রমনায় বোমা হামলা : এক মামলার রায় হলেও ঝুলে আছে অন্যটি

রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ উৎসবে বোমা হামলার দুই মামলায়, একটির রায় হলেও গত ১৪ বছর ধরে ঝুলে আছে অন্যটি। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল এ হামলা হয়।

২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলাটির রায় হয়। এ রায়ে মুফতি হান্নানসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা অন্য মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ এখনও চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ব্যস্ততার অজুহাতে এ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ বিলম্বিত হচ্ছে। তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মত গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোতে ব্যস্ত থাকায় রমনা বটমূলে বোমা বিস্ফোরণের মামলার শুনানি বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকার বিশেষ দ্রুত বিচার আদালত-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আবু ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, `আমরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় রমনা বোমা বিস্ফোরণ মামলার সাক্ষীদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য ডাকার সময় পাচ্ছি না।`

২০০১ সালে বর্ষবরণ উৎসবে এ বোমা হামলায় ১০ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়। এ ঘটনায় বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ বাদী হয়ে দুইটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলা ও আরেকটি বিস্ফোরক নিরোধ আইনের অধীনে করা মামলা।

গত বছরের ২৩ জুন ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ রুহুল আমিন হুজি প্রধান মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে হত্যা মামলাটির রায় ঘোষণা করলেও বিস্ফোরক মামলাটির কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

ঘটনার পর ১৪ বছর কেটে গেলেও এ পর্যন্ত ৪৮ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৮/৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ ধীর গতিতে চলছে। গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এ মামলার অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

ঘটনার সাড়ে সাত বছর পর ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর এ মামলায় ছয়জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর আবু হেনা মোহাম্মদ ইউসুফ মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন।

চার্জশিটে যাদের নাম উল্লেখ করা হয় তারা হলেন- মুফতি আব্দুল হান্নান, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি আব্দুল হাই, মাওলানা শওকত ওসমান, মাওলানা আবু বকর, মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন, মাওলানা আব্দুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসেন, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আব্দুর রউফ, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর এবং শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল। এদের মধ্যে হান্নান, সুমন, জুয়েল, তাহের, রউফ ও আকবর কারাগারে আছেন, বাকিরা এখনও পলাতক।

মুফতি হান্নান, আকবর ও আরিফ নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন এবং বর্ষবরণ উৎসবকে ইসলাম-বিরোধী উৎসব হিসেবে নিজেদের বিশ্বাসের কথাও জানান।



মন্তব্য চালু নেই