যৌনতার পাঠ নেবেন ১০ কোটি তরুণী

বদলে গিয়েছে দুনিয়া৷ ক্রমে, আরও বদলেও চলেছে৷ অথচ, এখনও সেভাবে সচেতন হতে পারেননি ৮০ শতাংশ মহিলা৷ ওই অংশের মধ্যে যেমন রয়েছেন কম বয়সি মেয়েরা৷ তেমনই আবার রয়েছেন বেশি বয়সি মহিলারাও৷ যে কারণে, এ বার ওই অংশের মধ্য থেকে ১০ কোটি তরুণীকে দেওয়া হবে যৌনতার পাঠ৷

ওই তরুণীরা আবার অন্য কোনও দেশেরও নন৷ তাঁরা ভারতেরই বাসিন্দা৷ অথচ, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এ দেশ ক্রমে প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে৷ বদল ঘটছে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও৷ যদিও, সামাজিক-অর্থনৈতিক ওই প্রগতি সার্বিক কি না, সেই বিষয়ে বিভিন্ন মহলে রয়েছে প্রশ্ন৷ তবে, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় প্রকাশ, এ দেশের ৮০ শতাংশ মহিলা এখনও সেভাবে সচেতন হতে পারেননি৷ ওই অংশের মধ্যে সচেতনতার খামতি রয়ে গিয়েছে খোদ তাঁদেরই স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়ে৷ যে কারণে, এ বার ওই মহিলাদের শিক্ষিত করে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷

তবে, ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষিত করে তোলা হবে তাঁদেরই, যাঁরা তরুণী৷ এবং, পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৮-র মধ্যে ভারতের ১০ কোটি তরুণীকে দেওয়া হবে যৌন বিষয়ক পাঠ৷ যে কারণেই, যৌনতার পাঠ নেবেন ১০ কোটি তরুণী৷ এ দেশের ওই তরুণীদের কেন দেওয়া হবে যৌনতার পাঠ? কেনই-বা গ্রহণ করা হয়েছে এই ধরনের পরিকল্পনা? সাম্প্রতিক ওই সমীক্ষায় প্রকাশ, গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে ভারত৷ অথচ, পুরানো নানা ধ্যান-ধারণা থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেননি এ দেশের মহিলাদের বড় একটি অংশ৷ পুরানো ওই সব ধ্যান-ধারণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আবার নানা ধরনের কুসংস্কার এবং ভ্রান্ত ধারণাও৷ এবং, তার জেরেই আবার ব্যাহত হচ্ছে খোদ মহিলাদেরই স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি৷

কেন এবং, কীভাবে? পুরানো ধ্যান-ধ্যারণা আর তার সঙ্গে কুসংস্কার-ভ্রান্ত ধারণার জেরে ওই সব মহিলার মধ্যে দেখা যায়, তাঁদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিকেই তাঁরা গোপনীয়তায় বন্দি করে রাখেন৷ এমনই গোপনীয়তা যে, বহু ক্ষেত্রেই অন্য মহিলাদের সঙ্গেও ওই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন না৷ এমনকী, পরিবারের অন্য মহিলাদের সঙ্গেও নয়৷ অথচ, এমন নানা কারণের জেরে আখেরে তাঁদেরই স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি অবহেলিত থেকে যায়৷ সাম্প্রতিক ওই সমীক্ষায় প্রকাশ, এ দেশের গ্রামাঞ্চলের ৭৫ শতাংশ মহিলাও এখনও পর্যন্ত সেভাবে সচেতন নন৷ কোন বিষয়ে সচেতনতার খামতি রয়ে গিয়েছে এ দেশের ৮০ শতাংশ মহিলার মধ্যে?

বিষয়টি অন্য আর কিছু নয়৷ ওই বিষয়টি হল রজঃস্রাব৷ ওই সমীক্ষায় প্রকাশ, প্রগতির পথে এগিয়ে চলা সত্ত্বেও, এখনও এ দেশের ওই ৮০ শতাংশ মহিলা সেভাবে জানেন না যে, রজঃস্রাবের সময় কেন এবং কীভাবে তাঁদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে৷ এমনকী, রজঃস্রাবের বিষয়টি যে প্রাকৃতিক কারণেই হয়, সেই বিষয়েও এখনও বহু মহিলা মধ্যে নেই যথাযথ সচেতনতা৷ এমনই নানা কারণে আবার সমস্যা দেখা দেয় মায়েদের ক্ষেত্রেও৷ কেননা, রজঃস্রাবের বিষয়ে ওই মায়েরাও সেভাবে সচেতন নন৷ যে কারণে, রজঃস্রাবের বিষয়ে তাঁদের সন্তানদেরও সেভাবে গাইড করতে পারেন না ওই মায়েরা৷ অথচ, রজঃস্রাবের সময় যদি গুরুত্ব দেওয়া না হয়, তা হলে, তার প্রভাব আবার পড়ে স্বাস্থ্যের উপরেও৷ কাজেই, মাসের ওই ক’দিন কেন স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে, সে বিষয়ে দেশের ওই ৮০ শতাংশ মহিলার সচেতন হওয়া জরুরি বলেও জানানো হয়েছে ওই সমীক্ষায়৷

আর, যে কারণে, রজঃস্রাবের বিষয় এবং সেই সময় কীভাবে স্বাস্থ্যসুরক্ষা করতে হবে, তেমন নানা বিষয়ে এ দেশের ১০ কোটি তরুণীকে পাঠ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ ওই সমীক্ষায় প্রকাশ, এ দেশে এখনও ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় না স্যানিটারি ন্যাপকিন৷ কোনও ক্ষেত্রে যেমন লজ্জা, তেমনই কোনও আবার নীরবতা৷ স্যানিটারি ন্যাপকিনের ক্ষেত্রে ওই লজ্জা-নীরবতার অবসান না হলে, আখেরে উপেক্ষিত হতে থাকবে খোদ মহিলাদেরই স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টি৷ওই সমীক্ষাটি করা হয়েছে স্যানিটারি ন্যাপকিনের অন্যতম ব্র্যান্ড স্টেফ্রি-র তরফে৷ ওই ব্র্যান্ডের তরফেই জানানো হয়েছে যে, ২০১৮-র মধ্যে এ দেশের ১০ কোটি তরুণীকে রজঃস্রাবে সুরক্ষার বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলা হবে৷ আর, এ ভাবেই যৌন বিষয়ক পাঠ নেওয়ার মাধ্যমে যৌনতারও পাঠ নেবেন এ দেশের ওই তরুণীরা৷



মন্তব্য চালু নেই