মালদ্বীপে দ্বীপ কিনছে সৌদি, চিন্তিত ভারত
স্মরণকালের সবচেয়ে বিশাল বহর নিয়ে এশিয়ায় সফর করছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে ‘ঐতিহাসিক’ ওই সফর শুরু করেছেন। গত ১ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বাদশা।
এ সফরে সফরসঙ্গী ৬২০ জন। এর মধ্যে রয়েছেন ২৫ জন সৌদি যুবরাজ। এছাড়াও ৮০০ সদস্যের বিশাল প্রতিনিধি দল তো আছেই। সবাই সৌদি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। তাদের জাকার্তায় পৌঁছাতে ৭টি বিমান ভাড়া করা হয়েছে। বাদশা সঙ্গে নিয়েছেন ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি, লিফট।
১৯৭০ সালে বাদশাহ ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজ জার্কাতা সফরে গিয়েছেন। গেল ৪৭ বছরের মধ্যে কোনো সৌদি বাদশাহর দ্বিতীয়বারের ইন্দোনেশিয়া সফর। আগামী ৪ থেকে ৯ মার্চ বালি দ্বীপে অবস্থান করবেন বাদশাহ। ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপ ছাড়াও এশিয়ার আরো চারটি দেশ সফর করবেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ব্রুনাই, জাপান, চীন এবং মালদ্বীপ।
সৌদি বাদশাহর এ সফর এখন ইন্দোনেশিয়ায় প্রধান আলোচনার বিষয়। বিশাল হুলুস্থুল ফেলে দেয়া এ সফরের বহর নিয়েই শুধু গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে যাচ্ছে। তবে ভেতরে ভেতরে যে সৌদি বাদশা বিশাল এক বাণিজ্যের সন্ধানে এসেছেন তার হদিশা নিচ্ছে না কেউই।
বিশেষ করে সৌদি বাদশার মালদ্বীপ সফরের বিষয়টি চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে ভারতের কপালে। কেননা, ভারতের দক্ষিণ সীমান্তের এই দ্বীপ-রাষ্ট্র সম্প্রতি সৌদি বাদশার কাছে তার একটা দ্বীপ বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফাফু নামের ওই দ্বীপটি মালদ্বীপের বিখ্যাত ২৬টি রিং দ্বীপের একটি।
দ্বীপ কেনার বিষয় নিশ্চিত করতেই মালদ্বীপ সফরে যাচ্ছেন সৌদি বাদশাহ। মালদ্বীপের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ নাসিম গণমাধ্যমকে জানান, আগে বিদেশিরা মালদ্বীপে জমি কিনতে পারত না। কিন্তু ২০১৫-র একটি আইনে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় এখন তা বৈধ।
এতোদিন পর্যন্ত ফাফু দ্বীপটির সঙ্গে ৪১ বছরের একটি চুক্তি ছিল ইরানের। তবে এ মুহূর্তে ফাকুর ৩০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিয়েছে সৌদি আরব। যার মধ্যে ৭০ শতাংশই ওয়াহাবি মতাদর্শের। এমন কি এখানকার মাদরাসাগুলিতেও সৌদির শিক্ষকরা শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। দ্বীপের প্রশাসন সূত্রের দাবি, ওয়াহাবি মতাবলম্বীদের কথা মাথায় রেখেই দ্বীপ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি বাদশাহ।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, মালদ্বীপের দ্বীপ বিক্রির সিদ্ধান্ত ভারতের কাছে কতটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার? ঘনঘন বিদেশ সফরে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপে পা রাখেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার সীমান্তের কাছের দেশে সৌদি দ্বীপ কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে চাইলে তার আগেই দেশটি সফরে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিক মহল।
মন্তব্য চালু নেই