স্কটল্যান্ড-দলের বিস্ময়কর উত্থান

ব্রিটেনে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ক্যামেরন

ব্রিটেনে সব হিসেব-নিকেশ উল্টে দিয়ে, প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কনসারভেটিভ পার্টি, আবার দেশ শাসনের জন্যে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ফলে সরকার গঠনের জন্যে তাদের আর কোনো দলের ওপর নির্ভর করতে হবে না।গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে বিরোধী লেবার পার্টি। ছয় সপ্তাহ ধরে প্রার্থীদের ব্যস্ত প্রচারণা পর্বে প্র্রায় সব জনমত জরিপই বলছিল এই নির্বাচন ব্রিটেনের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ইতিহাসে সবচেয়ে অনিশ্চয়তায় ভরা নির্বাচন।দুই প্রধান রাজনৈতিক দল – কনসারভেটিভ আর লেবার পার্টির মধ্যে কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না জরিপের এমন ইঙ্গিতের পরেও কনসারভেটিভ দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অভিভূত ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন কয়েক প্রজন্মের মধ্যে এটা দলের জন্য তার ভাষায় ‘মধুরতম বিজয়’।

”আমি এমন এক দল এবং সরকারে নেতৃত্ব দিতে চাই – যে দল – যে সরকার এক জাতি এবং অখন্ড যুক্তরাজ্যে বিশ্বাসী। এই বিশ্বাসকে আমি পুনরুদ্ধার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”মিঃ ক্যামেরন বলেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের সদস্যপদ নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠান এবং কনসারভেটিভের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কাজ তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন ।

কিন্তু ব্রিটেনের অখন্ডতার বিষয়ে তিনি জোর দিলেও দেশের উত্তরে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাপন্থী স্কটিশ ন্যাশানাল পার্টি বা এসএনপি-র ব্যাপক সাফল্য তার সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ।

নিকোলা স্টারজেনের নেতৃত্বাধীন এসএনপি সেখানে ৫৯টি আসনের মধ্যে ৫৬ টিতেই জয়ী হয়েছে। এর আগে তাদের আসন সংখ্যা ছিল মাত্র ছয়। কটল্যান্ডে কনসারভেটিভ পেয়েছে মাত্র একটি আসন ।

অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি যাদের একটা শক্ত ঘাঁটি ছিল স্কটল্যান্ড, সেই স্কটল্যান্ডে দলের ভরাডুবি হয়েছে। তারা সেখানে ৪০টি আসন হারিয়েছে । লেবার পার্টি ইংল্যান্ডেও নতুন আসনে জিততে ব্যর্থ হয়েছে।

পরাজয়ের সব দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ কেরেছন লেবার পার্টির নেতা এড মিলিব্যান্ড।

”লেবার পার্টির জন্য এটা ছিল খুবই কঠিন ও হতাশাজনক রাত। আমরা ইংল্যান্ড, ওয়েলস্‌, স্কটল্যান্ড কোথাওই নতুন আসনে জিততে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের দলের সবকিছুকে ম্লান করে দিয়েছে জাতীয়তাবাদের উত্থান।”

লেবার পার্টির শীর্ষস্থানীয় কিছু সদস্য হেরে গেছেন যাদের মধ্যে রয়েছেন লেবারের ছায়া অর্থমন্ত্রী এড বলস্। বিদায়ী কোয়ালিশন সরকারের শরিক- লিবারেল ডেমোক্র্যাটসেরও এই নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে। বিগত সরকারের বেশ কিছু মন্ত্রী তাদের আসনে জিততে ব্যর্থ হয়েছেন। দল পেয়েছে হাতে গোণা মাত্র কয়েকটি আসন। দলের নেতা নিক ক্লেগও আজ পদত্যাগ করেছেন।

”বেদনাদায়কভাবে এটা স্পষ্ট যে লিবারেল ডেমোক্রাট দলের জন্য রাতটা ছিল নিষ্ঠুর ও শাস্তির। এই নির্বাচনের ফলাফল দলের জন্য গভীরভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

অভিবাসন ও ইউরোপবিরোধী কট্টর ডানপন্থী ছোট্ট একটি দল ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টি বা ইউকিপ, মোট ভোট সংখ্যার বিচার আবির্ভুত হয়েছে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে।

দলটি মাত্র একটি আসনে বিজয়ী হলেও ৩৮ লাখ মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে। এই দলের নেতা নাইজেল ফারাজও আজ পদত্যাগ করেছেন।

সূত্র বিবিসি
ব্রিটেনের মসনদে আবারও রক্ষণশীল ক্যামেরন : স্কটল্যান্ড-দলের বিস্ময়কর উত্থান


মন্তব্য চালু নেই