ময়মনসিংহে অভিনব কায়দায় মোড়ক পাল্টিয়ে নকল ঔষধ ব্যবসা!

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অভিনব কায়দায় মোড়ক পাল্টিয়ে নকল ঔষধ জালিয়াতির খবর পাওয়া গেছে। মোড়ক পাল্টালেই বেনামি থেকে হয়ে যায় নামি কোম্পানির ওষুধ। স্কয়ার কোম্পানির ওষুধের দাম কমিয়ে কম মূল্যে বিক্রি করছে একটি চক্র। বিভিন্ন নামি-দামি ওষুধ কোম্পানির মোড়ক নকল করে বিভিন্ন ফার্মেসিতে বিক্রি করেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের জাটিয়া ইউনিয়নের কুমারুলী গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে রাসেল মিয়া (৩০)। তিনি গত ৭ বছর ধরে বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের লেবেল লাগিয়ে বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। পুলিশ রাসেলের নকল ওষুধের কারখানায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল ওষুধসহ আটক করেন। পরে থানায় এনে অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাটিয়া ইউনিয়নের কুমারুলী গ্রামের রাসেল মিয়া এক ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি ও ওষুধ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করেন। পরে চাকরি ছেড়ে তিনি নিজের বাড়িতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ওষুধের লেবেল লাগিয়ে ভেজাল ওষুধ বিক্রি শুরু করেন। গত ৭ বছর ধরে নিজ বাড়িতে বসেই চালাচ্ছেন রাসেল ভেজাল ওষুধের ব্যবসা। এতে ওষুধ খেয়ে অনেক লোক অসুস্থ হয়েছেন।
যেভাবে মোড়ক পাল্টে নকল ওষুধে তৈরি করে রাসেল:
বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির অসাধু কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কমমূল্যে বিভিন্ন ওষুধ রাসেল কেনেন। ঈশ্বরগঞ্জে এক ছাপাখানা থেকে স্কয়ার ও রাসা ফার্মাসিটিক্যালসহ বিভিন্ন কোম্পানির মোড়ক তৈরি করে কমমূল্যের ওইসব ওষুধের গায়ে লাগিয়ে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। ওই ছাপাখানায় স্কয়ার কোম্পানির ফিলওয়েল গোল্ড, ক্যালবো ডি ও রাসা ফার্মাসিটিক্যালের সুপারভিট গোল্ড নামে ভিটামিন ওষুধের মোড়ক ছাপানো হয়।
লক্ষীগঞ্জ বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী রবি মিয়া জানান, রাসেল ও মোশারফ নামে দুই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে মোড়ক পাল্টে ভেজাল ওষুধ তাদের কাছে বিক্রি করে আসছে। এসব ওষুধ খেয়ে রোগীদের কোনো উন্নতি হয় না। আর আসল ওষুধের দামেরও পার্থক্য রয়েছে বিশাল। ফিলওয়েল গোল্ড ওষুধের দাম ১৮০ টাকা হলেও তাদের কাছে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করা হয় মাত্র ৩০ টাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাসেলের প্রতিবেশী জানান, পুলিশ রাতে রাসেলে ওষুধ কারখানায় এসে দুই বস্তা ভেজাল ওষুধসহ তাকে আটক করে। পরে তাকে গভীর রাতে ছেড়ে দেয়া হয়।
অভিযুক্ত রাসেল মিয়া জানান, বিভিন্ন কোম্পনির ওষুধ তিনি বিক্রি করেন। তবে তার সবগুলো আসল, নকল নয়। তাই পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মাসুদ জামেলি জানান, ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রি করা হয় এমন খবরে কিছু ওষুধসহ রাসেল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ভেজাল ওষুধ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি এস আলম জানান, ভেজাল ওষুধসহ কাউকে আটক করা হয়েছে বলে তার জানা নেই।


মন্তব্য চালু নেই