২০ বছর পরে জানলেন তারা মা-মেয়ে নন
সোফির বয়স ৩৮ আর ম্যাননের ২০। দু’জনেরই লম্বা কালো চুল আর উচ্চতাও প্রায় সমান। মা-মেয়ে যখন পাশাপাশি হেঁটে যায় তখন মনে হয় যেন দুই বান্ধবী। বাস্তবে দু’জনের সম্পর্কটা বন্ধুত্বেরই।
হাতের মধ্যে হাত রেখে সম্প্রতি তারা আদালতে হাজির হয়েছিলেন একটি মামলার শুনানিতে। তাদেরই দায়ের করার মামলাটির বিষয় হলো পরস্পরের সঙ্গে কখনও কোনো সম্পর্ক ছিল না!
কারণ সোফি ম্যাননের আসল মা নন। ২০ বছর আগে জন্মের পরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলে সন্তান অদল-বদল হয়ে গেছে। সোফির বাড়ির ২০ মাইল দূরে বসবাস করেন ম্যাননের আসল মা।
না, এটা কোনো হলিউডি সিনেমার গল্প নয়। বাস্তবেই এ ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সের কান শহরে। এ ঘটনায় সোফির পরিবার ১ কোটি ২০ লাখ ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
১৯৯৪ সালের জুলাইতে কানের একটি মাতৃসদনে সোফির সন্তানের সঙ্গে আরেক নবজাতকের অদল-বদল হয়ে যায়। শেতাঙ্গ সোফির সন্তান শেতাঙ্গই হওয়ার কথা। নার্স যখন সোফির হাতে তার সন্তানকে তুলে দিল তখন দেখা গেল এর গায়ের রঙ কালো। বিস্ময়ে বিমূঢ় সোফি বিষয়টি নার্সকে জিজ্ঞেস করলে নার্স জানায় পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির কারণে তার সন্তানের গায়ের রঙ কালো হয়ে গেছে।
ম্যাননের যখন তিন বছর বয়স তখন স্ত্রীকে দুশ্চরিত্রা আখ্যা দিয়ে চলে যান সোফির স্বামী। বড় হয়ে খেলার সাথীদের কাছে বহুবার অপমানিত হতে হয়েছে ম্যাননকে। দশ বছর পর সোফির স্বামী ম্যাননের ডিএনএ পরীক্ষা করান। এতে দেখা যায় ম্যানন সোফির সন্তান নন।
যে হাসপাতালে ম্যাননের জন্ম হয়েছিল সেখানে কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেল ম্যানন যে কক্ষে ছিল সেই কক্ষেই জন্ডিসের জন্য আরেকটি শিশু ভর্তি ছিল। নার্সের অজ্ঞতার কারণেই শিশু অদল-বদল হয়ে গেছে।
হাসপাতোলের দেয়া ঠিকানায় সোফি শেষ পর্যন্ত তার আসল সন্তানকে খুঁজে বের করেন। পরে উভয় পরিবার মিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেয়।
তারা ১ কোটি ২০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ করেন। এই অর্থের মধ্যে প্রত্যেক মেয়ে পাবে ২০ লাখ ডলার করে। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে পরিবার দুটিকে সামজিকভাবে যে অপমান সইতে হয়েছে বাকি অর্থ সেজন্য তাদের দেয়া হবে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে মামলার রায় ঘোষণার কথা রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই