মুষ্টিযুদ্ধ খেলতে গিয়ে কিশোর বন্ধুর মৃত্যু, অতঃপর

স্রেফ মজা করতে গিয়ে বন্ধুকে মেরেই ফেলল, অতঃপর গল্পো ফাঁদা হলো দুর্ঘটনায় মৃত্যুর। না, তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে গ্রেফতার হতে হয়েছে কিশোর তিন বন্ধুকে। ঘটনাটি ভারতের হায়দরাবাদের।

মজার ছলে টিভি পর্দায় দেখা মুষ্টিযুদ্ধ (ডব্লিউ ডব্লিউ ই) খেলতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছিল কিশোর বন্ধুটির। বাকিরা আসল ঘটনাটি চেপে গিয়েছিল বন্ধুর পরিবারের কাছে। শুধু তাই নয়, একে দুর্ঘটনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু নিহত কিশোরের বাবার সন্দেহ হয় যে, এর মধ্যে দুর্ঘটনার কোনো ব্যাপারই নেই। শেষ পর্যন্ত বাবার সন্দেহই সত্যি হয়।

ঘটনাটি পরিষ্কার হয় ঘটনার ঠিক এক সপ্তাহ পর। কিশোর বন্ধুটির মৃত্যু হয় গত রোববার, আর পুলিশের হাতে একটি ভিডিও আসায় তা প্রকাশ্যে আসে এই রোববার। অর্থাৎ গতকাল।

ঘটনাটি এ রকম- পুরোনো হায়দরাবাদের পাঞ্জেশার একটি রাস্তায় মুষ্টিযুদ্ধের আয়োজন করে জনা পনেরো কিশোর। তাদের মধ্যে বাজি ধরাও হয়েছিল। কিন্তু তার জেরে এক বন্ধু যে প্রাণ হারাতে পারে, ভাবতে পারেনি কেউই। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নাবিল আহমেদ নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই কিশোরের সঙ্গে ঘুষোঘুষি চলছে অন্যজনের। মাথায় পর পর ঘুষি মারার পরেই লুটিয়ে পড়ে সে। হতভম্ব হয়ে যায় বাকিরা।

তারপর নাবিলকে নিয়ে মোটরবাইকে তারা রওনা দেয় হাসপাতালে। ছেলেটি পথেই মারা যায়। তখন দলটি ঠিক করে, বিষয়টিকে মোটরবাইক-দুর্ঘটনা বলে সাজানো হবে। বলা হবে নাবিল বাইক থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছে। সেইমতো ঘটনা সাজিয়ে খবর দেওয়া হয় পরিবারকে। কিন্তু দলটি জানত না প্রকাশ্যে মুষ্টিযুদ্ধের সেই দৃশ্য উঠেছে মোবাইল ক্যামেরায়। হাত ঘুরে সেটা পুলিশের কাছে পৌঁছে যাবে, তা-ও ভাবেনি তারা।

নাবিলের পরিবার দুর্ঘটনাকে সত্যি ধরে পরের দিন অর্থাৎ সোমবার মৃত ছেলের শেষকৃত্যও করে। নাবিলের বাবা তখন শহরে ছিলেন না। তিনি দুবাইয়ে কর্মরত। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ফেরেন। ঘটনা শুনে তার সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে অভিযোগ করেন। তারপরই নাবিলের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একজন ঘটনার কথা স্বীকারও করে। পুলিশ ছেলেটি-সহ আরো দুজনকে হেফাজতে নিয়েছে। কবর থেকে আজ নাবিলের দেহ তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নাবিলের বাবা-মা।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা



মন্তব্য চালু নেই