যেভাবে প্রাণে বাঁচে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ৩০০ আরোহী (ভিডিও)

সমন্বিত উদ্ধার তৎপরতার ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ইকে৫২১-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩০০ আরোহী নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন। উদ্ধার তৎপরতা চালানোর সময় দেশটির ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী নিহত হলেও কোনো যাত্রী হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পাইলটের দক্ষতা ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় যাত্রীরা নিরাপদে বিমান থেকে বেরিয়ে আসেন। আগুনে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ওই বিমানের ৩৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ১টার দিকে ১৮ ক্রুসহ ৩০০ আরোহী নিয়ে আমিরাত এয়ারলাইন্সের ইকে-৫২১ ফ্লাইটটি দুবাই বিমানবন্দরে অবতরণের পর হঠাৎ বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। ভারতের থিরুভানানথাপুরাম বিমানবন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করেছিল বিমানটি।

উদ্ধার তৎপরতা ও যাত্রীদের আতঙ্ক কাটাতে বুধবার স্থানীয় সময় পৌনে ১টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের উড্ডয়ন ও অবতরণ স্থগিত করা হয়।

যেভাবে চলে উদ্ধার তৎপরতা

বিমানে অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও কোনো আরোহী কিংবা ক্রুর প্রাণহানি ঘটেনি। তবে উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় দগ্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। ওই বিমানের যাত্রী সুশান আরব আমিরাতের জাতীয় দৈনিক খালিজ টাইমসকে বলেন, বিমানটি রানওয়ে ছোঁয়ার কিছু আগে সমস্যা শুরু হয়। অবতরণের পর বিমানটিতে প্রচুর কম্পন অনুভূত হয়। অবতরণের পর বিমানটি হেলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিমানের ভেতর কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়।

তিনি বলেন, যাত্রীরা আতঙ্কে ছিলেন। তবে ক্রুরা অত্যন্ত ভালো ছিলেন। আমাদের বাঁচানোর জন্য তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল। রাজারাম ভাইকুন্তাম নামের এক ব্যক্তি বিমানবন্দরে পরিবারের সদস্যদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। স্ত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, তার স্ত্রী ও দুই সন্তান বিমান অবতরণের পর নিরাপদে বেরিয়ে এসেছে। তারা এমারজেন্সি এক্সিটের পাশেই ছিল। বিমান অবতরণের ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে প্রথমে দুই শিশু বেরিয়ে আসে।

বিমানের ৩০০ আরোহীর দুজন অরুণ কৃষ্ণান ও আভিলাস পি। তারা অলৌকিকভাবে বিমান থেকে বেরিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। বিমানের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বলেন, অবতরণের পর প্রথমে দেখলাম, বিমানের ভেতরে ধোঁয়ার কুণ্ডলি ধেয়ে আসছে। ক্রুরা আমাদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু লোকজন চিৎকার ও কান্নাকাটি করেছিল; বিশেষ করে শিশুরা। তবে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে পুরো বিমান যাত্রীশূন্য হয়। আতঙ্ক সত্ত্বেও ক্রুরা যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।

আমিরাত এয়ারলাইন্সের বিমানে বুধবারের ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৩ যাত্রী সামান্য আহত হয়েছেন। এদের সবাইকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এমিরেটস এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যান শেখ আহমেদ বিন সাঈদ আল মাকতুম বিমান দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী জসিম ইসসা মোহাম্মদ হাসানের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আমিরাতের সরকারি গণমাধ্যম বলছে, বিমানের পাইলট ও ফার্স্ট অফিসারের ৭ হাজার ঘণ্টা বিমান পরিচালনার অভিজ্ঞতা ছিল।

ভিভিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

সূত্র : খালিজ টাইমস, গালফ নিউজ।



মন্তব্য চালু নেই