সাতক্ষীরায় আদি যমুনা নদীর ৪র্থ খন্ডের বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি

নদী বন্দোবস্ত দেওয়া বর্তমান সরকারের নীতিমালা বিরোধী হলেও নিয়মনীতি অগ্রাহ্য করে, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের মতামতকে উপেক্ষা করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর-কালিগঞ্জের একমাত্র প্রবাহ যুক্ত আদি যমুনা নদীর ৪র্থ খন্ড আবারও বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে নতুন করে দেয়া ওই বন্দোবস্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন আদি যমুনা বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আদি যমুনা বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, ধারা বাহিক আন্দোলনের ফলে আদি যমুনা নদীর মাদার নদীর সংস্থলে স্লুইজ গেট নির্মানের ফলে এটি আর বদ্ধ নদীর আওতায় পড়ে না। এছাড়া শ্যামনগর সদরের অংশে প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্রীজ, স্লুইজ গেট, কালভার্ট নির্মান ও সংষ্কার করার পাশাপাশি বিগত ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩১ কিলোমিটার নদীর অধিকাংশ এলাকা খনন করা হয়। সকল বাধা অপসারন করে প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে ইতিমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালে আদি যমুনা নদীর ৫ম ও ৪র্থ খন্ড বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়। এ সময় যমুনা পারের এক’শ পরিবারকে অমানবিক ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। এ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনের পাশাপাশি স্থায়ীভাবে বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোট বিভাগে দু’টি রীট করা হয়। রীটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৫ম খন্ডের বন্দোবস্ত বাতিল করে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কিন্তু ৪র্থ খন্ডে নিষেধাজ্ঞা প্রদান না করে রুল জারী করে। সে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এমতবস্থায় ২০১৩ সালের ০২ অক্টোবর শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার শ্যামনগর সদর, ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন ও কৈখালী ইউনিয়নের সহকারী ভুমি কর্মকর্তারা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদী যমুনা নদী বন্দোবস্ত প্রদান না দেয়ার পক্ষে মতামত দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরন করেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কোন গেটের সংযোগ নদী/খাল আর বন্দোবস্ত প্রদান করা হবে না। তৎতালীন শ্যামনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ দৌলতুজ্জামান খান তাঁর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বলেন, শ্রামনগর উপজেলার অর্š—গত যমুনা নদীটি এলাকার একমাত্র পানি নিস্কাশন পথ যা বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার হাত হতে শ্যামনগর উপজেলাকে রক্ষা করা। যমুনা নদীর ইজারা প্রদান না করার জন্য এতসব প্রতিবেদন থাকা সত্ত্বেও গত ২৪ জুন সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লস্কর তাজুল ইসলাম উক্ত যমুনা নদীর ৪র্থ খন্ড ইজারা প্রদান করে এলাকাবাসিকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন।
তিনি এলাকার প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র সংরক্ষন, কৃষি প্রতিবেশ ব্যবস্থার সংরক্ষন ও স্থানীয় দরিদ্র মানুষের জীবিকার বিষয়টি বিবেচনা করে আদি যমুনা নদীর ৪র্থ খন্ডের বন্দোবস্ত বাতিলসহ উক্ত নদীকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সকল মামলা প্রত্যাহার ও নিস্পত্তির দাবি জানান।



মন্তব্য চালু নেই