যে সন্ন্যাসী মোদির জীবন পাল্টে দেন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছোটবেলায় সন্ন্যাসী হতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করতে ছুটে গিয়েছিলেন এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর কাছে। এই সন্ন্যাসীকে মোদি গুরু মানতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মোদিকে রাজনীতিতে উৎসাহিত করেন।
১৯৬৬ সালের কথা। কলকাতার বেলুরের রামকৃষ্ণ আশ্রমের (আরকেএম) সন্ন্যাসী স্বামী আতমাসথানন্দ গুজরাটের রাজকোটে প্রধান সন্ন্যাসী হয়ে যান। স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত তরুণ মোদি ছুটে যান তার কাছে। তিনি আশ্রমে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি চেয়েছিলেন। এর আগেই কয়েক বছর বিভিন্ন আশ্রমে ঘুরেছেন মোদি এবং তিনি আধ্যাত্মিক জীবন গড়তে চেয়েছিলেন।
স্বামী আতমাসথানন্দের সাহচর্চে বেশ কিছু দিন পার করেন মোদি। এ সময়ে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করলে মোদির গুরু আতমাসথানন্দ তাকে বলেন, ‘সন্ন্যাস জীবন তোমার জন্য নয়।’ রাজকোট আশ্রম মোদিকে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করতে না দিলে মোদি রামকৃষ্ণ আশ্রমের প্রধান কার্যালয় বেলুরে চলে যান এবং তার ইচ্ছার কথা জানান।
আতমাসথানন্দ মোদির হাতে একটি চিঠি দিয়ে তাকে বেলুরে রামকৃষ্ণ আশ্রমের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট স্বামী মধ্যবানন্দের কাছে পাঠান। স্বামী মধ্যবানন্দও মোদির অনুরোধ রাখেননি। মোদিকে তিনি বলেন, তোমার কাজ জনগণকে নিয়ে। গৃহত্যাগী হওয়া তোমার কাজ নয়।’
বেলুর থেকে রাজকোটে ফিরে কয়েক দিন স্বামী আতমাসথানন্দের সান্নিধ্যে কাটান মোদি। এরপর যোগ দেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘে (আরএসএস)। এই সংগঠনের হাত ধরে রাজনীতিতে যুক্ত হন মোদি।
গত বছরের ৯ মে গুরু আতমাসথানন্দের সঙ্গে দেখা করতে যান মোদি। গুরুর পায়ের কাছে বসে থাকেন তিনি। গুরুর আশীর্বাদ নিয়ে ফিরে আসেন। মোদির ৯৫ বছর বয়সি গুরু স্বামী আতমাসথানন্দ অসুস্থ। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রিয় ভক্ত মোদি এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বেলুর মঠ থেকে রামকৃষ্ণ পরমহংসের স্ত্রী সারদার মূর্তি চুরি হওয়ায় মোদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেছেন তার গুরু।
মোদি ও তার গুরুর মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে সেই ১৯৬৬ সাল থেকে, প্রায় ৫০ বছর। লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সময় মোদির পকেটে যে ‘প্রসাদের ফুল’ দেখা যায়, তা ছিল তার গুরুর পাঠানো। ভক্তকে আশীর্বাদ করে লেখা চিঠির সঙ্গে ওই ফুল পাঠিয়েছিলেন স্বামী আতমাসথানন্দ।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।
মন্তব্য চালু নেই