শাহনূরের পেট থেকে বেরোলো ২ কেজি চুল
শৈশব থেকে চুল খেয়ে আসছিল ১৫ বছর বয়সী শাহনূর। গত ৭/৮ বছর ধরে নিজের মাথার চুল খেয়ে আসলেও চিকিৎসকদের কাছে এই ‘মানসিক সমস্যাটি’ ধরা পড়ার আগে কিছুই জানত না তার বাবা-মা।
অবশেষে বুধবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর পাকস্থলি থেকে দুই কেজি ওজনের চুলের বল বের করে আনেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক তপন কুমার সাহার নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল।
এক পর্যায়ে ওই কিশোরী প্রচণ্ড পেট ব্যথা অনুভব করে। খেতে পারছিল না, জোর করে কিছু খাওয়াতে গেলেও বমি হচ্ছিল। তখন মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে যান তার বাবা মা।
চিকিৎসকরা বলেন, শাহনূর যেসব চুল গিলে খেত, হজম না হওয়ায় সেগুলো পাকস্থলিতে আটকা পড়ে দিনে দিনে কুণ্ডলী পাকিয়ে বড় হয়ে ওঠে। এটি এতই বড় হয়ে উঠছিল যে তা ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।’
চা বিক্রেতা বাবা বাইরে এবং গৃহকর্মী মা অন্যের বাড়িতে কাজে ব্যস্ত থাকায় ছোটবেলা থেকে ঘরে নানি সালেহা বেগমের কাছেই থাকত শাহনূর।
সালেহা বেগম বলেন, ‘আমার কাছে থাকলেও আমি কখনও তাকে চুল খেতে দেখিনি। মাঝে মাঝে কোনোকিছু নিয়ে বকাঝকা করলে মাথার একটা-দুইটা চুল ছিঁড়ত। কিন্তু এগুলো তো অনেক, এতগুলো চুল কিভাবে খেল!’
অস্ত্রোপচারের ধকল কাটিয়ে ওঠলে তাকে মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান চিকিৎসকরা।
ঢাকা মেডিকেলের মনো চিকিৎসক মো. রাশিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের মানসিক অবস্থাকে বলে ট্রিকোটিলোমেনিয়া, মানে মেয়েটি নিজের চুল টেনে ছেঁড়ায় আক্রান্ত। নিজের চুল ছিঁড়তে সে আনন্দ পায়। তবে নিজের চুল ছেঁড়ার এ ধরনের ম্যানিয়ায় অনেকে আক্রান্ত হলেও সবাই সেই চুল খায় না। এ সমস্যায় আক্রান্তদের মধ্যে শতকরা ৩৩ থেকে ৪০ জনের চুল খাওয়ার অভ্যাস থাকে এবং এদের মধ্যেও মাত্র ৩৭ শতাংশের পেটে শাহনূরের মতো চুল কুণ্ডলী পাকায়।
শাহনূরকে কাউন্সেলিং ও ওষুধের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব বলে জানান তিনি।
মন্তব্য চালু নেই