র্যাব-পুলিশের বড় সঙ্কট জনবলে ঘাটতি
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও র্যাবে লোকবল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।
বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, কাজের সুবিধার্থে পুলিশে আরো চারটি পুলিশ লাইনস প্রয়োজন। গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অফিসের আরো আধুনিকায়ন করা দরকার। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে ঝুঁকি ভাতা দিতে হবে।
র্যাবের কর্মকর্তারা বলেন, এ সংস্থায়ও জনবল সঙ্কট প্রকট হচ্ছে।
বৈঠকে ডিআইজি ও পুলিশ সুপাররা সার্বিক সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। এসময় পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শদিদুল হক ও অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ডিএমপিতে জনবল বাড়ানো দরকার। পাশপাশি আবাসন ও পরিবহন সমস্যা দূর করতে হবে।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক জহিরুল আলম ভুঁইয়া বলেন, ‘পুলিশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা গেলে কাজে গতি বাড়বে, দেশ উপকৃত হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মিলি বিশ্বাস বলেন, নারী পুলিশের আবাসন সমস্যা প্রকট। এর সমাধান দরকার।
ঢাকার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অন্যান্য পুলিশ সদস্যের জন্যও ঝুঁকিভাতা বাড়ানো উচিৎ। কারণ মাঠ পর্যায়ের কাজে ঝুঁকি অনেক।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ বলেন, পুলিশ অধিদপ্তরের পরিবর্তে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স লেখা উচিৎ। ১৯৯৪ সালে অফিসিয়াল কর্মকাণ্ডে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স লেখা হতো।
ডিএমপির ওয়ারি জোনের উপপুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে কাউন্টার টেরোরিজম দ্রুত চালু করা উচিৎ। পুলিশ কনস্টেবলদের মোটরসাইকেল কেনা বাবদ ঋণের ব্যবস্থা করলে তারা দায়িত্বপালনে আরো তৎপর হবেন।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার বলেন, যানবাহনের অভাবে হাইওয়েতে পেট্রল ডিউটি পালন করতে পুলিশকে নানান সমস্যায় পড়তে হয়। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অপরাধীদের তাৎক্ষণিক সাজা দেয়ায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এর ভালো প্রভাব পড়ছে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, বর্তমানে র্যাবে জনবল সঙ্কট রয়েছে। যেখানে ১১ হাজার জনবল দরকার সেখানে আছে ৮ হাজার। তারপরও সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে র্যাব। ডিজি পদমর্যাদা আপগ্রেড করতে হবে। র্যাবের এপিসি প্রয়োজন।
পুলিশ কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের আধুনিকায়নে আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলোর অধিকাংশই এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। গত ছয় বছরে পুলিশে ৩১ হাজার ৭৪৪টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। আরো ৫০ হাজার পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে কনস্টেবল থেকে এসআই পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ঝুঁকিভাতা পর্যায়ক্রমে সকল স্তরের পুলিশ সদস্যদের ক্ষেত্রেও বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য চালু নেই