মায়ের কুলখানিতে মাছ-ভাত খেয়েছে মাহির

ঘরোয়া পরিবেশ। বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি। যদিও ছাদে টানানো সামিয়ানার নিচে বসতে কোনো সমস্যাই হচ্ছিল না। দাওয়াতি মানুষজন আসছেন-যাচ্ছেন। এসপি বাবুল আক্তার ও শ্বশুর মোশাররফ হোসেন কুশলাদি বিনিময় করে ছাদ পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে মায়ের কুলখানিতে মোবাইলে গেম খেলায় ব্যস্ত ছোট্ট মাহির।

এতো মানুষের মাঝেও ভ্রুক্ষেপ নেই মাহিরের। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে আসা ছোট বাচ্চা ও আশাপাশের বাচ্চাদের সঙ্গে জমিয়েছে বাচ্চামি। কখনো হাসতে দেখা যাচ্ছে। কখনো বা এদিক সেদিক তাকিয়ে আবারো মোবাইলের স্কিনে নজর।

আমাকে চিনো, তোমার সঙ্গে কিন্তু আগেও দেখা হয়েছিল? এমন প্রশ্নেও ভাবলেশহীন মাহির। কিছুক্ষণ পরে তাকিয়ে বলছিল, ওহ তুমি, নিনজা (খালা) মামুনির সঙ্গে তোমাকে কথা বলতে দেখেছি।

দুপুরে কি খেয়েছো জানতে চাইলে মাহির জানায়, মাংস খাইনি। মাছ-ভাত খেয়েছি। নিনজা মামুনি খাইয়ে দিয়েছে অনেকক্ষণ হলো। ছোট বোন টাপুরের খোঁজ জানতে চাইলে মাহির জানায়, ওর খোঁজ জানিনা। ও নাকি খেলতেছে।

মানুষের ভীড় দেখে ভীত মাহির এক সময় কথাও বলতো না। এখন অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে আগের মতো চাঞ্চল্য হয়তো আর সে ফিরে পাবেনা।

মা মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ৪০ দিন অতিবাহিত হচ্ছে শুক্রবার। এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুর কুলখানি বাদ জুম্মা রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়া ভূইয়াপাড়ায় ২২০/এ বাবুল আক্তারের শ্বশুরালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

কুলখানি অনুষ্ঠানে বাবুল আক্তার ও শ্বশুর পক্ষের আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ট লোকজন ও কাছের পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে।

বাবুল আক্তারের শ্যালিকা শায়লা মোশাররফ নিনজা জানান, ওর মাকে (মিতু) যখন সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তখন মাহির খুব কাছ থেকে দেখেছে। এর প্রভাব পড়ে মাহিরের উপর। যা এখনো পুরো সেরে উঠতে পারেনি।

উল্লেখ্য যে, গত ৫ জুন (রোববার) সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নিজ বাসার ১০০ গজ দূরে ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। এসময় ঘটনাটি খুব কাছে থেকে দেখে ছেলে মাহির।



মন্তব্য চালু নেই