যে খেলায় পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীদের দেওয়া হয় ‘নারী’!
আইন-কানুন আছে। নাগরিকের নিরাপত্তা রক্ষায় রয়েছে পুলিশ বাহিনী। দেশ পরিচালনার জন্য নির্বাচিত সরকার। তারপরও থেমে নেই অসভ্যতা ও নোংরামি। বরং ঢাক-ডোল-বাদ্যি বাজিয়ে পরিচালিত হয় বিশ্বের সবচেয়ে ‘নোংরা’ প্রতিযোগিতা। ব্রাজিলের বাহিয়া রাজ্যে র্যাফেল ড্র ও বিঙ্গো খেলা শেষে পুরস্কার হিসেবে জয়ীকে দেওয়া হয় ‘নারী’।
ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি পেলের দেশেই হয়ে থাকে পৃথিবীর জঘন্যতম এই প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে আনা শিশু ও নারীদের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে বাধ্য করা হয়। বিষয়টা এমন সবাই সবকিছু জানে, বলার বা প্রতিবাদ করার কেউ নেই। সবকিছু যেন বন্দী মধ্যযুগীয় বরবর্তার জালে। প্রকাশ্য দিবালোকে বাহিয়া রাজ্যের শহর ইনক্রজিলহাডাতে হয় এ ধরনের প্রতিযোগিতা।
র্যাফেল ড্রর প্রত্যেকটি টিকিটের দাম ধরা হয় ৫ পাউন্ড। যদিও বাস্তবে এটার দাম আরও বেশি হয়ে থাকে। যখন র্যাফেল ড্রর টিকিট বাজারে ছাড়া হয় তখন আশপাশের লোকজন তা আনন্দের সঙ্গে কিনে। শুধু কি তাই, যখন ড্র অনুষ্ঠিত হয় তখন সবাই যথাসময়ে হাজির হয় অসহায় শিকারকে ধরে ‘আদিম খেলায়’ লিপ্ত হতে।
ব্রাজিলে প্রায় ৪ কোটি মানুষ চরম দারিদ্য সীমার নিচে বসবাস করে। আর দেশটিতে শিশু যৌনকর্মী রয়েছে প্রায় ৫ লাখের মতো। র্যাফেল ড্র-বিঙ্গো খেলাতেও বছরের পর বছর ধরে জয়ীদের মনোরঞ্জনে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে শিশুদের। সম্প্রতি বিষয়টি বিশ্ব গণমাধ্যমের দৃষ্টিতে এনেছে শিশু যৌন-নির্যাতন নিয়ে কাজ করা ব্রিটিশ চ্যারিটি গ্রুপ মেনিনাডানকা।
জঘন্য এই প্রতিযোগিতার ব্যাপারে স্থানীয় আইনজীবী মাইকেল ফারিয়াস ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘গ্যাংয়ের অধীনে থাকা মেয়েদের র্যাফেল ড্রতে যুক্ত করা হয়। টিকিট কেনার মধ্যে জয়ীদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় এই নারী। অনেক সময় দেখা গেছে, প্রথম পুরস্কার হিসেবে থাকে অবিবাহিত তরুণী। তখন টিকিটের দাম আরও বেড়ে যায়। বাকিগুলোতেও পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় কম বয়সী মেয়েদের। যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।’
শুধু র্যাফেল ড্রতেই থেমে নেই ইনক্রজিলহাডা শহর, সপ্তাহে এখানে একদিন হয় বিঙ্গো খেলা। সাধারণত রাতের বেলা অনুষ্ঠিত হয় নোংরা এই খেলাটি। যেখানে খেলার আগে প্রতিযোগীদের সামনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মেয়ে শিশু বা কমবয়সী নারীরা। খেলা শেষে জয়ী প্রতিযোগীর হাতে তুলে দেওয়া তাদের। তখন বন্দী শিশু বা নারীর নিশ্চুপ চিৎকারে অসহায় শরণার্থীর মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে বিশ্বমানবতা ও সভ্যতা।
মন্তব্য চালু নেই