যেভাবে শুরু করবেন শেয়ার বাজারে ব্যবসা

একজন বিনিয়োগকারীর প্রধান করনীয় হচ্ছে বিনিয়োগের পূর্বে বিনিয়োগ সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত হওয়া। যেখানে বিনিয়োগ করবেন সেখানে কীধরনের ঝুকিঁ (Risk factor) আছে বিবেচনায় আনা এবং বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসার সম্ভাবনা বা বাস্তবতা অধিক এমন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা। এছাডাও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট আইন কানুন সম্পর্কে নূন্যতম ধারনা রাখা এবং এ বাজারে বিনিয়োগকারী হিসাবে তার যে সকল অধিকার আছে সে সম্পর্কে ধারনা রাখা। এবার দেখা যাক শেয়ার ব্যবসা শুরু করার প্রাথমিক কাজগুলো কী কী।

1. Customer Account Opening Form: একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজারে (Secondary Market) বিনিয়োগে আগ্রহী হলে সর্বপ্রথম তাকে একটি ব্রোকারেজ হাউজে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর ব্রোকারেজ হাউচ কতৃক সরবরাহকৃত Customer Account Opening Form সঠিকভাবে পূরণ করে উক্ত হাউজে একটি Cusmtomer Account Open করতে হবে এবং উক্ত Account Number সংগ্রহকরে সংরক্ষণ করতে হবে। সাধারণত এটিকে Customer Code বলে অভিহিত করা হয। পরবর্তীতে লেনদেন করতে হলে এই নাম্বারটির প্রয়োজন হবে।

2. Beneficiary Owner (BO) account opening form: একজন বিনিয়োগকারীকে ডিমেটকৃত/অজডকৃত শেযার (Electronic Share) ক্রয়/বিক্রয়ের জন্য Central Depository of Bangladesh Ltd. (CDBL) এর আওতাধীন যেকোন Depository Participant (DP) তে একটি BO Account Opening Form সঠিকভাবে পূরণ করে DP তে BO account open করতে হবে এবং উক্ত Account Number সংরক্ষন করতে হবে। প্রধানত প্রাথমিক শেয়ার (IPO) তে আবেদন করার জন্য এই নাম্বারটি আপনার প্রয়োজন হবে। এট ১৬ডিজিটের একটি নাম্বার।

3. একজন বিনিয়োগকারী (প্রাতিষ্ঠনিক বিনিয়োগকারী ব্যতীত) একাধিক হিসাব (BO Account) খুলতে পারবেননা। তবে নিজের একক নামে ছাডাও যৌথ নামে (Joint account) আরেকটি হিসাব (মোট ২টি) খুলতে পারবেন।

4. হিসাব খুলার সময় একজন বিনিয়োগকারীকে BO Account Open করার সময় CDBL Laws অনুযায়ী Terms & Conditions (শর্তাবলী) ভালভাবে পড়ে স্বক্ষর করা উচিত।

5. যেকোন DP-তে একজন BO Account Holder-কে শনাক্ত করার জন্য Account Open করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন- নাগরিকত্ব সনদপত্র/পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি, ব্যাংক একাউন্টের সার্টিফিকেটের কপি জমা দিতে হবে।

6. Dierct Account Open: একজন বিনিয়োগকারী CDBL-এ Form-06 পূরন করে (প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ) Direct Account Open করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে কোন DP-র কাছে যেতে হবেনা।

7. Nominee: A) CDBL By Laws -এর From-23 সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং Nominee এর Percentage (%) B) একজন বিনিয়োগকারী CDBL by Laws Form-23 এর কাগজে Nominee Form-23 ইলেকট্রনিক্স ফরমে রুপান্তরিত হওয়ার পর DP খেকে Nominee Acknowledgement সংগ্রহ করতে পারবে।

8. Power of Attorney: একজন বিনিয়োগকারীকে BO Account Open করার জন্য CDBL By Laws From20-21 সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক্স ফরমে রুপান্তরিত হওয়ার পরে ডিপি থেকে বিনিয়োগকারী Power of Attorney Acknowldegement সংগ্রহ করবেন। এখানে উল্লেখ থাকে যে, Power of Attorney Form এ দেয়া কোন তথ্য গোপন করা যাবেনা বা মিথ্যা কোন তথ্য দেযা যাবেনা।

9. Customer Register (As per SEC-Stock broker/dealer & Autohorized representative rules 2000, 13(1): SEC-Stock broker/dealer & Autohorized representative rules 2000, 13(1) অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জের প্রত্যেক সদস্য ফার্মের অনুমোদিত প্রতিনিধি করা যাবেন। সংশ্লিষ্ট ডিপি থেকে কোন BO Account Holder-এর শেয়ার ট্রান্সফার করতে হলে উক্ত BO Account Holder এর অন্য DPতে একটি লিংক্ একাউন্ট খুলতে হবে। অতএব স্টক এক্সচেঞ্জ অথবা SEC-এর অনুমতি সাপেক্ষে ট্রান্সমিশন ফরম পূরন করে BO Account থেকে লিংক Account-এ শেয়ার ট্রান্সফার করা যাবে।

10. DP থেকে BO Account stock status: একজন বিনিয়োগকারী তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের পর ডিমেটকৃত শেয়ারের সর্বশেষ Balance অর্থাৱ BO Account Stock Status Report DP-থেকে গ্রহন করবেন।

11. Non-Resident Bangladeshi (NRB) BO Account: বিদেশে অবস্থানরত কোন বিনিয়োগকারী যদি NRB BO A/C Open করতে চান তাহলে উক্ত বিনিয়োগকারীকে Client Account এবং NRB BO A/C opening Form-এর সাথে পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। NRB account পরিচালনার জন্য একজনকে Power of Attorney প্রদান করতে হবে। NRB account holder শেয়ার বিক্রয় করার পর চেক/পে-অর্ডার জমা করার জন্য উক্ত NRB Account Holder এর নামে যেকোন Schedule Bank-এ একটি সাধারন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। সদস্য ফার্মে শেয়ার বিক্রয়ের বিপরীতে উক্ত সাধারণ ব্যাংক একাউন্টে চেক জমা করতে পারবেন। উক্ত সাধারন ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করার জন্য ব্যাংক আইন অনুযায়ী NRB Account Holder একজনকে Power of attorney প্রদান করতে পারবেন।

12. Non-resident Investors Taka Account (NITA): NITA হিসবের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীগন ব্যাংকের মাধ্যমে নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরন করে বৈদেশিক মুদ্রায় সিকিউরিটিজ ক্রয় করা যাবে। ১) যেকোন অনুমদিত ডিলার/ব্যাংকের মাধ্যমে একটি NITA হিসাব খুলতে হবে যাতে বৈদেশিক মুদ্র সাধারন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সহজে রূপান্তরযোগ্য হয়। ২) NITA হিসাবের Balance ব্যবহার করে সহজেই বাংলাদেশী শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয় করা যেতে পারে। এখানে বর্হিগমন রেমিটেন্স বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হবে। ৩) NITA হিসাবটি একাউন্ট হোল্ডার নিজে অথাবা তার নোমিনী অথবা অথরাইজড ডিলার দ্বরা পরিচালনা করতে পারেন। ৪) লভ্যাংশ/মুনাফা যা শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয় বা NITA হিসাবের মাধ্যমে ক্রয়কৃত শেয়ার বা সিকিউরিটিজের বিক্রয়কৃত অর্থ NITA হিসাবে জমা করা যাবে। উল্লেখ্য যে, NITA হিসাব হতে শুধুই শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করা সম্ভব এবং প্রযোজনে আপনার জমাকৃত অর্থ শেয়ারবাজারের লাভ সহ দেশের বাইরে তথা আপনি বিদেশে যেথানে অবস্থান করছেন সেখানে পাওয়া সম্ভব।

13. Buy/Sell Order Maintain: বিনিয়োগকারী ব্রোকার হাউজে গ্রহক হওয়ার পর শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডার দিতে পারবেন। যদি বিনিয়োগকারী শেয়ার ক্রয় করতে চায় তাহলে বিনিয়োগকারীর কাস্টোমার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমান টাকা থাকা সপেক্ষে শেয়ার ক্রয়ের অর্ডর স্লিপে ক্রয়ের অর্ডর দিতে পারবেন। শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের শেষে অবশ্যই Buy Order/Sell Order এবং CDBL Shareবিক্রয়ের ক্ষেত্রে Pay in Transfer Form পূরণ করতে হবে।

14. Trade Confirmation Statement: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একান্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডর এক্সিকিউট হওয়ার পর Trade Confirmation Statement-এ বিনিয়োগকারীর স্বক্ষর করে তার কপি গ্রহন ও সংরক্ষন করবেন।

15. বিনিয়োগকারী উক্ত ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়ের জন্য টাকা জমা করলে ব্রোকারেজ হাউজ কতৃক প্রদত্ত ছাপানো Money Receipt অবশ্যই গ্রহন করতে হবে। Mone Receipt এ ব্রোকারেজ হাউজের কোন অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর অবশ্যই থাকতে হবে।

16. Payment Voucher: বিনিয়োগকারী ব্রোকার হাউজে তার কাস্টমার একাউন্ট হতে শেয়ার বিক্রয়ের বিপরীতে টাকা উত্তোলন করতে চাইলে উক্ত কোন অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষরসহ ব্রোকারেজ হাউজ কতৃক প্রদত্ত ছাপানো Payment Voucher অবশ্যই গ্রহন ও সংরক্ষন করতে হবে। বিনিয়োগকারী উক্ত ব্রোকার হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের টাকা জমা ও উত্তলনের সমস্ত হিসাব ব্র্রোকারেজ হাউহ হতে সংগ্রহ করতে পারবেন।

17. Telephonic Order: বিনিযোগকারী তার সিকিউরিটিজ ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডার যদি টেলিফোনের মাধ্যমে দেন, তাহলে তাকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্য শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডর বিল বুক স্লিপে স্বাক্ষরসহ অর্ডার লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং Trade Confirmation Statement অবশ্যই স্বাক্ষর করে তার কপি গ্রহন করতে হবে।

18. Share Received Bill: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্ট থেকে যদি শেয়ার গ্রহন করতে চায় তাহলে Share Received Bill-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজের অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর সহ বিনিয়োগকারীকে উক্ত বিলে স্বাক্ষকর করে শেয়ার গ্রহন করতে হবে। এটি মূলত কাগজী শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

19. Stock Report: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের পর তাকে কাস্টমার একাউন্টে শেয়ারের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকার হাউজ থেকে কাস্টমার একাউন্টের Stock Report অবশ্যই গ্রহন করতে হবে।

20. Monthly/Weekly Trade status verification or Client Ledger Verification: বিনিয়োগকারী প্রতি সাপ্তাহে অথবা মাসের শেষে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ থেকে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের টাকা পয়সা জমা ও উত্তোলনের সর্বশেষ হিসাব পরীক্ষার জন্য বিনিয়োগকারী Account Statement গ্রহন করবেন।

easy: শেয়ার ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রথমেই আপনাকে একটি BO account খুলতে হবে। ব্রোকার হাউস থেকে BO account খুলতে হয়। শেয়ার যেখানে বসে কেনা বেচা হয় তাকে ব্রোকার হাউস বলে। আপনি আপনার এলাকার বা আপনি যেখান থেকে ব্যবসা করতে চান সেরকম একটি ব্রোকার হাউসে গিয়ে BO account খুলতে পারবেন। আপনি single অথবা joint account খুলতে পারবেন। ব্রোকারকে বললে আপনাকে তারা একটি ফর্ম দিবে। ঐ ফর্মটি পুরণ করে তাদের কাছে দিতে হবে। সাথে দিতে হবে

১। ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

২।আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট ( যে ব্যাংকে আপনার একাউন্ট আছে ঐ ব্যাংকে গিয়ে চাইলেই আপনাকে তারা স্টেটমেন্টটি দেবে।

৩।একজন নমিনির ছবি।

৪। আপনার ভোটার আইডির ফটোকপি।
বিভিন্ন ব্রোকার বিভিন্ন ডকুমেন্ট চেতে পারে। তাই তাদের কাছ থেকে ঠিকভাবে সবকিছু জেনে নিন। BO account খোলার জন্য ব্রোকাররা ৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত চার্য করে থাকে।

Share
মনে করুন আপনি এবং আপনার ৪ জন বন্ধু মিলে একটি ব্যবসা শুরু করলেন। তাহলে আপনাদের ৫জন সবাই এই ব্যবসায়ে অংশীদার। অর্থাৎ আপনাদের প্রত্যেকেই ব্যবসায়ের ৫ ভাগের ১ ভাগের মালিক। প্র্রত্যেক ভাগকে আপনরা বলেন নিজ নিজ শেয়ার বা ভাগ। শেয়ার বাজারের শেয়ারও ঠিক তেমনি ব্যপার। প্রত্যেকটি কোম্পানী ১০, ১০০ বা ১০০০ টাকা মূল্যের শেয়ারে ভাগ করা। আপনি যদি কোন কম্পানীর ১০০টি শেয়ার কেনেন তাহলে আপনি ঐ কম্পানীর একজন মালিক বা শেয়ার হোল্ডার। এখন মনে করুন আপনাদের ৫ বন্ধুর যে ব্যবসা সেখান থেকে ১ জন যদি চলে যেতে চায় তাহলে কী করতে হবে? সেই বন্ধু তার শেয়ার বা ভাগ অন্য একজনের কাছে বিক্রি করে চলে যাবে। ঠিক তেমনি আপনি যে কম্পানীর শেয়ার কিনেছেন সে কম্পানীর শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারেন।

এখন মনে করুন ৫ বন্ধুর ব্যবসায়ে যদি লাভ হয় তাহলে কী করা হবে? আপনাদের যার যার ভাগ অনুযায়ী লাভের টাকা ভাগ করে দেয়া হবে। তেমনি আনি যদি ১০০ টি শেয়ার কিনে থাকেন তাহলে ঐ কম্পানী যখন লভ্যাংশ ঘোষনা করবে তথন ঐ ১০০টি শেযারের লাভের টাকা আপনি পাবেন। আবার মনে করুন ৫ বন্ধুর ব্যবসা যখন পরিচালনার প্রয়োজন হয় তখন ৫জনের মধ্য থেকে আপনারা নিজেদের পছন্দ মত ১জনকে দায়িত্ব দেন। ঠিক তেমনি ভাবে আপনি যে কম্পানীর শেয়ার কিনলেন সেই কম্পানীর বার্ষিক সাধারন সভায় আপনি ভোট দিয়ে নিজের পছন্দমত পরিচালক নিয়োগ দিতে পারেন। অর্থাৎ সহজ কথায় শেয়ার হচ্ছে কোন কম্পানীর মালিকানার একটি অংশ।

Debenture
ডিবেঞ্চার হচ্ছে একধরনের ঋণপত্র। এর মাধ্যমে কোন কম্পানী পুজিঁবাজার হতে প্রয়োজনের সময় টাকা ধার করতে পারে। এই ঋণপত্রে টাকা ধার দেয়ার শর্তাবলী লিপিবদ্ধ থাকে। আর্থাৎ কত পার্সেন্ট সুদে/লাভে, কত দিনের জন্য এবং কী কী শর্তে কম্পানী কে টাকা ধার দিচ্ছেন তা লেখা থাকে। আপনি যদি ডিবেঞ্চার কিনেন এর অর্থ হচ্ছে আপনি ঐ কম্পানীকে টাকা ধার দিলেন। তবে ডিবেঞ্চারের একটি প্রধার শর্ত হচ্ছে এই টাকা ধার নেয়ার বিপরীতে কম্পানী কোন কিছু জামানত বা বন্ধক রাখবেনা। একারনে কেবল আর্থিকভাবে সচ্ছল এবং সুনামখ্যত কম্পানীগুলোই ডিবেঞ্চার ইস্যু করে টাকা ধার করতে পারে।

Bond
বন্ড বা ঋণপত্র ডিবেঞ্চারের মতই একটি ঋণপত্র। তবে এখানে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে বন্ডের ক্ষেত্রে জামানত রাখার প্রয়োজন হয়।

Treasury Bond:
ট্রেজারী বন্ড বলতে সরকার কতৃক ইস্যুকৃত বন্ডকে বোঝানো হয়। এই বন্ড সঞ্চয় পত্রের সঙ্গে তুলনীয়। কিন্তু যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেন তারা চাইলেই সেটি ভাঙাতে/বিক্রি করতে পারেন না। কিন্তু ট্রেজারী বন্ড সেকেন্ডারী মার্কেটে লেনদেন হয় বিধায় এটি সহজেই বিক্রয়যোগ্য। (যদিও ট্রেজারী বন্ডের বাজার এখনও ততটা সক্রিয় নয়)।

১ জানুয়ারী ২০০৫ হতে শেয়ারবাজারে ট্রেজারী বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। যারা ঝুকিঁর কারনে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পান আবার সহজেই বিক্রি করে বা ভাঙাতে পারবেন না বলে সঞ্চয় পত্র/ফিক্সড ডিপোজিট করতে পারেননা তারা ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। যেহেতু এটি সরকার কতৃক্ ইস্যুকৃত বন্ড তাই এতে বিনিয়োগ হারানোর ঝুকিঁ নেই বললেই চলে।

Primary Market:
প্রাথমিকভাবে যখন কোন কোম্পানী সাধারন জনগনের কাছ থেকে মূলধন উত্তোলনের জন্য শেয়ার ইস্যু করে তখন এটি প্রাথমিক বাজার/Primary Market. সহজ কথায় বলতে গেলে যখন কোন কোম্পানী Initial Public Offering (IPO) এর মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে সেটিই Primary Market.

Clearing and Settlement
ব্রোকার হাউজে দৈনিক লেনদেনকৃত সিকিউরিটিজ নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহন ও বিতরন এবং ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হয়। যারা প্রথম দিকে এ ব্যবসার সংগে জড়িত হন তাদের একটা খুব সাধারন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে আমার নামে শেয়ার আসবে, কীভাবে বিক্রি করার পর টাকা পাবো, এ লেনদেন গুলো কীভাবে হয়? সাধারণত এসব কাজ হয় Clearing and Settlement বিভাগের মাধ্যমে। এখানে আসুন দেখে নেই এই শেয়ার এবং টাকা আদান প্রদানের ব্যপার গুলো কীভাবে ঘটে?

১। আপনি যখন কোন শেয়ার ক্রয় করেন তখন আপনার ব্রোকার শেয়ারের মূল্য বাবদ আপনার Customer Code খেকে টাকা সমন্বয় করেন

২। আপনার ব্রোকার তারপর তাদের প্রাপ্য কমিশন রেখে বাকী টাকা স্টক এক্সচেন্জের হিসাবে স্থানান্তর করেন এবং আপনার শেয়ার স্টক এক্সচেন্জ থেকে বুঝে নিয়ে আপনার Customer ID তে জমা করেন

৩। যিনি আপনার কাছে শেয়ারটি বিক্রি করেছেন তিনিও কোন এক ব্রোকারের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন, বিক্রেতার ব্রোকার স্টক এক্সচেন্জে শেয়ার জমা করে তাদের প্রাপ্য টাকা বুঝে নেন

৪। তারপর বিক্রেতার ব্রোকার তাদের প্রাপ্য কমিশন রেখে বাকী টাকা বিক্রেতার হিসাবে জমা করেন । সাধারনত এভাবেই সম্পূর্ন লেনদেন প্রক্রিয়া শেষ হয়। আর এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ২/৩ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। যে কারনে একটি শেয়ার ক্রয়ের পর পর সংগে সংগেই আপনি তা বিক্রি করতে পারেননা কিংবা আপনার হিসাবে তত্ক্ষনাত টাকা জমা হয়ে যায় না। বরং ৩/৪ দিন পর আপনার হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা জমা হয়। আর এই প্রক্রিয়া বিভিন্ন গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম সময় লাগে। আসুন দেখি কোন কোন গ্রপের শেয়ার কয় দিন পর আপনার একাউন্টে জমা হবে।

A,B,G, N গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় ৩ দিন। অর্থাৎ ৪র্থ দিন আপনি শেয়ার কিংবা টাকা পাবেন। তখন আপনি আপনার ক্রীত শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন বা বিক্রিত শেয়ারের টাকা তুলতে পারবেন।

Z গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় ৭ দিন। অর্থাৎ ৮ম দিন আপনি শেয়ার কিংবা টাকা পাবেন। তখন আপনি আপনার ক্রীত শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন বা বিক্রিত শেয়ারের টাকা তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগতে পারে z- গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে কেন এত সময়ের প্রয়োজন হয়? কী কী শর্তসাপেক্ষে গ্রুপিং করা হয় তা আমি আগেই বলেছি। দেখে থাকবেন z-গ্রুপ হচ্ছে সবচেয়ে কম কিংবা বিনা লাভ প্রদানকারী কোম্পানীর শেয়ার। এজন্যই এই সব শেয়ার ক্রয়/বিক্রয় নিরুৎসাহিত করার জন্য এই শেযার সেটেলমেন্টর জেন্য সাপ্তাহের মাত্র ১টি দিন বরাদ্দ এবং ৭দিনে এ শেয়ার স্থানান্তর হয়।

Clearing and Settlement-এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল স্পট ট্রেড (Spot trade)। স্পট ট্রেডের ক্ষেত্রে মাত্র ১দিনে A,B,G, N গ্রুপের শেয়ার/টাকা আপনার হিসাবে স্থানান্তর হয় এবং z-গ্রুপের শেয়ার/টাকা ৩দিনে আপনার হিসাবে স্থানান্তর হয়।

তাহলে আসুন দেখি spot trade-কী? অনেকদিন যাবৎ এ ব্যবসা করছেন এমন অনেকেও এ বিষয়টি পরিষ্কার না। যখন কোন কোম্পানী লভ্যাংশ প্রাপ্তির জন্য কোন Record date নির্ধারন করে তথন ঐ নির্দিষ্ট দিনে আপনার হিসাবে ঐ কোম্পানীর শেয়ার থাকলে আপনি লভ্যাংশ পাবেন। কিন্তু ধরুন ১৪ জানুয়ারি Record date নির্ধারন করা হল। সেক্ষেত্রে যদি স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরন করা হয় তাহলে আপনি ১৩তারিখ শেয়ার কিনলেও আপনি লভ্যাংশ পাবেননা। কারন শেয়ার আপনার হিসাবে আসবে ১৭ তারিখে। এই অসুবিধা দূর করার জন্য Record date এর ৩দিন আগে থেকে Priority basis-এ ঐসব শেয়ার Settle করা হয়। এজন্য এগুলো স্পট-এ ট্রেড করা হয়। অর্থাৎ তাৎক্ষনিক settlement। এই শেয়ার গুলো দিন শেষেই স্থানান্তর করা হয়।

DSE-তে Clearing and Settlement -এর অধীনে আপনি কোন শেয়ার বিক্রির পর পরই ঐ শেয়ার বিক্রির টাকা যদিও আপনার হিসাব থেকে ৪দিনের আগে তুলতে পারেননা তবে আপনি সে টাকা দিয়ে ঐ দিন-ই অন্য শেয়ার কিনতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যদি ১০০ বাটা শেয়ার বিক্রি করেন ৩০০টাকা করে অর্থাৎ ৩০০০০টাকার শেয়ার বিক্রি করে তবে আপনি সে দিনই ঐ সমপরিমান টাকার (অর্থাৎ ৩০০০০টাকার অন্য শেয়ার কিনতে পারবেন) । তবে এই সুবিধা কেবল Z-গ্রুপের শেয়ারগুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়। যদিও একই কোম্পানীর শেয়ার বিক্রি করে ঐ দিন-ই ঐ টাকা দিয়ে ঐ একই শেয়ার কিনতে পারার বিধান নেই তারপরও অনেকে এটা করে থাকেন। অবশ্য এক্ষেত্রে ব্রোকারের একাউন্ট থেকে স্টক এক্সচেন্জে টাকা সমন্বয় করা হয় কিংবা অনেক সময় এ ব্যপারটা ঠিক গন্য করা হয়না। DSE-তে সাধারনত ট্রেডিং হয় রবি থেকে বৃহস্পতি সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত।

Circuit Breaker: শেয়ার মূল্যের অস্বাভাবিক ওঠা নামা বা মূল্য কারসাজি প্রতিরোধকল্পে Circuit Breaker (বা মূল্যসীমা) পদ্ধতি চালু আছে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন শেয়ার লেনদেন শুরু হওয়ার পূর্বে ঐ দিন কোন শেয়ার কতটুকু ওঠা নামা করতে পারবে তার সর্বোচ্চ এবং সর্বোনিম্নসীমা দেয়া ঘোষনা করে দেয়া হয়। এক্ষেত্রে সাধারনত নিম্নের পদ্ধতি অনুসরন করা হয়।
A,B, G এবং N গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে মূল্যসীমা নিম্নরূপ-

1. শেয়ারের পুর্বদিনের Closing price ২০০ টাকা পর্যন্ত হলে ২০ শতাংশ তবে ৩৫ টাকার উর্দ্ধে নয়। অর্থাৎ কোন শেয়ারের পূর্বদিনের Closing price যদি ১৮০টাকা হয় তবে ঐদিন শেয়ারটির সর্বোচ্চ মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারবে ২০ শতাংশ বা ৩৬টাকা। কিন্তু ৩৫টাকার বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার অনুমতি না থাকায় এই শেযার মূল্য ৩৫টাক পর্যন্তই কেবল বাড়তে পারবে । অর্থাৎ ঐদিন শেয়ারটির সর্বোচ্চ মূল্য হতে পারবে ২১৫টাকা এবং সর্বোনিম্ন মূল্য হতে পারবে ১৪৫টাকা।

2. তেমনিভাবে ২০১ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ১৭.৫% কিন্তু ৭৫টাকার বেশি নয়

3. ৫০১ হতে ১০০০টাকা পর্যন্ত ১৫% বা ১২৫ টাকার বেশি নয়

4. ১০০০১ হতে ২০০০ পর্যন্ত ১২.৫% বা তবে ২০০টাকার বেশি নয়

5. ২০০১ হতে ৫০০০০টাকা পর্যন্ত ১০% তবে ৩৭৫টাকার বেশি নয়

6. ৫০০১ এর উপরে ৭.৫% তবে ৬০০ টাকার বেশি নয়

উল্লেখ্য য়ে, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানীর ক্ষেত্রে প্রথম ৫দিন মূল্যসীমার নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। এছাড়াও z-গ্রুপের শেয়ার এ নিয়মের আওতাভুক্ত নয়।

Surveillance Department:
DSE-তে লেনদেনের স্বাভাবিকতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে Surveillance Department নামে একটি নিজস্ব বিভাগ রযেছে। Online Surveillance System এর মাধ্যমে DSE-র Surveillance Department লেনদেন চলাকালীন সময় বিভিন্ন সিকিউরিটিজের মূল্য ও লেনদেনের পরিমান নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন করে। কোন শেয়ারের লেনদেনের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করাগেলে সেক্ষেত্রে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। Surveillance Department-এর তৎপরতার ফলে বর্তমানে DSE-তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের লেনদেনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বহুলাংশে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

ডিএসই ২০ (DSE 20 Index)
তালিকাভুক্ত কোম্পানীসমূহের মধ্য হতে পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এবং আরো কিছু বৈশিষ্ঠের ভিত্তিতে সেরা ২০টি কোম্পানী নিয়ে ডিএসই ২০ (DSE 20 Index) গঠিত। এর ফলে বিনিয়োগকারীগন সেরা কোম্পানীগুলোর মূল্যের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারনা পেতে পারে। যে শর্তপূরণ সাপেক্ষে ডিএসই ২০ সূচক গঠিত হয় সেগুলো হল-

1. যে সকল কোম্পানীর বাজার মূলধনের পরিমান ২০কোটি টাকা বা তার উর্দ্ধে

2. নূন্যতম ২০শতাংশ শেয়ার জনসাধারনের হাতে রয়েছে (কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই তা নেই)

3. ক্রমাগত বিগত ৩ বছর যাবত অন্তত ১০শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে

4. ৬ মাসে অন্তত ৯৫% লেনদেন দিবসে শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে (অনেক ক্ষেত্রেই শেয়ার বেচাকেনা হলেও পরিমান খুবই নগন্য)

5. নিয়মিত বার্ষিক সাধারনসভাসহ কোম্পানীর পরিচালনা ব্যবস্থা নূন্যতম মান বজায় রাখছে

এই শর্তাবলী পূরণ করছে এমন কোম্পানীর পরিমান অনেক হয়ে যাওয়ায় এবং শেয়ার বাজারকে আরও ভালভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারার প্রয়োজনে এই সূচককে ডিএসই ২৫-এ উণ্ণীত করা হবে। তার মানে এরপর থেকে এতে ২৫টি কোম্পানী অন্র্তভুক্ত করা হবে।

শেয়ার শ্রেনীবিভাগ/বিভাগীকরন (Stock Classification/Categorization):
DSE-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে A, B, G, N এবং Z এই বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সাধারনভাবে ভাল মন্দ শেয়ার চিনিয়েদেবার জন্য এই বিভাগীকরন করা হয়েছে।

A-Category: নিয়মিত্ বার্ষিক সাধারন সভা করা সহ ১০% বা তার উর্দ্ধে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানীসমূহ এ গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।

B-Category: নিয়মিত্ বার্ষিক সাধারন সভা করা সহ ১০% -এর নীচে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানীসমূহ এ গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।

G-Category: গ্রীন ফিল্ড অর্থাৱ শেয়ার বাজারে আসার পূর্বে উত্পাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শুরু করেনি এমন কোম্পানীসমূহ এই গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত। DSE-র ইতিহাসে এপর্য়ন্ত কেবন লাফার্জ-সুরমা সিমেন্ট-ই এই গ্রুপের অধীনে লিপিবদ্ধ হওয়া একমাত্র কোম্পানী। কিন্তু গত বছর থেকে সম্পূর্ণ উত্পাদন কার্যক্রম শুরু করার পরও কোন লভ্যাংশ দিতে না পারায় Z-গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

N-Category: এই গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত হবার ক্ষেত্রে ভাল/মন্দ ব্যবসায়িক দক্ষতার কোন প্রভাব নেই। সাধারনত কোন শেয়ার DSE-তে লিপিবদ্ধ হওয়ার পর কোন আর্থিক বছর শেষ হওয়ার পূর্বে পর্যন্ত এই গ্রুপে রাখা হয়। আর্থিক বছর শেষ হলে পূর্বোক্ত ব্যবসায়িক দক্ষতার উপর ভিত্তি করে A, B অথবা Z গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।

Z-Category: নিয়মিত বার্ষিক সাধারন সভা করতে ব্যর্থ/লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ কিংবা সর্বশেষ ৬ মাস উত্পাদন বন্ধ থাকলে এই গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।

DSE Index
DSE Index বা সূচক হচ্ছে একটি সাধারণ পরিমাপ। যার মাধ্যমে আমরা শেয়ার বাজারের সার্বিক অবস্থা বুঝতে পারি। বাজারের গতি প্রকৃতি সঠিকভাবে বোঝার জন্য বর্তমানে DSE-তে সার্বিক মূল্যসূচক (DSE All share Price Index), ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক (DSE General Index) এবং ডিএসই ২০ (DSE 20) এ তিন ধরনের সূচক প্রচলিত আছে। তবে বিভিন্ন সেক্টর ভিত্তিক যেমন ব্যাংকিং, টেক্সটাইল, বিদ্যুত ও জ্বালানি, সিমেন্ট, বিনিয়োগ প্রভৃতির ধারনা পাওয়ার জন্য সূচক চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে CSE-তে এই সূচকগুলো এখনি চালু আছে। কিন্তু CSE-তে অনেক শেয়ার খুবই কম বা লেনদেন না হওয়ার কারনে সেক্টর ভিত্তিক সূচকগুলো বাজারের গতি প্রকৃতির যথাযথ ধারনা দিতে ব্যর্থ হয়। আসুন এবার দেখে নেই কোন সূচক কীসের ভিত্তিতে তৈরি।

ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক (DSE General Index)
মিচুয়াল ফান্ড এবং এ এবং বি ক্যাটাগরির সিকিউরিটিজের সমন্বয়ে ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক গঠিত।

সার্বিক মূল্যসূচক (DSE All share Price Index)
মিচুয়াল ফান্ড, ডিবেঞ্চার, বন্ড এবং সকল তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের (শেয়ার) সমন্বয়ে ডিএসই সার্বিক মূল্যসূচক গঠিত।

Judges Panel
বিনিয়োগকারীদের স্বর্থ রক্ষার্থে ব্রোকার/ডিলারের বিরুদ্ধে কোন বিণিয়োগকারীর অভিযোগের নিষ্পত্তিকল্পে ৫ জন অবসর প্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট জাজের সমন্বয়ে জাজেস প্যানেল গঠন করা হয়েছে। যারা সরাসরি বিণিয়োগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তিকল্পে কাজ করেন।

nvestor’s Protection Fund
বিনিয়োগকারীদের স্বর্থে DSE Investors Protection Fund গঠন করা হয়েছে। যদি কোন ব্রোকার বা ডিলার ফার্ম বন্ধ হয়ে যায়/লিকুইডেশনে চলে যায়/দেউলিয়া ঘোষিত হয় তখন ঐ ফান্ড হতে একটি নির্ধারিত পরিমান অর্থ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।

Listed Securities
লিস্টেড সিকিউরিটিজ বলতে ঐসব শেয়ার/বন্ড বা ডিবেন্চার কে বোঝায় যেগুলো DSE/CSE-তে লেনদেনের জন্য লিপিবদ্ধ। (CSE= Chittagong Stock Exchange) যেমন – রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস-এ কয়েক হাজার কোম্পানীর নাম লিপিবদ্ধ আছে। কিন্তু সেগুলো DSE/CSE-তে লিপিবদ্ধ না থাকার কারনে সেগুলোর শেয়ারের লেনাদেন হয়না। যেমন- অটবি লিমিটেড (Furniture Company) । কিন্তু বাটা সু কোম্পানীর শেয়ার লেনাদেন হয। কারন সেটি রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস-এ লিপিবদ্ধ এবং DSE/CSE-তেও লিপিবদ্ধ।

Share Holder
কোন কোম্পানীর শেয়ারের মালিকদের বলা হয় শেয়ার হোল্ডার। যেমন: আপনি যাদি বাটা সু কোম্পানীর ১০০টি শেয়ার ক্রয় করেন তবে আপনি বাটা সু কোম্পানীর একজন শেয়ার হোল্ডার বা আংশিক মালিক।

Member of Stock Exchange
DSE-তে সর্বমোট ২৪০+ সদস্য আছেন। এদের মধ্যে ১৮০+ জন DSE-তে সিকিউরিটিজ লেনদেন করার জন্য SEC থেকে Stock broker/Dealer হিসাবে অনুমোদন প্রপ্ত।

Registar of Joint Stock Companies
কোন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি প্রথম আইনগত স্বীকৃতি হলো নিবন্ধন সনদপত্র। এই নিবন্ধন সনদপত্র প্রদানের জন্য গঠিত হয়েছে রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস। যারা প্রথমে কোম্পানীটি গঠন করেন মানে উদ্যোক্তাদের এই নিবন্ধনের কাজটি করতে হয়। নিবন্ধন সনদপত্র পাওয়ার পরই কোন কোম্পানী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তির জন্য আবেদন করার সময় প্রস্তাবিত কোম্পানীর মেমরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস আব এসোসিয়েশন জমা দিতে হয়। এই মেমরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস আব এসোসিয়েশন তৈরির জন্য পেশাদার ইস্যু ব্যবস্থাপক (Issue Manager/Investment Banker) অথাবা আইনজীবির সহায়তা নেয়া যায়্।

Central Depository Syestem (CDS)
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সিস্টেম (CDS) এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে সিকিউরিটিজ সমূহ ইলেক্ট্রনিক ফর্মে সংরক্ষন ও লেনদেন করা যায়। CDBL কে ব্যাংকের সাথে তুলনা করা যায়। ব্যাংক যেভাবে জমাকারীর টাকার হিসাব রাখে CDBL সেভাবে বিনিয়োগকারীদের সিকিউরিটিজ ইলেক্ট্রনিক ফর্মে সংরক্ষন করে। CDS এর সুবিধা গুলো হচ্ছে-

1. অনুপযুক্ত কাগুজে সার্টিফিকেট হস্তান্তর রোধ

2. তাৎক্ষনিক শেয়ার হস্তান্তর (যদিও আমাদের দেশে ট্রেডিং সিস্টেম এথনও সেই পর্যায়ে উণ্নীত হয়নি)

3. কাগজের বাড়তি ঝামেলা এডানো

4. কাগজের সার্টিফেকেটর বাডতি ঝামেলা এডানো যেমন হারিয়ে যাওয়া, চুরি হওয়া, ক্ষতিসাধন বা জালিয়াতি

CDS সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন http://www.cdbl.com.bd

সিকিউরিটিজ্ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC)
১৯৮৩ সালের ৮ জুন The Securities and Exchange Comission Act 1993-এর অধীনে এই প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি। SEC-র প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইন প্রনয়ন ও তা বাস্তবায়ন। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের অধীনে এপ্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। (http://www.secbd.org)

স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং সিস্টেম
১৯৯৮ সালের ১০ আগস্ট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) Local Area Network (LAN) এবং Wide Area Network (WAN) এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় লেনদেন শুরু করে। ২১ আগস্ট ২০০৫ সালে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার আরো আধুনিকায়ন করে এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ৫০,০০০ ট্রেড থেকে ১লক্ষ ট্রেড এবং ১৫০০ কম্পিউটার (work station) থেকে ৩০০০ কম্পিউটারে উন্নিত করা হয়। সম্প্রতি এই ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করে দ্বিগুন করা হয়েছে। (৩লক্ষ ট্রেড)

DSE অন্যতম সেরা কম্পিউটার প্রস্তুকারী হিউলেট প্যাকার্ড (HP) থেকে Main Frame Server (HP Non Stop S7802) ক্রয় করেছে। যা পৃথিবীর বড় বড় স্টক এক্সচেঞ্জ (NYSE, BSE, NASDAQ) এ ব্যবহৃত হচ্ছে। Main Frame Server টি সার্বক্ষনিক চালু খেকে ট্রেডিঙের সময় নিরবিচ্ছিন্ন ট্রেডের সুবিধা প্রদান করে। DSE তার সদস্যদের ট্রেডিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভারতের বিখ্যাত সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান Scandat Solution Ltd থেকে aplication software (TESA) ক্রয় করেছে।

DSE তার Automated Clearing and Settlement ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ Web Based Application এ উন্নত করেছে। যার ফলে Settlement কার্যক্রম আরও ত্বরান্নিত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আরো অধিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে DSE-র Website (http://www.dsebd.org) কে আরো তথ্যবহুল করা হয়েছে। Website টি ট্রেড চলাকালীন সময়ে প্রতি মুহুর্তে Real Time ট্রেডিং তথ্য সহ অন্যান্য তথ্যাদি আপ-ডেট করে থাকে যা DSE-র Automated trading systme-র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

DSE তার নিজস্ব ভবন ও নিকটবর্তী ২টি ভবনে LAN Connectivity প্রতিস্থাপন করে প্রায় ১৫০টিরও বেশি ব্রোকার সার্ভারের আওতায় প্রায় আটশতাধিক কম্পিউটারের মাধ্যমে ট্রেডিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাছাডাও Radio Link/Fiber Optics/VSAT/ADSL Connectivity-এর মাধ্যমে প্রায সকল উল্লেখযোগ্য শহরে ট্রেডিং সুবিধা দিচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ দেশের প্রধান পুজিঁবাজার। এখানে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজ (শেয়ার ডিবেঞ্চার, মিচুয়াল ফান্ড এবং বন্ড) লেনদেন হয়। বর্তমানে এ বাজারে সাড়ে তিনশরও বেশি সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়। যার মূল্যমান ১০০০বিলিয়নেরও বেশি এবং দেশের জিডিপির প্রায় ১০শতাংশ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল ইস্ট পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ এসোসিয়েশন লি: রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৫৬ সালে এর আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয়। ১৯৬২ সালের ২৩ জুন এর নাম পরিবর্তন করে হয় ইস্ট পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ লি:। ১৯৬৪ সালের ১৩ মে পুণরায় এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময় এর লেনদেন স্থগিত থাকে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ১৯৭৬ সালের ১০ আগস্ট পুনরায় এর লেনদেন শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ আগস্ট ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) Local Area Network (LAN) এবং Wide Area Network (WAN) এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় লেনদেন শুরু করে। ২০০৪ সালের ২৪ জানুয়ারী Central Depository System (CDS) চালু হয়। গত ৫০ বছর ধরে এটি ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের বিনিযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ২০০৫ সালের ১ জানুযারি DSE তে সরকারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। ২০০৫ সালের ২১ আগস্ট অটোমেটেড আপগ্রেডেড ট্রেডিং সিস্টেমের মাধ্যমে DSE চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, কুমিল্ল, নারায়নগঞ্জ এবং উত্তরায় ব্রোকার ট্রেডিং শুরু করে। এরপর থেকে দেশের আরো অনেক শহরে এর লেনদেনের বিস্তৃতি লাভ করেছে। খুব শীঘ্রই আরো অনেক নতুন এলাকা DSE-র লেনদেনের আওতায় আসবে।

ঢাকার নিকুঞ্জে DSE-র নিজস্ব ৪ বিঘা জমির উপর বহুতল বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মানের কাজ চলছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৭ প্রধান উপদেষ্টা এর ফলক উন্মোচন করেন।

Ref: ictgeneration, sharebiz blogspot, shareedu blogspot, dse, sec,

যেভাবে সফল হবেন শেয়ার বাজারে

বিনিয়োগের জন্যে শেয়ার বাজারকে একটি ঝুকিপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনেকে শেয়ার বাজার নামটি শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে যান। মনে করেন শেয়ার বাজার হলো সর্বস্ব লুটে নেয়ার ফাঁদ। কিন্তু বাস্তবে তাদের এই ধারণাটি সত্যি নয়। শেয়ার বাজার মূলত একটি লাভজনক বিনিয়োগ খাত, যদি আপনি সঠিক নিয়মে বিনিয়োগ করতে জানেন। কিছু নিয়ম রয়েছে যা অনুসরণ করলে এই খাতে আপনার সফলতা অর্জন করা অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

সবসময় আপডেট থাকুনঃ

শেয়ার বাজারে বিফলতার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ এই খাতটি সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের অজ্ঞতা। বিনিয়োগের পূর্বে যে সকল বিষয়ে আপনার ধারণা থাকা উচিত তা হলোঃimages

১) দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা

২) দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশিলতা

৩) শেয়ার বাজারের বর্তমান অবস্থা

৪) বিগত বছরগুলোতে শেয়ার বাজারের অবস্থা

৫) যে সেক্টরে বিনিয়োগ করতে চান, সে সেক্টরের বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা

৬) বিভিন্ন ক্যটাগরির স্টক সম্পর্কে ধারণা

মনে রাখতে হবে, আপনি যখন শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবেন, তখন আপনিও হয়ে উঠবেন এই খাতের একটি অংশ। তাই এই খাত সম্পর্কে ধারণা থাকাটা আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশের দুটো স্টক এক্সচেঞ্জে প্রায় ৭ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারী রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আপডেটেড থাকার জন্য নিয়মিত চোখ রাখবেন এই দুটো স্টক এক্সচেঞ্জের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে।

পোর্ট ফোলিও তৈরী করুনঃ
Portfolio Investment এর মাধ্যমে সহজেই আপনার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন। যেমনঃ আপনি যদি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী হোন তবে, ১ লক্ষ টাকা দিয়ে ১টি কোম্পানির শেয়ার না কিনে, সে টাকা দিয়ে বরং কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনুন। এতে যে কোন একটি কোম্পানির শেয়ারের দর-পতন ঘটলেও আপনি খুব একটা ক্ষতির মুখোমুখি হবেন না। সবচেয়ে ভাল হয় ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মাঝে পোর্টফোলিও গড়ে তুললে। যদি আপনার হাতে বিনিয়োগ করার মতো যথেষ্ট অর্থ থাকে, তবে কমপক্ষে ৩০টি পোর্টফোলিও গড়ে তোলার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে থাকেন শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা।

দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করুণঃ
শেয়ার কেনার পর তা কমপক্ষে তিন বছর বা আরো বেশি সময়ের জন্য হাতে রাখুন। অনেক সময় হয়তো অল্প সময়ের মধ্যেই তা বিক্রী করে ফেলাটা লাভজনক মনে হতে পারে। তবুও ধৈর্য্য ধরুন, অপেক্ষা করুন সবচেয়ে মোক্ষম সময়টির জন্যে। বিশ্বের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী ওয়ার্নার বাফেট এটাকেই সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ কৌশল বলে মনে করেন।

শেয়ার কেনা-বেচা সংক্রান্ত কিছু টিপ্‌সঃ
১) ভবিষ্যতে একটি শেয়ারের দাম কতো দাঁড়াবে সেটা আগে থেকে অনুমাণ করার চেষ্টা করুন। যেমন ধরা যাক, একটা কোম্পানির স্টক প্রাইজ প্রথম ৪ দিন ১% করে নেমে আসে, ৫ম দিন আবার ১০% বেড়ে যায়। এখানে আপনি প্রথম ৪ দিন শেয়ার কিনে ৫ম দিন বিক্রি করে নিশ্চিত লাভ করতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশের বাজার weak form হওয়ায় এই পদ্ধতি আপনাকে খুব একটা সুবিধা দিবে না। এখানে স্টক প্রাইজ নির্ধারিত হবে ডিমান্ড-সাপ্লাই নীতি অনুসারে। এখানে সবাই চাইবে প্রথম ৪ দিন শেয়ার কিনতে আর ৫ম দিনে তা বিক্রি করতে। ফলে প্রথম ৪ দিনে স্টক এর ডিমান্ড বেড়ে যাবে, ফলে দামও বেড়ে যাবে। যদিও বাস্তবে শেয়ার মার্কেটের খবরা-খবর সকল বিনিয়োগকারীদের নিকট পৌছাতে একটু সময় লাগে। আর আপনাকে ঠিক সেই সময়টাকেই কাজে লাগাতে হবে।

২) যদি আপনি লসে থাকেন, তবুও কেনা বেচা বন্ধ করে রাখবেন না। প্রতিদিনই আপনার শেয়ারের দাম ওঠা নামা করছে। আপনি চেষ্টা করুন দিনের সর্বনিম্ন দামে কিনে আপনার আগের শেয়ার সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করে দেওয়ার। যাকে নেটিং বা নিটিং বলে।

৩) অনভিজ্ঞ লোকজনের পরামর্শ নিবেন না। সবসময় গুজব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।

৪) অধিক লাভের আশায় ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না।

৫) মনোবল হারাবেন না। আপনি যদি বুঝে বিনিয়োগ থাকেন তবে আপনার দুঃশ্চিন্তার কিছুই নেই। বাজার দর যতই কমুক সেটা সাময়িক। কোম্পানী আপনাকে বছর শেষে মুনাফা ঠিকই দেবে। হয়তো আপনি অধিক লাভ করতে পারবেন না কিন্তু আপনার টাকা হারিয়ে যাবেনা।

৬) শপিং করতে গেলে যেমন আপনি সারা বাজার ঘুরে ভাল জিনিসটি কেনেন, তেমনি শেয়ার কেনার সময়েও একই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।

বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ শেয়ার ব্যবসা না বুঝেই বিনিয়োগ করে বসে, আর মাঝখান থেকে লাভবান হয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কিন্তু আপনি যদি এই কয়েকটা নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন, তবে আপনিও হয়ে উঠতে পারবেন এই খাতের একজন দক্ষ বিনিয়োগকারী।



মন্তব্য চালু নেই