ভারতে বকেয়া কর আদায়ে ব্যবহার করা হচ্ছে হিজড়াদের

বিশাল অর্থনীতির দেশ ভারতে জাতীয় কর আদায়ে ব্যবহার করা হচ্ছে হিজড়া জনওগাষ্ঠীকে। আর এতে ভালোই ফল হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ভারতের চেন্নাই কর্পোরেশন আরও বিভিন্ন সংস্থার বকয়ো কর আদায়ে হিজড়াদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছেন। আর এ ব্যবস্থা ভবিষ্যতে আরও ফলপ্রসু হবে বলেও মনে করছেন তারা।

ভারতের চেন্নাইতে নগর কর্পোরেশন একটি পাঁচতারা হোটেলের বকেয়া কর আদায়ে সেখানে হিজড়াদের দল পাঠিয়ে সফল হওয়ার পর থেকেই এই পদ্ধতির ভালো ফল দেখছে কর্তৃপক্ষ। হিজড়ারা ওই হোটেলের সামনে গিয়ে হইচই শুরু করার পর মাত্র আধঘন্টার মধ্যে হোটেল কর্তৃপক্ষ বকেয়া কর মিটিয়ে দেন বলে জানা গেছে।

ঢাকঢোল নিয়ে গিয়ে তারা ওই পাঁচতারা হোটেলের সামনে গানবাজনা আর চেঁচামেচি শুরু করার মিনিটকয়েক পরেই বিব্রত হোটেল কর্তৃপক্ষ পুরো কর মিটিয়ে দেন বলে জানা গেছে। অভিযানের সাফল্যে চেন্নাই কর্পোরেশন যথারীতি খুব খুশি।

ভারতের একজন আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্ট আদিত্য ব্যানার্জি বলেন, আইন না ভাঙা হলেই হল। কর বা বকেয়া ঋণ আদায়ের জন্য বিভিন্ন সংস্থা মাসলম্যান কাজে লাগায় বা আরও নানা বেআইনি পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। তাতে আপত্তি না-থাকলে এখানে কীসের আপত্তি?

আদিত্য ব্যানার্জি আবার হিজড়াদের কর্মসংস্থানকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, তিনি বলছেন এভাবে কর আদায়ের মাধ্যমে হিজড়াদের উপার্জনের একটা পথ খুলে যেতে পারে। আর এখানে যে একটি সরকারি সংস্থাই তাদের কাজে লাগিয়েছে, সেটাও তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন।

কিন্তু উপার্জনের এরকম একটি পথ পেয়েও পুরোপুরি খুশিও হতে পারছেন না ভারতে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য আন্দোলনকারীরা। এতে তাদের কি লাভ বা ক্ষতি তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

নাজ ফাউন্ডেশনের অঞ্জলি গোপালনের মতে, জোর করে টাকা আদায় করে বলে হিজড়াদের এমনিতেই বদনাম। আমার আশঙ্কা হল, এই ধরনের খবর প্রচার হলে হিজড়ারা শুধু জোর করে টাকা আদায় করে- তাদের ওপর সেই ছাপ্পাটাই আরও জেঁকে বসবে, লোকে বলবে ওরা তো ওরকমই!

অঞ্জলি গোপালন কিন্তু মনে করছেন, হিজড়াদের এখানে শেমিং টুল বা লজ্জায় ফেলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেটা সেই সমাজের জন্য খুব কাঙ্ক্ষিত নয়। তাঁর প্রশ্ন, আমাদের ভাবতে হবে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ আগে কেন বকেয়া মেটাননি, আর এখন হিজড়াদের দেখেই বা কেন মেটাচ্ছেন? কর না-মেটানো তত লজ্জার নয়, কিন্তু হিজড়ারা তার চেয়েও বেশি লজ্জার?

সূত্র: বিবিস



মন্তব্য চালু নেই