সব ধরনের পরিবহণ চালানোর ঘোষণা

হরতাল-অবরোধকারীদের প্রতিহত করে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে সব ধরনের পরিবহণ চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ঘোষণা দেয়। এ সময় পরিবহণ খাতকে হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানায় সংগঠনটি।

আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এক প্রতিবাদ সমাবেশে থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশে নেতারা বলেন, যেভাবে একর পর এক হরতাল-অবরোধের নামে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, শ্রমিকদের হত্যা করা হচ্ছে, এটা বন্ধ করা না হলে অচিরেই তাদের প্রতিহত করা হবে।

এতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। পরিবহণ খাত সচল রাখতে তারা সরকারের কাছে আরো নিরাপত্তা দাবি করেছেন।

তিনি বলেন, আজ থেকে সারা দেশে সব ধরনের পরিবহণ চলবে। যারা গাড়ি পোড়ায়, ভাঙচুর করে, শ্রমিক হত্যা করে, তাদের প্রতিহত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা হরতাল-অবরোধ ডেকে ঘুমিয়ে থাকে, তাদের শিল্প চলে, ব্যবসা চলে। তাদের গাড়ি তো পোড়ানো হয় না। তাহলে কেন শুধু শ্রমিকদের পুড়িয়ে মারা হয়?

গণতন্ত্রের নামে, ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে যেভাবে গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা হচ্ছে, তা আর শ্রমিকরা মেনে নিতে পারে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, পরিবহণ খাতে সব রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী আছে, রাজনীতি করে না এমন ব্যবসায়ীও আছে। তাহলে কাদের স্বার্থে বাস পোড়ানো হয়।

যারা আজ হরতাল-অবরোধের নামে বাস পোড়াচ্ছেন, শ্রমিক পুড়িয়ে মারছেন, ঘুমন্ত যাত্রীদের হত্যা করছেন, অর্থনীতি ধ্বংস করছেন, তারা আগামী দিনে ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ চালাবেন, সে প্রশ্ন করেন।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এনায়েত উল্যাহ বলেন, যদি এভাবে শ্রমিকদের হত্যা করা হয়, বাস পেড়ানো হয়, ভাঙচুর করা হয় তাহলে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা কোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ে কম শক্তিশালী নয়। তারাও এই সন্ত্রাস, এই খুন বন্ধ করতে উদ্যোগ নেবে। আর এর দায় বহন করতে হবে হরতাল-অবরোধ যারা ডাকেন তাদের।

ক্ষতিপূরণের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ৯ দিনের হরতাল-অবরোধে ৩৫০টি গাড়ি ভাঙচুর ও ভস্মীভূত করা হয়েছে, ১৪ জন শ্রমিককে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ২০ কোটি টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।

২০১৩ সালে পরিবহণ খাতে ব্যাপক ধ্বংসযোগ্য চালানো হয়। ওই বছরে তিন হাজার ৫০০ বাস ভাঙচুর করা হয়েছে, সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে এক হাজার গাড়ি। ৫৬ জন শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। ওই বছর পরিবহণ খাতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।

পরিষদের সদস্যসচিব ওসমান আলী বলেন, যেভাবে গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, শ্রমিকদের হত্যা করা হচ্ছে তা চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।

পরিবহণ শিল্প খাতের মালিক-শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। তাদের ওপর জুলুম, নির্যাতন, পুড়িয়ে মেরে গণতন্ত্র রক্ষা করা যাবে না। যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে আর দেশের সম্পদ নষ্ট করে, মানুষ মারে, তাদের হুকুমের আসামি করে বিচারের দাবি তোলেন ওসমান আলী।



মন্তব্য চালু নেই