মেট্রোরেল ও বিআরটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন

বহুল আলোচিত মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬) ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে রবিবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, মেট্রোরেলের ডিপো রাজধানীর উত্তরা আর বিআরটি’র ডিপো এলাকা গাজীপুরে।

ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের রুট হবে উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।

অপরদিকে গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত হবে বিআরটির রুট।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে। ২০২০ সালে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের সম্পূর্ণ অংশের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে ৩৮ মিনিট।

মেট্রোরেল প্রকল্পটি ৮টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে প্যাকেজ-১ এর (ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়ন) ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬টি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান কাজ শেষ হয়েছে।

মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য হবে ২০ কিলোমিটার। ব্যয় হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্পে জাইকা প্রকল্প সহায়তা দিচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মেট্রোরেলের রুট হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড (উপর দিয়ে)। থাকবে ১৬টি স্টেশন। প্রতি ঘণ্টায় উভয়দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে এ রুটে।

মেট্রোরেলের রুট হবে উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে পল্লবী, রোকেয়া স্মরণী পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ী হয়ে ফার্মগেট, হোটেল সোনারগাঁ, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।

মেট্রোরেলের স্টেশনগুলো হবে- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় স্মরণী, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল।

বিআরটি চারটি প্যাকেজের আওতায় সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যে দুটি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। প্যাকেজ-৪ এর আওতায় ডিপো নির্মাণ কাজ চলছে। ২০১৮ এর ডিসেম্বরে বিআরটি চালু হবে বলেও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

বিআরটি প্রকল্পটি গাজীপুর টার্মিনাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। বিআরটি রুটে থাকবে ২৫টি স্টেশন, নির্মাণ করা হবে ৬টি ফ্লাইওভার।

বিআরটি’র মাধ্যমে গাজীপুর থেকে এয়ারপোর্ট আসতে সময় লাগবে ৫০ মিনিট।

উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার থাকবে এলিভেটেড (উপর দিয়ে) বিআরটি লেন। ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতল বা এট গ্রেড। ১৮ মিটার দীর্ঘ ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচল করবে এ পথে। বাসগুলোয় ভাড়া আদায়ে থাকবে ইলেক্ট্রনিক স্মার্ট কার্ড।

বিআরটি প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা ১ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। সরকারের পাশাপাশি প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাসিলিটি ফান্ড অর্থায়ন করছে।

বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) হচ্ছে সড়কের নির্দিষ্ট লেনে দ্রুতগতির বাস চলাচল অবকাঠামো স্থাপন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সংরক্ষিত আলাদা লেনের মাধ্যমে উভয়দিকে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পারাপার সম্ভব হবে। প্রতি ২ থেকে ৫ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে।



মন্তব্য চালু নেই