৫২ বছর পরও ভেস্তে গেল ফার্ক শান্তিচুক্তি
৫২ বছরের সংঘর্ষ বন্ধে অনেকদূর এগিয়েও ফার্ক গেরিলাদের সঙ্গে কলম্বিয়া সরকারের সমঝোতা আর হলো না। গণভোটে সরকারের করা ‘ঐতিহাসিক’ শান্তিচুক্তি প্রত্যাখাত হয়েছে।
রোববার এ সংক্রান্ত গণভোটে চুক্তির বিপক্ষে ৫০.২৪ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে শান্তি আলোচনা। অবশেষে গত সপ্তাহে দ্য রেভল্যুশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়ার (ফার্ক) নেতা টিমোশেনকো ও মধ্য-ডানপন্থী সরকারের প্রধান ম্যানুয়েল সান্তোস চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তিটি বাস্তবায়নে জনগণের ‘সম্মতি’র দরকার ছিল; সে জন্যই গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল মাত্র ৩৭ শতাংশ। ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যালটের মধ্যে ৬৩ হাজারেরও কম ভোটের ব্যবধানে শান্তিচুক্তিটি ‘প্রত্যাখ্যাত’ হয়।
যদিও ভোটে অংশগ্রহণ বাড়াতে সরকার টেলিভিশনে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করেছিল; আয়োজন করেছিল কনসার্ট ও শান্তি র্যালির। তাই অনেকের ধারণা ছিল শান্তিচুক্তির পক্ষেই জন রায় আসবে।
কিন্তু সব ছাপিয়ে জনগণ চুক্তি বাতিলের পক্ষেই রায় দিয়েছে; যা শান্তি প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট সান্তোস জনরায় মেনে নিলেও শান্তির জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন গণভোটের ফল ঘোষণার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে।
তিনি বলেন, ‘আমি হাল ছাড়ছি না। দায়িত্ব ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি শান্তির জন্য কাজ করে যাব; কেননা এই পথেই আমাদের শিশুদের জন্য একটি ভালো দেশ রেখে যাওয়া সম্ভব।’
ফার্ক নেতা টিমোশেনকোও বলেছেন, তার দল এখনও যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
৫২ বছরের যুদ্ধ থামিয়ে অস্ত্র সমর্পণ ও ছয় মাসের মধ্যে প্রকাশ্য রাজনৈতিক দল গঠনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল গেরিলা এ দলটি।
গণভোটে চুক্তির বিপক্ষে রায় আসার বিষয়ে সমালোচকরা বলছেন, শান্তিচুক্তিতে ফার্কের গেরিলা বাহিনীকে বেশি ‘ছাড় দেওয়া হয়েছে’। সে কারণেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি কলম্বিয়ার জনগণ। চুক্তিতে জেলে থাকা অনেক গেরিলাকেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মানুষকে হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।
২০১০ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে সান্তোস যুদ্ধ বন্ধে অগ্রসর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই যুদ্ধে দেশটির অন্তত ৮০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সূত্র: বিবিসি।
মন্তব্য চালু নেই