রাতের আঁধারে সমঝোতা!
এসআইকে প্রকাশ্যে চড়-থাপ্পর: ৩ দিনেও হয়নি সেই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
নাসিম উদ্দীন (নাসিম), নাটোর থেকে : নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আশরাফকে মারধরের ঘটনায় তিন দিনেও থানায় কোন মামলা করা হয়নি। প্রকাশ্যে মার খেলেও রাজনৈতিক চাপে মার হজম করে ঘটনার রাতেই সমঝোতার নামে দু’পক্ষই মুখ রক্ষা করেছে মাত্র।
একটি সুত্র জানায়, রোববার সন্ধ্যায় এসআই আশরাফকে পেটানোর পর সদ্যলুপ্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান জিন্নাকে রাতেই আটক করা হয়। জিন্নাহকে ধরতে নাটোর পুলিশ লাইন থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ রোববার মধ্যরাতেই তার বনপাড়ার বাসভবন ঘেরাও করে ফেলে।
ওই একই বাসায় থাকা জিন্নাহ বড় ভাই বনপাড়া পৌরসভার মেয়রকে এম জাকির হোসেন। তার সহায়তায় পুলিশ জিন্নহকে আটক করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাকে ছাড়িয়ে নিতে শুরু হয় বিভিন্নমুখী তদবির। রাতেই স্বজনরা ছুটে যান তদন্ত কেন্দ্রে।
শেষ পর্যন্ত ভুল বোঝাবুঝিকে প্রাধান্য দিয়ে পুলিশের সাথে ওই বিরোধ রফা হয়। রাত তিনটার দিকে জিন্নাহকে ছেড়ে দেওয়া হলে ঘটনার সমাপ্তি ঘটে। একটি সুত্র জানায়, কর জোরে ক্ষমা প্রার্থনার পরেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশকে মারধর করায় ওই দিন রাতেই জিল্লুর রহমান জিন্নার নেতৃত্বাধীন বড়াইগ্রাম ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক স্বাক্ষরিত পৃথক দু’টি প্রেস রিলিজ ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
এঘটনায় বনপাড়া সহ গোটা নাটোরের সর্বত্র পুলিশ পেটানোসহ গভীর রাতের সমঝোতা নিয়ে চলছে আলোচনা আর সমালোচনা ঝড়। এব্যাপারে জিন্নাহর বড় ভাই বনপাড়া পৌরসভার মেয়র জাকির হোসেন জানান, ঘটনাটি ছিল নিছক ভুল বোঝাবুঝি। রাতেই দু’পক্ষের মধ্যে মিমাংশা হয়ে যায়।
বড়াইগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শফিকুর রহমান অভিযুক্ত জিন্নাহকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রত্যক্ষদর্শী সহ দু’পক্ষের কাছে শোনার পর ঘটনাটিকে ভুল বোঝাবুঝি বলেই মনে হওয়ায় বিষয়টি রাতেই মিমাংসা হয়ে গেলে জিন্নাহকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রতিদিনের মতো রোববার বিকেলে বনপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আশরাফের নেতৃত্বে পুলিশ রেজিস্ট্রিবিহীন মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন তল্লাশী করতে বনপাড়া বাজারে চেকপোষ্ট বসিয়ে বেশ কিছু সংখ্যক মোটরসাইকেল জব্দ করেন।
পুলিশ এসময় বড়াইগ্রাম থান ছাত্রলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান জিন্নাহর এক সহযোগীর মোটরসাইকেলও আটক করে। একাধিকবার বলার পর ওই মোটরসাইকেলটি ছেড়ে দিতে দেরী করায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা এসআই আশরাফের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মোটর সাইকেলটি ছেড়ে দেয়ার পর পরই এঘটনায় ক্ষিপ্ত ছাত্রলীগ নেতা জিল্লুর রহমান জিন্নাহর নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসআই আশরাফকে বনপাড়া বাজারে প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা সহ চড় থাপ্পরও মারে।
এবিষয়ে নাটোর জেলা পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখ্যাজী জানান, এসআই আশরাফকে মারধরের ঘটনা মিথ্যা তবে তাদের মধ্যে তর্ক ও কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে এবং এই ভুল বোঝাবুঝির অবসানও হয়েছে।
আরো পড়ুন :
মন্তব্য চালু নেই