হঠাৎ বেড়েছে অজ্ঞানপার্টির উপদ্রব, একদিনেই ১০ জন ঢামেকে

গরমের সময় রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বেশি থাকলেও শীতের মধ্যেই হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চক্রগুলো। গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন দু-একজন অচেতন হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পরে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন পুলিশ, পথচারী ও স্বজনরা। অজ্ঞানপার্টি তাদের কাছে থাকা মোবাইল ও টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে গেছে।

ঢামেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. খাজা আব্দুল গফুর বাংলামেইলকে বলেন, ‘মঙ্গলবার ৪টা পর্যন্ত সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের খাবারের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করা হয়। তারা অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা চলছে।’

হাসপাতাল সূত্র জানায়, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া মোশাররফ হোসেন (২২), রাশেদ ওরফে খোরশেদকে (২৪) শাহবাগ থেকে তাদের চাচা বাবুল উদ্ধার করে বিকেল ৩টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে আনেন।

বাবুল বলেন, ‘মোশাররফ ও রাশেদ বন্ধু। তারা মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ঢাকায় আসে। দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের বাসা থেকে তারা রওয়ানা হয়ে গাবতলী আসে। দুপুর ১২টার দিকে দুজন গাবতলী থেকে ৭ নম্বর রুটের একটি বাসে ওঠে। এরপর অচেতন হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তাদের দুজনকে শাহবাগ নামিয়ে রেখে যায়।’

পথচারীরা ফোন করে খবর দিলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন বাবুল। তাদের কাছে থাকা টাকা দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। ওই দুই যুবক জানিয়েছে, তাদের একজনের কাছে ৭০ হাজার ও আরেকজনের কাছে ৩০ হাজার টাকা ছিল।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে মাহবুব খান (৪০) নামের একজনকে হাসপাতালে আনেন তার স্ত্রী তামান্না খান। তিনি বলেন, ‘খিলগাঁওয়ের তালতলায় তাদের বাসা। সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হন মাহবুব। এরপর দুপুরে খবর পাই তিনি অচেতন অবস্থায় মিরপুরে রাস্তায় পড়ে আছেন।’

মঙ্গলবার মতিঝিল থেকে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নাজিম (৩৪) ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আলী (৬০); যাত্রাবাড়ী থেকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে সিদ্দিক (৩০) ও সন্ধ্যায় অজ্ঞাত (৪০) এক ব্যক্তি, চিটাগাং রোড থেকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুণীল (৩৮) এবং ডেমরা থেকে নবিউল্লাহ (৫৫) নামের একজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এছাড়া জুয়েল (৩০) নামের এক যুবককেও অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।

ঢামেক ক্যাম্প পুলিশের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক বাংলামেইলকে বলেন, ‘এই ১০ জনই অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’



মন্তব্য চালু নেই