সাগরবক্ষে রাতারাতি দ্বীপের জন্ম

পৃথিবীতে আজ অবধি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা কম ঘটেনি। যুগে যুগে বিভিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আর এই সংঘাতগুলো ঘটনার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হলো ভূমিমালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা। ভূমির অধিকার গ্রহনের জন্য আজও ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ যেমন লড়াই করছে, তেমনি সেই ভূমিই জোরপূর্বক অধিগ্রহন করার জন্য ইসরায়েল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আবার গত বছরের ঘটনার দিকে যদি তাকানো যায় তাহলে উত্তর কোরিয়া ও তাইওয়ানের মধ্যকার একটি দ্বীপের মালিকানা সংক্রান্ত সমস্যা দেখা যায়। সাগরবক্ষের একটি দ্বীপকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন উত্তর কোরিয়া এবং তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। শেষমেষ যদিও তাইওয়ানের কাছেই ভূমির মালিকানা রয়ে যায়। কিন্তু আজ আমরা এমন এক ভূখন্ড নিয়ে আলোচনা করবো, যা নিয়ে আদতে এখন পর্যন্ত কোনো সংঘাত শুরু না হলেও বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই দ্বীপ।
সাম্প্রতিক সময়ে জাপানের সাগরবক্ষে রাতারাতি সৃষ্টি হয়েছে প্রায় এক বর্গমাইল আয়তনের একটি দ্বীপ। সাগরে দ্বীপ সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারটি দীর্ঘমেয়াদী ব্যাপার। দীর্ঘদিন ধরে একটু একটু করে পলিমাটি জমলেই তবে ভূমির সৃষ্টি হয়। কিন্তু জাপানের এই দ্বীপটি সৃষ্টি হয়েছে রাতারাতি অগ্ন্যুতপাত সৃষ্ট কারণে। জাপানের উপকূলবর্তী অঞ্চল নিশিনোশিমা দ্বীপের পাশ্ববর্তী সাগরবক্ষে এই নতুন দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে। নিশিনোশিমা থেকেই মূলত অগ্ন্যুতপাতের সূচনা হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসের ২০ তারিখ।
এই ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজ্ঞানীরা ছুটে গেছেন জাপানে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ঠিক কতদিন টিকবে এই দ্বীপ। জাপানের নৌবাহিনীর মতে, গোটা দ্বীপটি টোকিও ডুমের চেয়ে বড় এবং ক্রমশ এর আকার বড় হচ্ছে। বিভিন্ন আলোকচিত্রী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে এই দ্বীপের ছবি তুলেছেন। তোলা ছবিতে দেখা যায়, দ্বীপ সংলগ্ন পানির রং সাগরের স্বাভাবিক পানি থেকে ভিন্ন। এপ্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা জানান যে, দ্বীপটিতে খনিজ পদার্থ থাকার কারণেই পানির রং ভিন্ন।
গত ত্রিশ বছরের মধ্যে এরকম ঘটনা প্রথম। এর আগে জাপানের চ্যান আইল্যান্ডে এরকম একটি দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছিল, যদিও সেই দ্বীপটি দীর্ঘদিন টিকে থাকেনি। যে অগ্ন্যুতপাত থেকে বর্তমান এই দ্বীপটি সৃষ্ট সেই আগ্নেয়গিরিটি প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো। বিজ্ঞানীদের দাবি, দ্বীপটি উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে ক্রমশ বাড়ছে।
মন্তব্য চালু নেই