ম্যানেজারকে পুড়িয়ে হত্যায় মারুতির ৩১ শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত
মারুতির কারখানায় হামলা এবং ম্যানেজারকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ৩১ শ্রমিককে দোষী সাব্যস্ত করেছে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের একটি আদালত। দোষীরা প্রত্যেকেই মানেসরের মারুতি-সুজুকি প্ল্যান্টের কর্মী। দিল্লির প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ওই প্ল্যান্টে ২০১২ সালে এক দল শ্রমিকের হাতে ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন সংস্থাটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
কনফারেন্স রুমের মধ্যে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার অবনীশ কুমার দেবের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখানেই মৃত্যু হয়েছিল তার। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকা তাণ্ডবে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অন্তত ৫০ কর্মকর্তা আহত হয়েছিলেন। ঘটনার চার বছর পর গুরুগ্রামের আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেছে।
মারুতি সংস্থা প্রতি বছর যে পরিমাণ গাড়ি তৈরি করে, তার এক তৃতীয়াংশই তৈরি হয় মানেসরের প্ল্যান্টে। ২০১২ সালের বেনজির গোলমালের পর সেই মানেসর প্ল্যান্ট মাস খানেকের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল মারুতি কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগকে ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত হয়েছিল। ব্যবস্থাপনা পরিষদের অভিযোগ ছিল, যে কোনো আলোচনার সময়ই শ্রমিক ইউনিয়ন সংস্থাটির পদস্থ কর্মকর্তাদের আক্রমণ করে।
পরিস্থিতি শৃঙ্খলাভঙ্গের পর্যায়ে যাচ্ছিল বলে মনে করা হয়েছিল। তাই কঠোর পদক্ষেপের কথা ভাবা হয়েছিল। সে সব নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মানেসর প্ল্যান্টে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। সেই অসন্তোষই শেষ দিনে তাণ্ডবের চেহারা নেয়।
লোহার রড এবং নির্মিয়মান গাড়ির দরজার প্যানেল নিয়ে হামলা চালান শ্রমিকরা। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজারকে পুড়িয়ে মারা হয়। সুপারভাইজার এবং অন্য পদস্থ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে হামলা চালানো হয়। পুরো কারখানা চত্বরজুড়ে ভাঙচুর চলে এবং জায়গায় জায়গায় আগুনও লাগিয়ে দেয়া হয়। ১২শ পুলিশ মোতায়েন করে কারখানা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সংঘর্ষে ৯ পুলিশ আহত হন। ব্যবস্থাপনার ৫০ কর্মকর্তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের অধিকাংশই রক্তাক্ত অথবা অচেতন অবস্থায় ছিলেন।
অপরদিকে, শ্রমিকদের দাবি ছিল, ব্যবস্থাপনা বিভাগের লোকজন প্ল্যান্টের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছিল। সেখান থেকেই নাকি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রায় দেড়শ শ্রমিককে অভিযুক্ত করা হয়। শুক্রবার আদালত অভিযুক্তদের মধ্যে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ম্যানেজমেন্টের উপর হামলা, সম্পত্তি নষ্ট এবং ম্যানেজারকে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই