যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন : হেরে যাওয়ার পর পরাজিতরা কি করেন?

হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে হেরে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। এই পরাজয় তিনি ভাবতেও পারেন নি। কিন্তু তারপর? হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, তিনি একটি বই হাতে নিয়ে ঘরেই থেকে যেতে চেয়েছিলেন। দেখা যাক, এর আগের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ডাকসাইটে সব প্রার্থীরা নির্বাচনের পর কি করেছিলেন…

মিট রমনি
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক মিট রমনি। তিনি পরাজিত হন ডেমোক্র্যাট বারাক ওবামার কাছে।
নির্বাচনের পর প্রথম দিকে তিনি খুব একটা উচ্চবাচ্য করেননি। কিছুটা চুপচাপ ছিলেন এবং পরে তিনি তার ব্যবসায় ফিরে যান। ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালে যোগ দান করেন একজন পরিচালক হিসেবে।
তবে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি আবার রাজনীতিতে সরব হয়ে উঠেন। কাজ করেন রিপাবলিকান দলের ক্যাম্পেইনার এবং অর্থ সংগ্রাহক হিসেবে।

জন কেরি
রিপাবলিকান দলের প্রার্থী জর্জ ডাব্লিউ বুশের কাছে খুব সামান্য ব্যবধানে ২০০৪ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তিনি সেনেটর হিসেবেই থেকে যান।
পরে তিনি ২০১৩ সালে হিলারি ক্লিনটনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

অ্যাল গোর
প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটেনর সময় তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০০ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান জর্জ ডাব্লিউ বুশের কাছে। সেসময় ফ্লোরিডার ভোট আদালতের আদেশে পুনরায় গণনা করতে হয়েছিলো। এই সিদ্ধান্তে ফলে জর্জ বুশ ফ্লোরিডাতে মাত্র ৫৩৭ ভোটে জয়লাভ করেন আর সারাদেশে মাত্র একটি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বেশি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত পান।
পরে তিনি পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোর আন্দোলনে তার ভূমিকা উল্লেখ করার মতো।
এবিষয়ে তিনি একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। ২০০৭ সালে পান নোবেল পুরস্কার।

বব ডোল
বিল ক্লিনটনের কাছে বব ডোল হেরে যান ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে।
পরে তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি আইন প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করেন। পরে লেখালেখি এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠান নিয়েও তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
ভায়াগ্রা, ভিসা, ডানকিন ডোনাট এবং পেপসি কোলার মতো পণ্যের বানিজ্যে একজন মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ল্যারি কিং লাইভ, ডেইলি শো, সিক্সটি মিনিটের মতো টিভি অনুষ্ঠানে তিনি প্রায়ই হাজির হতেন। তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। তার একটি বই মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মুখ থেকে শোনা কৌতুকের ওপর।

হেনরি ক্লে (১৭৭৭-১৮৫২)
তিনি খুব সহজেই হাল ছেড়ে দেননি। তিনি একরকম পেশাদার প্রার্থী হয়ে উঠেছিলেন। তিনবার নির্বাচন করে তিনবারই হেরেছেন। শুধু তািই নয়, নিজের দল থেকেও তিনি দুবার মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন।
তার স্বপ্ন কখনোই পূরণ হয়নি। অর্থাৎ তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন নি। তবে হাউজের স্পিকার এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অ্যারন বার (১৭৫৬-১৮৩৬)
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচে বর্নিল এক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। টমাস জেফারসনের কাছে তিনি হেরেছেন ১৮০০ সালের নির্বাচনে।
তবে, সেসময়, যিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেতেন তিনি নির্বাচিত হতেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাই পরের চার বছর তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়- তিনি আরেকটি প্রজাতন্ত্র গঠনের চেষ্টা করছিলেন। তার বিচার হয়। তিনি ইউরোপে পালিয়ে যান। পরে ফিরে যান নিউ ইয়র্কের আইনি পেশায়।



মন্তব্য চালু নেই