প্রতিবাদ জানাতে মিছিল ও পথসভার আয়োজন করেছে।
![]()
জঙ্গি গুণ্ডে হুঁশিয়ার-তেরে সামনে করেঙ্গে পেয়ার’, ‘আমার শরীর আমার মন, দূর হটাও রাজশাসন’ শীর্ষক স্লোগান ছিল মুখে, আর ঠোঁট ছিল ঠোঁটে।
কোচির রেস্তোরাঁয় আড্ডারত যুগলের ওপর বিজেপির যুব শাখার কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে এমন অভিনব স্লোগান আর কায়দায়ই কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আর কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউজের সামনে কর্মসূচি পালন করেছেন প্রেমিক-প্রেমিকারা।
সম্প্রতি কেরালার কোচির একটি রেস্তোরাঁয় এক যুগলের চুমু খাওয়ার দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেই রেস্তোরাঁয় হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিজেপির যুব শাখার কর্মীরা। একইসঙ্গে রেস্তোরাঁয় তখন আড্ডারত যুগলদেরও হেনস্তা করে তারা।
ক্ষমতাসীনদের যুব সংগঠনের কর্মীদের এমন কাণ্ডের বিরুদ্ধে রাজপথে ‘চুমু দিবস’ পালন করে কোচির যুগলরা। কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। প্রতিবাদে দেশব্যাপী চুমু কর্মসূচি ঘোষণা করে যুগলরা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পেজ খুলে প্রচারণাও শুরু করা হয়।
সেই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় প্রেমিক-প্রেমিকারা ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড গড়ে আন্দোলন শুরু করেছেন।
বুধবার কলকাতার রাজপথও ভেসেছে যুগলদের চুমুর ঢেউয়ের।
আন্দোলনকারীদের দাবি, কোনটা শালীন বা কোনটা আশালীন, কোনটা নীতি বা কোনটা নীতিবহির্ভূত-তা নির্ণয় করার অধিকার কোনো রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীকে দেয়নি ভারতের সংবিধান। তাই যুগলদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপকর্ম ঘটলে তার মোক্ষম জবাব দেওয়া হবে।
কলকাতার আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদের এই ভাষা অবশ্য যথেষ্ট চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে জনসাধারণের মধ্যে।
প্রতিবাদের হাতিয়ার ছিল চুম্বন। কিন্তু প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন প্রায় ৫০ জন। গত সপ্তাহে কেরলের একটি কফি শপে প্রেমিক-প্রেমিকাদের উপর বিজেপি সদস্যদের হামলার প্রতিবাদে রবিবার চুম্বন দিবসের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু কোচির মেরিন ড্রাইভে এই কর্মসূচিতে আপত্তি জানায় পুলিস। তা সত্বেও কর্মসূচিতে অবাধ অংশগ্রহণের ডাক দেওয়া হয়। হাজির হন অনেকেই। গালে ও ঠোঁটে চুম্বন করে প্রতিবাদ জানালেন তাঁরাই। পুলিস এরপরই প্রায় ৫০জনকে গ্রেফতার করে।
নীতি পুলিসের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদের রাস্তা ধরল কেরল। সপ্তাহ খানেক আগে কালিকটের এক রেস্তোরাঁতে ‘অশালীন’ আচরণের অভিযোগে ভাঙচুর চালিয়েছিল বিজেপির যুব শাখার কিছু কর্মী। কিছুদিনের মধ্যেই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটের হাত ধরে এই নীতি পুলিসের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে বিদ্রোহের ডাক দেওয়া হওয়া। ডাক দেওয়া হল ভালবাসাকেই প্রতিবাদের হাতিয়ার করার।
‘ভালবাসার চুম্বন’ (Kiss of Love) নামের এই ইভেন্টির আয়োজন করেছেন কেরালারই কিছু যুবক যুবতী। আগামী রবিবার আবালবৃদ্ধবনিতাকে মেরিন ড্রাইভে সর্বসমক্ষে চুম্বনের মাধ্যমে নিজেদের ভালবাসা প্রকাশের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই অন্তত ২,৫০০ জন এই ভালবাসার বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করার সম্মতি জানিয়েছেন। ফেসবুকে এই ইভেন্ট পেজটিতে লাইকের সংখ্যা ৭,০০০ ছাপিয়ে গেছে। এই ইভেন্টযে এতটাও সাড়া জাগাবে সেটা আশাই করেননি খোদ আয়োজকরাও।
![]()
ফেসবুকে অনেকে জানিয়েছেন তাঁদের সঙ্গী না থাকার জন্য এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও তাঁদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর প্রতিবাদ তাদের জেহাদ নয়। কিন্তু কারোর ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানোকে তাঁরা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবেন না।
ভারতীয় পিনাল কোডের ২৯৪ ধারা অনুযায়ী জনসমক্ষে অশালীন আচরণ শাস্তিযোগ্য। কিন্তু নগ্নতা ছাড়া কোনটা অশালীন আচরণ হিসাবে গণ্য হবে তার সষ্ট ভাবে কোথাও বলা নেই।
আয়োজকরা দাবি করেছেন বহু উগ্র ডানপন্থী সংগঠন ইতিমধ্যেই তাঁদের হুমকি দিতে শুরু করেছে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে রাহুল পুলিসি নিরাপত্তার আবেদন করেছেন।
https://youtube.com/watch?v=E22dPp2Sky8
































মন্তব্য চালু নেই