ব্যর্থ অভ্যুত্থানের মদদদাতা গুলেনকে নিয়ে তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র টানাপোড়েন
তুরস্কে নিষ্ফল সামরিক অভ্যুত্থানের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এরদোয়ান সরকারের বিরোধ দানা বেধে ওঠার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছেন প্রবাসী ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেন। অভ্যুত্থানের ঘটনায় সরাসরি ওই প্রবাসী নেতাকে অভিযুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাকে ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছে আঙ্কারা। কিন্তু তাদের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ওয়াশিংটন।
শুক্রবারের সামরিক বিদ্রোহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করে তাকে আঙ্কারা সরকারের হাতে তুলে দিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান। শনিবার বিকেলে রাজধানী আঙ্কারায় পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার সময় এরদোয়ান বলেন,‘যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কৌশলগত বন্ধু রাষ্ট্র, সুতরাং তারা নিশ্চয়ই পেনসিলভানিয়া থেকে তাকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করবে।’
কিন্তু তার এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ওবামা সরকার। এছাড়া কোনো ধরনের সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন নির্বাসিত নেতা গুলেনও।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, গুলেনকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হলে, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ দেখাতে হবে। তিনি আরও বলেন, অভ্যুত্থান চেষ্টার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা কোনও ধরনের অভিযোগ ন্যাটো সহযোগী রাষ্ট্র দুটোর সু-সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পেনসিলভিয়ায় বেসবাস করছেন ৭৫ বছরের তুর্কি নেতা গুলেন। শুধু তুরস্কে নয়, তিনি গোটা বিশ্বের একজন প্রভাবশালী মুসলিম নেতা হিসেবে পরিচিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তুরস্কের এই সংকটময় মুহূর্তে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে এমন যেকোনো ধরনের কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকতে এবং আইনের শাসন মেনে চলতে দেশটির সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে শুক্রবারের ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর মার্কিন নাগরিকদের তুরস্ক সফর বর্জনের পরামর্শ দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে তারা আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছে,‘তুরস্কে ভ্রমণের সময় বিদেশি ও মার্কিন নাগরিকরা দেশি বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর টার্গেটে পরিণত হতে পারে।’
অভ্যুত্থানের পর তুর্কী সরকার সে দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়ায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন ঘাঁটি থেকে বিমান হামলা আপাতত বন্ধ রয়েছে। মার্কিন সরকারের একজন মুখপাত্র এ খবর জানিয়েছেন।
এদিকে তুরস্কের নির্বাচিত সরকারকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে আনা একটি খসড়া প্রস্তাব মিশরের বিরোধিতার কারণে আটকে গেছে।
মন্তব্য চালু নেই