সবচেয়ে পুরনো নিরামিষ রেস্টুরেন্ট

পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন রকম। প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গের উপর নির্ভর করে এই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তিত হয়। যে কারণে একই দেশের মধ্যে কোথাও নিরামিষ খাবার প্রবণতা দেখা যায়, আবার কোথাও মাংসই হয়ে যায় মূল খাবার। মূলত, জলবায়ুগত কারণে মানুষের শরীরই দাবি করে, কোন খাবারটি তার বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত হবে। তবে নিরামিষ খাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে প্রাচ্যের দেশ ভারত। তাই বলে ভাববেন না যে, পৃথিবীর প্রথম নিরামিষ রেস্টুরেন্টটিও এই দেশেই খোলা হয়েছিল।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি সবচেয়ে পুরনো নিরামিষ রেস্টুরেন্ট নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো নিরামিষ রেস্টুরেন্টটি আসলে অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত জুরিখ শহরে, যার নাম হাউস হিল্ট। এই রেস্টুরেন্টে আপনি চাইলে পালক পনির থেকে শুরু করে সম্ভার ভাদাও খেতে পারবেন। ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই রেস্টুরেন্টটিকে গত ২০১২ সালে সবচেয়ে পুরনো নিরামিষ রেস্টুরেন্ট হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

নিরামিষ খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে এই মন্ত্রকে সামনে রেখে কিছু জার্মান অভিবাসী এই রেস্টুরেন্টটি খুলেছিল। বিশ্বের নামকরা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অনেকেই এই রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছিলেন। এদের মধ্যে আছেন, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই। সুইজারল্যান্ডে আনুষ্ঠানিক সফরের সময় এই রেস্টুরেন্ট থেকে তার জন্য খাবার নেয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে এর খাবার মোরারজির ভালো লাগলে তিনি স্বশরীরে ওই রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন।

2015_09_07_17_13_45_GXGQNPLq7OQFrv4jAiU8npVcUDlAvc_original

রেস্টুরেন্টটির বর্তমান ম্যানেজার হলেন ব্রিজিত হেইগার। তার ভাষ্য মতে, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের এখানে খদ্দেররা আসেন। তারা আমাদের এখানকার খাবারের বিশাল সম্ভার দেখে আসে, কিন্তু যাবার সময় আঙুল চুষতে চুষতে যায়।’ ম্যানেজারের কথা শুনেই বোঝা যাচ্ছে, জুরিখের এই রেস্টুরেন্টটি দীর্ঘদিন চলার রহস্য শুধুই ব্যবসায়িক একাগ্রতা নয়, পাশাপাশি খাবারের মানকে ভালো রাখার মধ্যে দিয়েই তারা তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

গত শতকের শুরুর দিকে রেস্টুরেন্টটির প্রতিষ্ঠাতার জামাতা ভারতে গিয়েছিলেন প্রাচ্যের বিভিন্ন খাবার সম্পর্কে জানতে এবং তা শিখতে। ভারতে এসে তিনি বিভিন্ন অঞ্চলের নিরামিষ রান্নার এক বিশাল সম্ভার নিয়ে যান। রেস্টুরেন্টের দেয়ালে ঝোলানো খাবারের মেন্যু দেখলেই খুব সহজে বোঝা যায়, আজকের এই রেস্টুরেন্ট হতে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়েছে এই জার্মান পরিবারটিকে।



মন্তব্য চালু নেই