ভাত না পেয়ে রোজাদার স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করলো স্বামী

নাটোর: রোজার কারণে দুপুরে ভাত রান্না করেনি গৃহবধূ ইমা। এছাড়াও তিনি রোজার শুরুর দিন থেকে স্বামীকে রোজা রাখতে বাধ্য করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তবুও তার স্বামী রোজা রাখেননি। গত বুধবার দুপুরে স্বামী মারুফ বাড়িতে এসে ভাত চাইলে ইমা ভাত রান্না করা হয়নি বলে তাকে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর গলাটিপে ধরলে মুহূর্তেই শ্বাসরোধে তার মৃত্যু হয়। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার চন্দ্রখইর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহত গৃহবধূ ইমা জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের রামগাড়ি গ্রামের ইমামুল হকের মেয়ে ও আটক মারুফ নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের চন্দ্রখইর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে। মারুফ পেশায় ওয়েল্ডিং কারখানার শ্রমিক।

এদিকে গৃহবধূ হত্যার পর স্বামী মারুফ পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে আটক করে বাগাতিপাড়া মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। রাতেই গৃহবধূর বাবা এনামুল হক বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ জানান, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের রামাগারি গ্রামের এনামুল হকের মেয়ে ইমা গত এক বছর আগে ভালবেসে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বিয়ে করে পাশের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের চন্দ্রখৈয়র গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে মারুফকে। বিয়ের ৩ মাস পর উভয় পক্ষের অভিভাবক তাদেরকে মেনে নেয়।

প্রতিবেশীরা জানান, রোজার কারণে দুপুরে ভাত রান্না করেনি ইমা। এছাড়া তিনি রোজার শুরুর দিন থেকে স্বামীকে রোজা রাখতে বাধ্য করার চেষ্টা চালায়। ইফতারির আগে স্বামী মারুফ বাড়িতে এসে ভাত চাইলে তিনি জানায় ভাত রান্না করা হয়নি। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীর গলাটিপে ধরে এবং নিঃশ্বাস বন্ধ হয়েছে মারা যায়।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান জানান, ঘটনার দিন দুপুরে বাড়ি ফিরে মারুফ স্ত্রী ইমার কাছে ভাত চান। কিন্তু স্ত্রী ইমা ভাত দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে মারুফ উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীর গলা টিপে ধরলে ইমা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মারুফ বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে অসুস্থ অবস্থায় স্ত্রীকে ঘরে রেখে দেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় দেখে প্রতিবেশীদের জানান। তারা ঘরে গিয়ে ইমাকে মৃত দেখতে পায়। এ সময় স্থানীয়রা মারুফকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের পর ইমার লাশ তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই