ভারতে খৃস্টান বানাচ্ছে এই গুজবে মাথা কামিয়ে জুতার মালা পরিয়ে শাস্তি
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এক ব্যক্তিকে হিন্দুত্ববাদীরা মাথা নেড়া করে জুতোর মালা পরিয়ে রাস্তায় ঘুরিয়েছে।
ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের অভিযোগ যে তিনি তিনজনকে খৃস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করিয়েছেন আর ওই হিন্দুদের জোর করে গরুর মাংস খাইয়েছেন।
জালায়ূঁ জেলার সদর শহর ওরাইয়ে শুক্রবারের এই ঘটনা আজ সামনে এসেছে।
উত্তর প্রদেশের পুলিশ বলছে, অওধেশ নামে এক ব্যক্তির গ্রামের বাড়িতে প্রায় দুশো লোক চড়াও হয় আর তাকে জোর করে বাইরে নিয়ে আসা হয়।
জালায়ূঁর জেলা সদর ওরাইতে নিয়ে এসে মি. অওধেশের চুল, ভুরু, গোঁফ সব কামিয়ে দিয়ে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হয়।
ওই জনতার মধ্যে বেশীরভাগই ছিল হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের সদস্য।
তাদের অভিযোগ যে অওধেশ নাকি তিনজন হিন্দুকে একটা চার্চে নিয়ে গিয়ে খৃস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করিয়েছেন তারপর ওই ব্যক্তিদের জোর করে গরুর মাংসও খাওয়ানো হয়েছে।
ধর্মান্তরকরণের জন্য যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল – সেরকম এক ব্যক্তিকে হাজিরও করায় বজরং দলের সদস্যরা।
এই উত্তর প্রদেশেই বাড়িতে গরুর মাংস রাখার অভিযোগে মোহাম্মদ আখলাককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়
পুলিশ অওধেশকে বাঁচাতে গেলে তাদের ওপরেও চড়াও হয় বজরং দলের কর্মীরা। পরে বড় বাহিনী নিয়ে গিয়ে উদ্ধার করা হয় অওধেশকে।
জালায়ূঁ জেলার পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট এন কোলাঞ্চি বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ৫ জন বজরং দল সদস্য ও একজন নাপিতসহ মোট ছয়জনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মি. কোলাঞ্চি আরও বলেন, “ধর্ম পরিবর্তন করানোর যে অভিযোগ উঠেছিল অওধেষের বিরুদ্ধে, তদন্ত করে দেখা গেছে যে সেটা মিথ্যে। এরকম কোনও ঘটনাই হয় নি।”
অওধেষের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পরে মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে।
উত্তর প্রদেশে এর আগে একই রকম গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে এক মুসলমান পরিবার বাড়িতে গরুর মাংস রেখেছেন। কয়েক মাস আগের ওই ঘটনাটা ছিল এই উত্তর প্রদেশের রাজ্যেরই দাদরী নামের এক গ্রামে – রাজধানী দিল্লির কাছে।
ওই গুজবের জেরে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয় মধ্যবয়সী একজন মুসলমানকে।
তার প্রতিবাদ হয়েছিল দেশজুড়ে।
মন্তব্য চালু নেই