মীর কাসেমের আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ।

আসামীপক্ষকে ২০ মের মধ্যে এবং রাষ্ট্রপক্ষকে ২০ মের পরে এক সপ্তাহের মধ্যে এ সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড থেকে বেকসুর খালাস চেয়ে গত বছরের ৩০ নভেম্বর সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেমের আইনজীবীরা।

সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মীর কাশেম আলীর পক্ষে এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন এ আপিল দায়ের করেন। তার পক্ষে ১৮১টি গ্রাউন্ডে খালাস চেয়ে আপিল করা হয়েছে।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের রায় প্র্রদান করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আনীত ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা জসিম ও জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে হত্যার দায়ে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে রায় প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর এবং ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেম আলীকে সাত বছর করে এবং ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

অপরদিকে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ থেকে মীর কাসেমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মোট ৩৫১ পৃষ্ঠার রায়ের মধ্যে ১১ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্ত রায় আদালতে পড়ে শোনান বিচাপতি ওবায়দুল হাসান।

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর মধ্যে এটি ১১তম রায়।

গত বছরের ৪ মে উভয় পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষামাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।

২০১৩ সালের ১৬ মে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমসহ প্রসিকিউশন টিম ১৪টি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন। এরপর ২৬ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল-১। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।

মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর ছাড়া বাকি সব অভিযোগই আটক করে নির্যাতনের বর্ণনা রয়েছে।

২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ১১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীকে ১৪টি ঘটনায় অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল।

২০১৩ সালের ৬ মে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৪টি অভিযোগে তদন্ত চূড়ান্ত করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশনে জমা দেয়।

২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ওই দিন বিকেলে মতিঝিলের দৈনিক নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।



মন্তব্য চালু নেই