লন্ডনে ক্ল্যাপটনের কনসার্টে কিম জংয়ের ভাই!

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের বড় ভাই কিম জং শুলকে লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে এরিট ক্ল্যাপটনের কনসার্টে দেখা গেছে। জাপানি একটি টিভিতে ফুটেজসহ এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে হইচই পড়ে গেছে। যেখানে উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর জন্য ইউরোপ আমেরিকার ভিসা নিষিদ্ধ।
গত মঙ্গলবার জাপানি টিভি ওই ভিডিও প্রকাশ করে। চামড়ার সবুজ জ্যাকেট পরিহিত এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিম লন্ডনের ক্ল্যাপটনের ওই কনসার্টস্থলে কিম জং শুলের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে আসতে দেখা গেছে।
ওই ব্যক্তি যে কিম জং শুলই ছিলেন- উত্তর কোরিয়া বিষয়ক এক ব্রিটিশ পর্যবেক্ষক তা নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য তাকে এর আগেও বিখ্যাত শিল্পী ও গিটারিস্ট এরিক ক্ল্যাপটনের দু’টি কনসার্টে দেখা গেছে।
ফুটেজে দেখা গেছে, সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে আছেন। তাকে নানা প্রশ্ন করছেন সবাই, কিন্তু তিনি কোনো জবাব না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে কনসার্টস্থলের দিকে যাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একই ভেন্যুতে ক্ল্যাপটনের আরেকটি কনসার্টেও তাকে দেখা গেছে। এ রাতের ঘটনা বর্ণনায় বিবিসির সাংবাদিক সিমন প্যাটারসন বলেন, কনসার্টে তাকে আর দশটা ভক্তের মতোই মনে হয়েছে। তার চারপাশে উত্তর কোরীয় কর্মকর্তারা ছিলেন। তাদের অবশ্য ক্ল্যাপটনের ভক্ত বলে মনে হয়নি। তিনি একাই সবার সাথে গলা মিলিয়ে গান গেয়ে পুরো কনসার্টটি উপভোগ করেছেন।
এর আগে ২০০৬ সালে জার্মানি এবং ২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে এরিক ক্ল্যাপটনের কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন কিম জং শুল।
ছোটবেলা থেকে এমন উচ্ছ্বল কিম জং শুল
উত্তর কোরিয়া বিশ্লেষক এইডান ফোস্টার বলেন, ‘ছবি দেখে আমার মনে হয়েছে, আমি আগে তাকে যেমনটি দেখেছিলাম ঠিক তেমনি। এছাড়া তার চারপাশে সহচর ছিল। তিনি যদি কিম জং শুলই না হবেন তাহলে তার পাশে এরা কেন?’
তিনি জানান, কিম উত্তর কোরিয়ার কোনো সরকারি পদধারী না হওয়ায় তার ব্যাপারে ভিসা নিষিদ্ধের আইন খাটছে না।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তাসংস্থা উনহাপ জানিয়েছে, যাকে কিম জং বলা হচ্ছে সেই ব্যক্তি পশ্চিম লন্ডনের চেলসি হার্বার হোটেলে উঠেছিলেন। ওই হোটেলে একরাত থাকার খরচ ৩ হাজার ২৯০ ডলারেরও বেশি। তবে হোটেল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ।
জানা গেছে, শুক্রবারই তার মস্কোর উদ্দেশে যাত্রা করার কথা রয়েছে।
নর্থ কোরিয়া লিডারশিপ ব্লগের তথ্য মতে, কিম জং শুল উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত নেতা কিম জং ইলের চতুর্থ স্ত্রীর বড় সন্তান। তার বয়স এখন ৩৩ বছর। ছোট ভাই কিম জং উনের মতো তিনিও সুইজারল্যান্ডে পড়াশুনা করেছেন।
কিম জং শুলকে তারা বাবা উত্তরসূরী হিসেবে পছন্দ করতেন না কারণ তিনি মনে করতেন, এই ছেলের আচরণ ছোট্ট খুকির মতো! এ কারণে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মারা যাওয়ার আগে ২০০৯ সালে তিনি ছোট ছেলেকেই উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন।
প্রকৃত ঘটনা হলো, কিম জং শুল ছোটবেলা থেকেই খুব আমুদে প্রকৃতির। সে বাইরে সবাই সাথে মিশতে পছন্দ করে। আর ভালোবাসে গান। তবে ছোট ভাইয়ের জন্য নিবেদিত প্রাণ। সরকারের প্রচারণা দপ্তরের হয়ে তিনি কাজ করছেন বলে জানা যায়।
মন্তব্য চালু নেই