৩০ বছর পর ছাড়া পেলেন মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত মার্কিনী

তিন দশক পর ফাঁসির দড়ি থেকে রক্ষা পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্থনি রে হিন্টোন(৫৪)। এর আগে গত ৩০ বছর কারাগারে বসে মৃত্যুর প্রহর গুনেছেন আলবামা অঙ্গরাজ্যের এ বাসিন্দা।

১৯৮৫ সালে দুই ব্যাক্তিকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হন অ্যান্থনি রে হিন্টোন। তখন তিনি ২৪ বছরের টগবগে তরুণ। বার্মিংহাম শহরের এক রেস্টুরেস্টের দুই ম্যানেজারকে হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছিল স্থানীয় এক আদালত। গত বছর এ মামলায় নতুন বিচার শুরু হওয়ার পর তাকে নির্দোষ বলে ঘোষণা করা হয়।

দ্বিতীয় দফা বিচারের সময় এক ফরেনসিক রিপোর্টে দেখা যায়, ঘটনাস্থল থেকে যেসব গুলি পাওয়া গেছে সেগুলো হিন্টোনের বন্দুকের নয়। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকারি কৌঁসুলিরা তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি বাতিল করে দেন এবং তাকে বেকসুর খালাস দেন।

এ সম্পর্কে হিন্টোনের আইনজীবী ব্রেয়ান স্টিভেনসন বলেছেন, প্রথমবার তার মক্কেলের ভালো আইনী পরামর্শ নেয়ার মত আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। নব্বই দশকে মামলা চলাকালে হিন্টোনের কাছে মাত্র ১ হাজার মার্কিন ডলার ছিল। আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় সেসময় তার পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সরকারি কৌঁসুলিরা সহজেই তাকে অভিযুক্ত করতে সক্ষম হন।

বিবিসি প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ওই অর্থে হিন্টোনের আইনজীবী মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তরুণ ওই বিশেষজ্ঞ জাদরেল সরকারি আইনজীবীদের জেরার মুখে খেই হারিয়ে ফেলেন। তখন তাকে নিয়ে হাসাহাসিও করেছিলেন আদালতের জুরিরা।

প্রথম বিচারের সময় হিস্টোন পর্যাপ্ত আইনী পরামর্শ না পাওয়ায় তার মামলাটি দ্বিতীয়বার বিচারের জন্য সুপারিশ করে গতবছর রুল জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। দ্বিতীয় দফা বিচারে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন হিন্টোন।

এদিকে শুক্রবার বার্মিংহামের কাউন্টি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর হিন্টোন তার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ধরেন। এ সময় তিনি মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে যাওয়ায় ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

হিন্টোন বলেছেন, বন্দুকের গুলির বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়ায় প্রায় তিন দশক ধরে তার মৃত্যুদণ্ডের রায়টি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।

হত্যা মামলার একমাত্র প্রমাণ ছিল ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত বন্দুকের গুলি। এ দিয়েই তাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছিল। কিন্তু আধুনিক ফরেনসিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ‍বুলেটগুলো হিন্টোনের বাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত রিভলভরের নয়। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুক্রবার তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।



মন্তব্য চালু নেই