লোভ দেখিয়ে ঢাকায় এনে কিডনি কেটে নিতো তারা
রাজধানীর গাবতলী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে দুইজন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়। তাদের একজনের বাড়ি জয়পুরহাট ও অন্যজনের মুন্সীগঞ্জে।
গোয়েন্দা পুলিশরে যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই চক্রটি গ্রামের সহজ সরল ব্যক্তিদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসতো। এরপর চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে শরীর থেকে কিডনি কেটে নিতো। এই চক্রটি এর আগে অজ্ঞান পার্টির সদস্য ছিল। এখন তারা পেশাবদল করে কিডনি পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে।
চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুল জলিল, শেখ জাকির ইবনে আজিজ ওরফে শাকির, আশিকুর রহমান ওরফে জেবিন, ফজলে রাব্বি ও জিহান রহমান। এই চক্রের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া দুই ভুক্তভোগী হলেন- আবু হাসান ও শান্ত।
মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দু’টি চেতনানাশক ইনজেকশন ও সিরিঞ্জ, একটি ধারালো ছোরা এবং একটি তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জলিল বিভিন্ন সময় ভারতে গিয়েছিল কিডনি বিক্রি করতে। সে গত ১০ বছর ধরে এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত।’
এই অপরাধের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক জড়িত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জলিল কিডনি বিক্রির উদ্দেশ্যে আবু হাসানকে গ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে। একটি কিডনির বিনিময়ে সিএনজি ও টাকার প্রলোভন দেখায় সে। অপরদিকে শান্তকে পূর্ব পরিচিত আশিকুর তার চাচীকে রক্ত দেয়ার নাম করে গ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে আসে।’
‘যাওয়া-আসার খরচ ও ২০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে আশিকুর। রক্ত দেয়ার সময় তারা চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে শান্তর কিডনি কেটে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিল চক্রটি। কিডনি অপসারণের পর শান্তকে হত্যা করে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়ার অথবা অন্য নামে লঞ্চে রুম বুকিং করে লাশ সুটকেসে ঢুকিয়ে সেখানে ফেলে রাখার পরিকল্পনাও ছিল তাদের।’ বললেন মনিরুল ইসলাম।
মন্তব্য চালু নেই