মুদগলের ডাকে আইপিএলের তদন্ত কমিটিতে এ বার সৌরভ

দিলীপ মজুমদার (কলকাতা): চোদ্দো বছর আগে গড়াপেটা কেলেঙ্কারির ঝড়ের মধ্যে নেতৃত্বের দায়িত্ব পেয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে আগলে রেখেছিলেন। সন্দেহ আর অবিশ্বাসের অন্ধগলি থেকে বেরিয়ে স্বপ্নের উড়ান দিয়েছিল তাঁর বাহিনী। চোদ্দো বছর পরেও দেশ থেকে সেই গড়াপেটার ভাইরাস তাড়ানোর অভিযানে সামিল হতে দ্বিধা করলেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

আইপিএল স্পট ফিক্সিং কাণ্ডের তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত মুকুল মুদগল কমিটিতে যোগ দিলেন দেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক। দেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কমুক্ত করার তাগিদে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মুদগলের অনুরোধ ফেলতে পারলেন না তিনি।

গত ৩০ এপ্রিল আনন্দবাজারেই প্রথম সৌরভের মুদগল কমিটিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। শনি ও রবিবার কমিটির বৈঠকের পর বিচারপতি মুদগল জানিয়ে দেন, সৌরভ দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। রবিবার বিকেলে মুম্বই থেকে তিনি বলেন, “সৌরভের সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। এ বার একটা তারিখ ঠিক করে ওঁকে আমরা বৈঠকে আসার অনুরোধ করব।” সন্ধ্যায় সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বলেন, “বিচারপতি মুদগলের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। উনি যে দায়িত্ব দিতে চান, তা নিতে আমি রাজি। তবে এখন এই নিয়ে এর বেশি কিছু বলতে চাই না। ঠিক সময়ে যা বলার বলব।”

গত ১৬ মে সর্বোচ্চ আদালত বিচারপতি মুদগলকে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির তদন্তভার নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছিল স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারের সাহায্য নেওয়ার। বিচারপতি মুদগলের পছন্দ ছিলেন মূলত দু’জন মোহিন্দর অমরনাথ এবং সৌরভ। তবে সৌরভ যেহেতু ২০১২ পর্যন্ত আইপিএলে খেলেছেন এবং ধারাভাষ্য ও নিয়মিত কলাম লেখার সুবাদে সমসাময়িক ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ অটুট, তাই ৪১ বছর বয়সি তারকাকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নেন মুদগল। রবিবার বিকেলে সৌরভকে ফোন করে কমিটিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। সৌরভের সম্মতি নিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। এ দিনই আবার ঐতিহ্যবাহী ‘ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি’তে সৌরভকে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমসিসি। একই দিনে দু’টো বড় দায়িত্বের খবর। স্বভাবতই কিছুটা হলেও উত্তেজিত সৌরভ।

তদন্তকারী প্যানেলে বিচারপতি মুদগল ছাড়া রয়েছেন আইনজীবী এল নাগেশ্বর রাও, অসম ক্রিকেট সংস্থার প্রাক্তন কর্তা নিলয় দত্ত এবং সিনিয়র আইপিএস অফিসার বি বি মিশ্র। তবে তাঁরা মূলত প্রশাসনিক ও অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখছেন। ক্রিকেটীয় দিকগুলি খতিয়ে দেখার জন্য সৌরভেরই সাহায্য নেওয়া হবে। সৌরভের ভূমিকা কী হবে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিয়লবাবু এ দিন আনন্দবাজারকে বলেন, “ধরা যাক, কোনও একটি বল বা ব্যাটসম্যানের কোনও একটি শট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে সেটি সন্দেহজনক। কিন্তু সত্যিই কি তা সন্দেহজনক, নাকি ব্যাটসম্যান বা বোলারের স্বতঃস্ফূর্ত অ্যাকশন সেটা সৌরভের মতো এক জন আন্তর্জাতিক মানের সফল ক্রিকেটারের পক্ষেই বিশ্লেষণ করা সম্ভব। উনি এই ব্যাপারগুলোই খতিয়ে দেখে আমাদের মতামত জানাবেন।” অর্থাৎ তদন্তের একটা অংশের দায়িত্ব বর্তাচ্ছে সৌরভের উপরেও। নিয়লবাবুর মতে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।



মন্তব্য চালু নেই