মান্নানকে কুলাঙ্গার বলে এ বার বিতর্কে ফিরহাদ
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে এ বার ফিরহাদ হাকিম। সাংসদের পরে এ বার বিরোধী দলের নেতার নামে কুকথা প্রয়োগ করলেন রাজ্যের মন্ত্রীও।
সম্প্রতি হুগলির চণ্ডীতলার এক সভায় বিজেপির জাতীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যে নিযুক্ত পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহকে ‘কুলাঙ্গার’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সেই হুগলিরই গুড়াপে দলের ‘পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলন’-এ গিয়ে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানকেও একই শব্দে বিঁধলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ।
সারদা-কাণ্ডে দলের মন্ত্রী-সাংসদদের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে। ইতিমধ্যেই হাজতে যেতে হয়েছে মন্ত্রী মদন মিত্র, সাংসদ সৃঞ্জয় বসুকে। এ নিয়ে বিরোধীরা সুর চড়াচ্ছে। বিজেপি রাজনৈতিক কারণে সারদা-কাণ্ডকে ব্যবহার করছে বলে তৃণমূল বারবার অভিযোগ তুলছে।
এ দিনও গুড়াপে ওই সম্মেলনের শুরুতে সারদা-কাণ্ড নিয়ে বিজেপিকেই বিঁধছিলেন ফিরহাদ। প্রসঙ্গত, হুগলির কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের খোঁজে সারদা-কাণ্ডের তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই তদন্তে মদন ও সঞ্জয়ের গ্রেফতারি নিয়ে বলতে গিয়েই ফিরহাদ বলেন, “আপনাদের জেলায় একটা কুলাঙ্গার আছে। কী যেন নাম! আব্দুল মান্নান। প্রতিদিন ধুতি-পাঞ্জাবি পড়ে সেজেগুজে টিভির পর্দায় বসছে, আর এর-ওর নামে কুৎসা রটাচ্ছে।”
ফিরহাদের মন্তব্য নিয়ে অবশ্য আব্দুল মান্নান কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তিনি বলেন, “এ সব নিয়ে আমি কিছু বলব না।” তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ, জেলা কংগ্রেস সভাপতি সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওরা আজ এক নেতাকে দিয়ে মান্নানদার নামে গালাগাল করছে, কাল আবার অন্য কাউকে দিয়ে অন্য কোনও বিরোধী নেতার নামে গালাগাল দেওয়াবে। এটা ওদের দলের নীতি, সংস্কৃতি। এ নিয়ে আমাদের মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই।”
সিদ্ধার্থনাথ সিংহের প্রতি ‘কুলাঙ্গার’-সহ আরও কিছু কু-বাক্য বলায় নানা মহলে সমালোচনা শুরু হওয়ার পরে সংসদে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল কল্যাণবাবুকে। কিন্তু তার পরেও কল্যাণ চণ্ডীতলায় দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে একই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। সেই কুকথার স্রোত যে থামছে না, এ বার সেই ইঙ্গিত দিলেন ফিরহাদও। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের অনেকেই।
সে ভাবে কুকথা না বললেও এ দিন বিরোধীদের প্রতি হুমকি শোনা গিয়েছে কালনার এক তৃণমূল নেতার গলায়। কালনার গ্রামে এ দিন একটি দলীয় সভায় কালনা-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায় বলেন, “এখানে সিপিএম যদি মারে, তা হলে আমরা বৈদ্যপুরে ওদের মারব।”
ঠিক পরেই অবশ্য এই হুমকি সামলানোর চেষ্টা করেন মঞ্চে বসে থাকা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তড়িঘড়ি প্রণববাবুর হাত থেকে মাইক নিয়ে তিনি বলেন, “প্রণব কাউকে হুমকি দিচ্ছে এটা মনে করবেন না।”
মন্তব্য চালু নেই