৪০০ কেজি ওজনের মানুষ!
শরীরের সামান্য ওজন বৃদ্ধি পেলে আমরা কি না করি। কিন্তু ৪০০ কেজি ওজনের মানুষ আছে এমন কথা বলি হয়তো অবাক হবেন। সহজেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না। কিন্তু এটিই সত্য, এটিই বাস্তব। প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম দ্বীপে রিকি ন্যাপুটি নামে এক পুরুষ বাস করতেন। এই ব্যক্তির ওজন ছিল ৪০০ কেজি।
রিকিকে বিশ্বের সবচেয়ে মোটা ব্যক্তি বলা হতো। তিনি যে অঞ্চলে বাস করতেন ওই অঞ্চলের প্রতি ১০ জন মানুষের ছয় জন অতিওজন বা স্থূলকায় রোগে ভোগেন।
মৃত্যুর আগের সাত বছর নিজের বিছানা থেকে নড়াচড়া করার ক্ষমতা ছিল না তার। রিকির পতিভক্ত স্ত্রী চেরিল তার শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ ধোয়া, খাবারের ব্যবস্থা করা ও বাথরুমে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে সব কাজই করতেন। বলা হতো, চেরিল তার একজন প্রবৃদ্ধ শিশুর দেখাশোনা করেন।
চেরিল যখন রিকিকে বিয়ে করেন তখন শরীরের অবয়ব দেখে বুঝতে পারেন, রিকি যদি স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারেন তাহলে ভবিষ্যতে তাকে এমন সমস্যায় পড়তে হবে।
রিকি বিছানা থেকে তো নড়তেই পারতেন না এমনকি তিনি ঠিকমত কথাও বলতে পারতেন না। তাকে একটু কথা বলার জন্য ও নড়াচড়া করার জন্য ‘অক্সিজেন মেশিন’ এর ব্যবহার করতে হতো। রিকি তার নিজের এ সমস্যা নিয়ে খুব হতাশ ছিলেন।
চেরিলের স্বপ্ন ছিল তাদের সন্তান থাকবে, তারা সুন্দর একটি পরিবার গঠন করবেন। কিন্তু রিকির অরিরিক্ত স্থূলতার জন্য তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
রিকি টেক্সাসের বাসিন্দা অ্যানজি ফ্লোরেস এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন। এই নারী গ্যাসট্রিক সার্জারির মাধ্যমে তার শরীরের ৮০ কেজিরও বেশি ওজন কমিয়েছিলেন।
রিকির এ অবস্থার কথা জানতে পেরে স্থূলতা বিশেষজ্ঞ ডা. ডাক ভুয়ং গুয়াম সফর করেন। তিনি বলেন, ‘রিকির অস্ত্রোপচার করে শরীরের ওজন কমাতে হবে। এ জন্য তাকে খাওয়া দাওয়া কমিয়ে দিয়ে নিজে থেকে শরীরের ওজন কমপক্ষে ৪০ কেজি ওজন কমাতে হবে।’
খাওয়ার প্রতি রিকির খুব আসক্তি ছিল। তার স্ত্রী জোর করেও এটি থেকে তাকে বিরত রাখতে পারতেন না। খাওয়া না কমানোর কারণেই ডা. ভয়ং তার অপারেশন করতে পারেনি।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার একজন বিখ্যাত চিকিৎসক জর্জ হপকিন্সও রিকির অবস্থা দেখেন এবং তাকে একই শর্ত দেন। কিন্তু রিকি এ শর্ত মানতে পারেননি।
এমন পরিস্থিতিতে চেরিল ও রিকির মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। এরপর রিকি ২০১২ সালের ১০ নভেম্বর ৩৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। সম্প্রতি আমেরিকান স্যাটেলাইট টিভি টিএলসি তাকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছে।
মন্তব্য চালু নেই