কেমন জীবনসঙ্গী চাই

বিয়ে ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধন বা চুক্তি। একটা সময় বিয়ের আগে দেখা হতো মেয়ে কিংবা ছেলের বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা, বংশ মর্যাদা এবং ছেলে সুঠাম দেহের অধিকারী কিনা-মেয়ের গায়ের রঙ দুধে আলতায় কিনা। এখনও যে এসব বিষয় দেখা হয় না, তা কিন্তু নয়। তারপরও সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ধরণ। বর্তমানে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা হয় শিক্ষিত, হাসি-খুশি, প্রাণখোলা পরিবার এবং নিজের পছন্দ ও মতের সঙ্গে মিলবে এমন উদার মনের মানুষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাশেদ পারভেজ বলেন, ‘সময় বড়ই নিষ্ঠুর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নাকি মানুষের ভালোলাগা থেকে পছন্দ-অপছন্দের তালিকা সবই পরিবর্তিত হয়। ছোটবেলায় যখন আম্মুর মুখে ছেলের জন্যে লাল টুকটুকে বউয়ের গল্প শুনতাম তখন মনে হতো সুন্দরী বউ ছাড়া কি আর চলে! কিন্তু যখন বাস্তবতার মুখোমুখি হলাম তখন বুঝলাম, সুন্দরী কিংবা ধনীর দুলালী না, বরং জীবনসঙ্গী হিসেবে একজন ভালো বন্ধুই দরকার। যার সাথে আমার ভাবনার মিল থাকবে, বোঝাপড়া ভালো হবে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা থাকবে। উচ্চ শিক্ষিত না হোক শিক্ষিত হবে। একজন জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে যেটি সবচেয়ে প্রয়োজন তা হলো দু’জন প্রথমেই একজোড়া ভালো বন্ধু হওয়া। যারা একে অন্যের উপর ডমিনেট করা এবং দোষারোপ করার মানসিকতা রাখবে না। নিজেদের হাসি-কান্না এবং পছন্দ-অপছন্দ বন্ধুর মতোই শেয়ার করবে। সঙ্গীর সমস্যাকে নিজের মনে করে সেটা সমাধান করার জন্যে নিজেকে সদা প্রস্তুত রাখবে।’

ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা এবং ইনডিপেন্ডেন্ট জবসের এক্সিকিউটিভ তারান্নুম আহমেদ কুহু বলেন, ‘খুব বেশি সুন্দর হতে হবে কিংবা অনেক অর্থ থাকতে হবে এমন নয়। তবে হাসিখুশি ও প্রাণখোলা একজন মানুষ অবশ্যই কাম্য। যে মানুষ আমার ভবিষ্যত জীবনকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। ছোট ছোট বিষয়গুলো থেকে সুখ খুঁজে নেয়ার মানসিকতা থাকবে এমন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই।’

তিতুমীর কলেজের রসায়নের ছাত্রী মিলি আক্তার অ্যানী বলেন, ‘যিনি আমার জীবনসঙ্গী হবেন তিনি যেন আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হয়। সৎ, চরিত্রবান এবং ভালো মনের একজন মানুষ হয়। এছাড়া তার কাছে যেন মনের সব কথা শেয়ার করা যায়।’

ধানমণ্ডির পেনফিল্ড স্কুলের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক সমীর সাহা বলেন, ‘জীবনসঙ্গী হিসেবে এমন একজনকে চাই যে আমাকে বন্ধু মনে করবে এবং সুখে-দুঃখে আমিও তাকে সারা জীবন বন্ধু হিসেবে পাবো। আমার আবেগ, ভালোলাগা-মন্দলাগাকে মূল্য দেবে, আমাকে শত প্রতিকূলতার মাঝেও সুখে রাখার চেষ্টা করবে। আমার পরিবারকে নিজের পরিবার মনে করবে।’



মন্তব্য চালু নেই