শরতের বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী
ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এখন চলছে শরৎকাল। ভাদ্র শেষ হয়ে আশ্বিন মাস শুরু হয়েছে মাত্র পাঁচদিন।
প্রকৃতি এখনো আচরণ করছে গ্রীষ্ম-বর্ষা মিলিয়ে। ভাদ্রের শেষদিক আর আশ্বিনের প্রথম তিনদিন ছিল তাপদাহ। গত দুদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আর রোববার সকাল থেকে থেমে থেমে বর্ষণের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী।
ভারী বর্ষণে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের প্রধান সড়ক খালে পরিনত হয়। বঙ্গভবনের ফুটপাতেই ছিল হাঁটু পানি। বক চত্বরের পানির ঢেউ হার মানিয়েছে ছোট-খাট নদীকেও। একই অবস্থা প্রায় পুরো ঢাকা শহরে।
এতে থমকে গেছে রাজধানীর জনজীবন। ঘণ্টার পর ঘণ্টার আটকে থাকে গাড়ির চাকা। সাধারণ জনগণের ভোগান্তি ছিল চরমে। এর মধ্যে কোরবানি উপলক্ষ্যে গরুবাহী ট্রাকগুলোর অবস্থা ছিল সবচেয়ে করুন। প্রধান সড়ক, ফুটপাত, মহল্লার গলি সব জায়গায় শুধু পানি আর পানি। যেন শহরে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থাই নেই।
রাজধানীতে জলাবদ্ধতায় সিএনজি চলাচল প্রায় বন্ধ। কাছাকাছি দূরত্বে যেতে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও মিলছে না রিকশা।সব মিলিয়ে নগরজীবনে নেমে আসে অনেকটা স্থবিরতা, ধীরগতি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার রাস্তা ডুবে গেছে পানিতে। কোথাও কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি। রাস্তায় নামা অফিসগামীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। গণপরিবহণ সংকট পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। এদিকে মৌসুমি বায়ুর কারণে বৃষ্টি আরও দু’দিন থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় শনিবার থেকে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
রোববারের বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হাঁটু পানিতে ডুবে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা পুরোপুরি ঠিক না থাকায় পানি নিষ্কাশনে সময় লাগে। জলাবদ্ধতার কারণে গণপরিবহণসহ সব ধরনের যানবাহন আটকে থাকে। অতিরিক্ত পানি জমে থাকায় সড়কের বেহাল দশায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আসাদগেট পর্যন্ত সড়ক ও শেরশাহ্ সুরি সড়ক, তাজমহল রোড, হুমায়ূন রোড, নুরজাহান রোডে পানি জমে রয়েছে। পূর্ব রামপুরা এলাকার কিছু কিছু গলিতে হাঁটু সমান পানি জমেছে। পানি জমেছে শান্তিনগর, আরামবাগ, মতিঝিল, মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, বাড্ডা, নাখালপাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায়।
অসময়ের বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ দেখা গেছে পশুর হাটগুলোতে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভোগান্তি ছিল চরমে। একদিকে হাট জমেনি অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে ভোগান্তি। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে কাঁদা জমে গেছে গরুর হাটগুলোতে।
মন্তব্য চালু নেই