ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ শনিবার জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন জিইয়ে থাকা কাশ্মীর সমস্যা নিরসনে মধ্যস্থতায় আগ্রহী ইরান।
ভারত ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ইরানের প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
ডন অনলাইনের এক খবরে রোববার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জারিফ বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের যে বন্ধন আছে, তা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা উভয় দেশেরই ভালো চাই।’
‘তাদের কারো জন্য ইরান যদি সহযোগিতায় আসতে পারে, তার জন্য আমরা প্রস্তুত। আমরা গায়ে পড়ে কাজ করতে চাইছি না। কিন্তু আমরা প্রস্তুত এই কারণে যে, দুই দেশই আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা সাধারণ বিষয়গুলো ভাগাভাগি করি।’
পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে সহযোগিতা করার প্রস্তাবও দিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মতো প্রিয় দুই বন্ধুর মধ্যে সুসম্পর্কের আশা ব্যক্ত করেন জারিফ।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সময় এ প্রস্তাব দিলেন, যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ ভারতে হার্ট অব এশিয়া সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। ভারতের অমৃতস্বরে মন্ত্রী পর্যায়ের এ সম্মেলন হচ্ছে।
হার্ট অব এশিয়া সম্মেলনে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সারতাজ আজিজ। আফগানিস্তান ও অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও সন্ত্রাসবাদের হুমকি মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা করছে পাকিস্তান।
অস্থিতিশীল কাশ্মীর পরিস্থিতি ও ভারতের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরিচালনার জেরে দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যায়। সীমান্তে গোলাগুলি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। উভয় দেশের কূটনীতিকদের একাধিকবার ডেকে সরকারের পক্ষে সীমান্তে হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়।
উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে বিশ্বে একঘরে করার ঘোষণা দেন। হামলার পর ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ ঘোষণা করেন এবং হামলায় পাকিস্তান যুক্ত বলে অভিযোগ করেন।
এর কিছু দিন পর জাতিসংঘে ভাষণ দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কাশ্মীরে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার জবাবে পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরিচালনার দাবি করে ভারত। কিন্তু পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে। পাকিস্তান দাবি করে, কাশ্মীরে ভারত সরকারের মানবাধিকার হরণের বিষয়গুলো থেকে বিশ্বের দৃষ্টি অন্য দিকে সরানোর চেষ্টা করছে ভারত।
বর্তমানে দুই দেশের সীমান্ত কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিকভাবে কোণঠাসা ইরানের আকস্মিক এ প্রস্তাবে পরমাণু শক্তিধর দুই রাষ্ট্র সাড়া দেবে কি না, তা বলা মুশকিল।
তথ্যসূত্র : ডন অনলাইন।
মন্তব্য চালু নেই