৩৭ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট, আরো ৭ বছর থাকতে চান
এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রেসিডেন্ট আফ্রিকার দেশ ইকুয়েটোরিয়াল গিনির টিওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো।
টানা ৩৭ বছর গিনির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ওবিয়াং। নতুন করে সাত বছর মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
ইকুয়েটোরিয়াল গিনির এই প্রেসিডেন্ট আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যেও সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড গড়ছেন। আফ্রিকান অনেক নেতা দীর্ঘদিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকে- এমন একটি রেওয়াজ দেখা যায়। কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে আফ্রিকার একনায়কোচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জীবন্ত বিস্ময় হয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট ওবিয়াং।
রোববার ইকুয়েটোরিয়াল গিনিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। কিছুটা পাতানো নির্বাচন হচ্ছে। কারণ বিরোধীদলগুলোর কোনো প্রার্থী এ নির্বাচনে লড়ছেন না। রাজনীতিতে একদম নতুন ছয় প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ওবিয়াংয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থিতা করছেন। এ ছয় প্রার্থীর নাম দেশটির অনেক মানুষ জানেও না। নির্বাচন বয়কট করে প্রেসিডেন্ট ওবিয়াংয়ের ক্ষমতালিপ্সার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে বিরোধীদলগুলো। একইসঙ্গে দেশটিতে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এ নির্বাচনকে ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেছে।
১৯৭৯ সালের আগস্ট মাসে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপন চাচাকে ক্ষমতাচ্যুত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন ওবিয়াং। সেই থেকে এক হাতে দেশ শাসন করছেন তিনি। ২০১১-২০১২ সাল সেশনে এক বছরের জন্য আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারপারসন ছিলেন ওবিয়াং।
৭৩ বছর বয়সি ওবিয়াং দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যর্থ। ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য চরম মাত্রায় বিরাজ করছে দেশটিতে। ধনীররা আরো ধনী হচ্ছে, গরিবরা আরো গরিব হচ্ছে।
২০১৪ সালে জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকা মহাদেশে সবেচেয়ে বেশি মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন ইকুয়েটোরিয়াল গিনির। দেশটির মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার। কিন্তু মানব উন্নয়ন সূচকে ওই বছর ১৮৭ দেশের মধ্যে দেশটির অবস্থান ছিল ১৪৪তম। মানব উন্নয়ন সূচকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
তেলসমৃদ্ধ দেশটির প্রধান সমস্যা সুশাসনের অভাব। নির্বাচন বয়কট করে বিরোধী নেতারা দাবি করেছেন, ‘দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। কথা বলার সুযোগ নেই। পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে দেশ। এ অবস্থায় নির্বাচন করা যায় না। ’
মন্তব্য চালু নেই