লংমার্চ ঘিরে আবারো উত্তপ্ত রাজনীতি

একতরফা দশম সংসদ নির্বাচনের পর অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া দেশের রাজনীতি বিএনপির লংমার্চ ঘিরে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ঘোষিত লংমার্চ ইস্যুতে দলটি আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আগামী মঙ্গলবার তিস্তা ব্যারাজ অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এরই মধ্যে তিস্তা-মার্চ কর্মসূচি শেষ করেছে বামপন্থি দল সিপিবি ও বাসদ। সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামীও। এ দলগুলোর কর্মসূচিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। সরকার কোনো বাধা দেয়নি; কিন্তু বিএনপির লংমার্চ নির্বিঘ্নে করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন দলের নেতারা। তাদের আশঙ্কা, সরকার এ কর্মসূচি পালন করতে দেবে না। এ জন্য লংমার্চে বাধা না দিতে সরকারকে সতর্ক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শনিবার শ্রমিক দলের কাউন্সিলে বলেন, এটা গণতান্ত্রিক কর্মসূচি। এতে বাধা দিলে লড়াই ছাড়া আমাদের কোনো পথ থাকবে না। এ কর্মসূচিতে বাধা দিলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
অন্যদিকে সরকারি দলের নেতারা বলেছেন, লংমার্চের নামে নৈরাজ্যের চেষ্টা করা হলে পরিণাম হবে ভয়াবহ। অবশ্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
বিএনপির লংমার্চে পুলিশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অন্যতম মুখপাত্র ও গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, অনুমতির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, পুলিশের অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, বিএনপির কর্মসূচির বিষয়ে পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে। লংমার্চের নামে গাড়ির মার্চ করা হলে কোনোভাবেই অনুমতি দেওয়া হবে না।
এদিকে লংমার্চে বাধা দেওয়া হলে জনগণই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় স্বার্থের কর্মসূচিতে যারা বাধা দেবে, তাদের মুখোশ জনগণের সামনে উন্মোচিত হবে। জনগণ তাদের বিচার করবে। তারা গণশত্রু। লংমার্চের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে শুরু হওয়া লংমার্চ যেসব জেলার ওপর দিয়ে যাবে, সেসব এলাকার নেতাদের সর্বোচ্চ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তারাও নিচ্ছেন জোর প্রস্তুতি।’
অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যে নেত্রী ভারতে গিয়ে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যার চুক্তির কথাই ভুলে যায় তার মুখে লংমার্চ করার কথা শোভা পায় না। এটা জনগণের স্বার্থে নয়, নতুন করে নৈরাজ্য করার একটি পাঁয়তারা। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করলে ভালো না করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ কমর্সূচির পক্ষে। বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে তাহলে বাধা নয়, আর নৈরাজ্য করলেই ব্যবস্থা। সাঈদীর রায়ের পর নাশকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনদিন রায় হবে সেটা আদালতের বিষয়। তবে রায়ের পর যেন গত বছরের ন্যায় সারা দেশে তাণ্ডব চালাতে না পারে সে জন্য নেতা-কর্মীরা সতর্ক থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই