সোহেল রানার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নির্ধারিত সময়ে সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ার অভিযোগে সাভারে ধসে যাওয়ার রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে নন-সাবমিশন মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের উপপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১৮মে রানার বিরুদ্ধে নন-সাবমিশন মামলার অনুমোদন দেয় দুদক। চলতি বছরের ২ এপ্রিল কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার বরাবর সম্পদ নোটিশ জারি করা হয়। যদিও সোহেল রানা নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করে তার স্ত্রীর মাধ্যমে সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন। এ আবেদন কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।

দুদক সূত্র জানা গেছে, রানা প্লাজা ধসের পর পরই সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সোহেল রানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয় কমিশন। অভিযোগ অনুসন্ধানে ২৮ এপ্রিল দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।

৩০ এপ্রিল কমিশনের অনুসন্ধান দল সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। ওই বছরের ১৫ মে অনুসন্ধান দল সোহেল রানার সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারির সুপারিশ করে। তবে সোহেল রানা কারাগারে থাকার কারণে সৃষ্ট আইনি জটিলতায় প্রায় দুই বছর পর চলতি বছরের ২ এপ্রিল কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করা হয়।

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে সাভারে দুটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করে রানা। এর একটি হলো ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত রানা প্লাজা। নয়তলা এ ভবনটি ধসে পড়ে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হন। আরেকটি আটতলা রানা টাওয়ার (প্রতি ফ্লোর ৪০০০ বর্গফুট)। সাভারে সোহেল রানার পাঁচতলা আবাসিক ভবন এবং মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার জয়মন্ডপে গ্রামের বাড়িতে একটি দোতলা ভবন রয়েছে।

এ ছাড়া রানা ব্রিকস এবং এম এ কে ব্রিকস নামের দুটি ব্রিক ফিল্ডও রয়েছে। সাভার পৌর এলাকা ও পৌর এলাকার বাইরে রানা ও তার মা-বাবার নামে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। সাভার বাসস্ট্যান্ডে রানার নামে রানা অয়েল মিল রয়েছে। অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস রয়েছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকে পাঁচটি ঋণ হিসাবসহ ২৩টি ব্যাংক হিসাব আছে। এর মধ্যে রানার নামে ৩৫ লাখ টাকার একটি এফডিআরও রয়েছে।

২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল প্রায় ১৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক ও তার মা মর্জিনা বেগমের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক।



মন্তব্য চালু নেই