রক্তে ভেজা সুদানের মাটি
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে বিভক্ত হয়েছে সুদান। ২০১১ সালে এক শান্তিচুক্তির মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় দক্ষিণ সুদান নামের একটি স্বাধীন দেশের। নতুন এই দেশটির জন্ম থেকে একদিনের জন্যও যুদ্ধ-সংঘাত আর রক্তপাত থেকে নিস্কৃতি পায়নি। সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বিরোধ এবং সাবেক সুদানের সঙ্গে কলহের জের ধরে ইতোমধ্যেই দুই দেশের অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন। সম্প্রতি সুদানিজ গর্ভনমেন্ট ফোর্সের এক হামলায় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়। কিন্তু এই ঘটনায় জাতিসংঘ তথা কোনো বিশ্ব সংঘ থেকেই কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।
সুদানের উত্তরের সুদান পিপলস লিবারেশন আর্মি-নর্থ(এসপিএলএ-নর্থ) স্থানীয় প্রায় চার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে পারলেও অনেক বাসিন্দা এখনও অবরুদ্ধ হয়ে আছে। কারণ সুদানের কেউডা অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্রোহীদের অন্যতম ঘাটি হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। চলতি বছরের জানুয়ারির শুরুতে টানা নয়দিন ব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এসময় লিবারেশন আর্মি-নর্থ সুদানিজ আর্মির আক্রমনে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
বিদ্রোহীদের কমান্ডার আবুরাস আলবিনো কুকু’র বক্তব্য অনুসারে, তার দলের ৪০০ সদস্য সরকারি বাহিনীর দুই হাজার সদস্যকে পিছু হটিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কি পরিমান মানুষ এই সংঘাতে হতাহত হয়েছে তার কোনো তথ্য তিনি দেননি। এমনকি এই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও অবাক নিরব ভূমিকা পালন করছে। খার্তুম সরকার যুদ্ধ বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেয়ার বদলে দক্ষিণ সুদানের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক কোনো দাতব্য সংস্থা বা গণমাধ্যমকে সুদানে প্রবেশে নিশেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মূলত, সুদানের এই দঙ্গার অন্যতম কারণ জাতিগত অসামঞ্জস্যতা। খার্তুম সরকার নুবা জাতিগোষ্ঠির উপর দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার চালিয়ে আসছে। যেহেতু নুবারা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় সুদানের উত্তরাঞ্চলে তাই তাদের পক্ষে দেশত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকছে না। কিন্তু দক্ষিণ সুদানের রয়েছে বিশাল তেলের ক্ষেত্র। যে ক্ষেত্রকে কমবেশি সবাই অধিকার করতে চায়। অপরদিকে এই তেল উত্তোলন পরবর্তীতে বন্দরে নিয়ে যাওয়ার কোনে রাস্তা নেই বিধায় দক্ষিণ সুদানকে মূল সুদানের দ্বারস্থ হতে হয়।
মন্তব্য চালু নেই