ভালোবেসে রোজা রাখছেন আমিরাতের এক অমুসলিম
রমজানের প্রথম সপ্তাহ প্রায় শেষ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতেও লাখ লাখ মুসলিম রোজা পালন করছেন। দেশটিতে হাজার হাজার অমুসলিমেরও বসবাস রয়েছে। তাদের কাছে রমজান অন্যান্য মাসের মত সাধারণ একটি মাস মনে হলেও ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জ্যাসন লু জিহ সেং নামের এক অমুসলিম।
মালয়েশিয়ান বংশোদ্ভূদ ৩৩ বছর বয়সী চীনা নাগরিক জ্যাসন ৯ বছর ধরে আরব আমিরাতে বসবাস করে আসছেন। মুসলিম না হয়েও খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী জ্যাসন পুরো রমজান মাসে উপবাস থাকার পরিকল্পনা করেছেন। শুধু পরিকল্পনা নয়, ইতোমধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত রোজা রেখেছেন তিনি।
জ্যাসন লু জিহ সেং আরব আমিরাতের জাতীয় দৈনিক খালিজ টাইমসকে বলেন, আমিরাতে আসার পর থেকেই তিনি দেশটির অনন্য সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার জন্য প্রেরণা অনুভব করেন। সেই সঙ্গে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতেও আগ্রহ তৈরি হয় তার।
আবু ধাবির অাল ফাহিম পরিবারের ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন জ্যাসন। প্রতিনিয়ত ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন তিনি। জ্যাসন লু জিহ সেং বলেন, আমার মা খ্রিস্টান ও বাবা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী, কিন্তু তারা আমাকে সত্য খুঁজে পেতে ক্যাথলিক, বৌদ্ধ বা একজন মুসলিম হওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, রমজান তাকে আরব আমিরাতে লাখ লাখ মুসলমানদের অভিজ্ঞতা অনুভব করার বড় সুযোগ করে দিয়েছে।
জ্যাসন বলেন, মালয়েশিয়া মুসলিম দেশ, সুতরাং অামি যখন ছোটবেলায় স্কুলে ছিলাম তখন থেকেই উপবাস থাকার চেষ্টা করেছি, আমার আশপাশের পরিবেশ ও মানুষের কাছ থেকে সে ধরনের কোনো প্রেরণা না পাওয়ায় তা করতে পারি নাই। কিন্তু আরব আমিরাতে রোজা পালন করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রেরণা পাই।
রোজা রাখা তার জন্য সহজ না হলেও এই অভিজ্ঞতার ফল তিনি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে রোজা রাখা কঠিন হলেও আমি খাবার গ্রহণে এক ধরনের পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হচ্ছি; একটি নিয়মিত সূচি এবং সুস্থ জীবনধারা নিয়ন্ত্রণ করছি।
জ্যাসন ইফতারের সময়কে খুব উপভোগ করছেন। আর এটি শুধুমাত্র আমিরাতি খাবার ব্যবস্থার জন্য নয়, ভিন্ন ধর্মীয় ও ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে একত্রে ইফতারে অংশ নেওয়ার কারণে বেশ উপভোগ করছেন তিনি। জ্যাসন বলেন, আমি মজলিসে নিয়োগকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে ইফতার করতে ভালোবাসি।
তিনি বলেন, রোজা শুধু উপবাস থাকার জন্যই নয়; প্রয়োজনে অন্যের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যও। যদিও আমি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করিনি, তারপরও রোজা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ আমি বুঝতে চাই এটি কেমন।
সূত্র : খালিজ টাইমস।
মন্তব্য চালু নেই