হত্যার ঘটনা পরিকল্পিত

মাকে হত্যা করে বাঁচার জন্যই বাবাকে খুন

পরিকল্পনা করেই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে তাদের মেয়ে ঐশী রহমান হত্যা করেছেন বলে মামলার রায় পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।

মা-বাবা হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার রায়ে বলা হয়, মাকে কফি খাইয়ে অজ্ঞান করে হত্যার দায়ে মামলার প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঐশী রাহমানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তার বাবাকে হত্যার অভিযোগে পৃথকভাবে একই সাজা প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

আদালত তার রায় পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘আসামির (ঐমী রহমান) খুনের ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে সময় নিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। হঠাৎ উত্তেজনার ফলে এমন ঘটনা ঘটেনি।’

আদালতের বিচারক আরো বলেন, ‘আমার ধারণা ওনার (ঐশী) মাকে হত্যার পরিকল্পনা পূর্ব থেকেই। কিন্তু মাকে খুন করে বাঁচতে পারবেন না চিন্তা করেই তিনি বাবাকে খুন করেন। এ হত্যার ঘটনা জঘণ্য ছাড়া কিছু নয়। তাই সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়েছে। তবে রায় লেখার পূর্বে সামাজিক চিন্তা ছাড়াও নানান বিষয় চিন্তা করেছি।’

oisi1

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে।

এদের মধ্যে এই অপরাধে সহায়তাকারী মামলার অন্যতম আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে ৩০২ ও ১০৯ ধারায় খুনের অপরাধ থেকে খালাস দিয়েছেন। পাশাপাশি মামলার অপর আসামি মিজানুল রহমান রনিকে ১১২ ধারা মোতাবেক আসামিকে আশ্রয় প্রদানের দায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের জেল দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া বাসার গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে সুমিকে জামিন দেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পায় সে।



মন্তব্য চালু নেই