সাদ্দামকে মদদ দিয়েছিল মার্কিনীরা : সিআইএ নথি
সিরিয়ার দামেস্কোতে রাসায়নিক হামলার প্রেক্ষিতে সেখানে সামরিক হামলা চালাতে কোন সমস্যা হয় না মার্কিন সরকারের। কিন্তু মাত্র দুই যুগ আগে মার্কিন ইন্টেলিজেন্স ও সামরিক সম্প্রদায় এখনকার সিরিয়ার চেয়েও ভয়াবহ এক রাসায়নিক হামলার কথা (নার্ভ গ্যাস) জানতো, অথচ তখন সেটা ঠেকাতে তারা কিছুই করেনি, উল্টো সাহায্য করেছে।
বার্তা সংস্থা এফপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন ইন্টেলিজেন্স সংস্থা সিআইএ’র প্রকাশিত নথি থেকে বেরিয়ে এসেছে এমনই তথ্য। সিআইএ’র নথিতে স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায়, ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে কি অপকৌশল খাটিয়েছে তারা।
ঐ যুদ্ধে ইরাকি বাহিনী তথা সাদ্দাম হোসেনকে সাহায্য করেছিল সিআইএ। যখন মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনী দেখলো যে ইরান কৌশলগত দিক থেকে ইরাকের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে ঠিক তখনই ইরাকি বাহিনীকে ইরানি বাহিনীর অবস্থান জানিয়ে দিলো তারা। অথচ সিআইএ নিশ্চিতভাবে জানতো যে, এতে করে ইরানের উপর রাসানয়িক হামলা করবে সাদ্দাম হোসেন। তারা সেটাকে ঠেকানোর চেষ্টা না করে উস্কে দিলো।
সিআইএ’র নথিতে এমন সব স্যাটেলাইট ছবি ও ম্যাপ ছিল যাতে ইরানি বাহিনীর অবস্থান, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, গতিবিধি ইত্যাদি রয়েছে। ১৯৮৮ সালে সিআইএ’র দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইরাকি বাহিনী ইরানের উপর ৪টি মাস্টার্ড ও সেরিন গ্যাস হামলা করে। এই হামলাগুলোই যুদ্ধে ইরাকিদের সাহায্য করেছিল এবং ইরানকে বাধ্য করেছিল আলোচনায় যেতে।
মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা বহুদিন ধরে এই কর্মকাণ্ড অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, ইরাক যে রাসায়নিক হামলা করবে সেটা তারা জানতেন না। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনী কর্মকর্তা রিক ফ্রাংকোনা যিনি ১৯৮৮ সালের যুদ্ধে বাগদাদে কর্মরত ছিলেন বলেছেন ভিন্ন কথা। সিআইএ’র প্রকাশিত নথি এবং রিক ফ্রাংকোনার জবানবন্দী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু সিআইএ এটা অস্বীকার করেছে।
বর্তমানের প্রেক্ষিতে এবং তখনকার কর্মকাণ্ডের আলোকে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে দেখা যাচ্ছে বিশাল পার্থক্য। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সরকার জনগণের উপর রাসায়নিক হামলা করেছে এবং এটার নৈতিকতা ইস্যু করে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে মার্কিনীদের বাধে নি, কিন্তু মাত্র অল্প কিছুদিন আগেই তারা করেছে ঠিক উল্টোটা। কাজেই তাদের এই কর্মকাণ্ড ন্যায়-নীতি কিংবা মানবিকতা নয়, বরং খুব বেশি মাত্রায় স্বার্থান্বেষী মনোভাবেরই পরিচয় দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র : এফপি
মন্তব্য চালু নেই