বিয়ের আসরেই বউকে তালাক

বিয়ের আগে কখনো তাদের দেখা হয়নি। বিয়ের পরে বর যখন ঘোমটা খুলে প্রথমবারের মতো কনের মুখ দেখলেন, তিনি চমকে উঠলেন। বললেন, ‘আমি যেমনটি ভেবেছিলাম, তুমি তেমনটি নও। আমি সত্যিই দুঃখিত, তোমাকে এখনই তালাক দিতে হচ্ছে।’

বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত বরযাত্রী ও কনের আত্মীয়স্বজনরা বরকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কারো কথাই কানে তোলেননি ওই বর। তিনি বলে দিলেন, তালাক, তালাক, তালাক। ব্যস, বিয়ের আসরেই শেষ হয়ে গেল একটি মেয়ের বাসর-সংসারের সব স্বপ্ন।

বর-কনের কবুল বলার পর স্বামী-স্ত্রীকে এক জায়গায় আনা হয়। ফটোসেশনের জন্য নয়া স্ত্রীর মুখের ঘোমটা খোলা হয়। মুখে দেখে আচমকাই দাঁড়িয়ে পড়েন স্বামী। এরপর যা ঘটার তা তো ঘটলোই। তালাক হলো, নতুন স্ত্রীর কপাল পুড়ল।

সৌদি আরবের মদিনায় ঘটেছে এই ঘটনা। বিয়ে ছেলেমেয়ে উভয়েরই জীবনে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মানুসারীদের জন্য। আর সৌদি আরবের বিয়ে মানে অনেক ব্যাপার। পাত্র-পাত্রী যাচাই-বাছাইয়ে দুই পরিবারের ঘুম হারাম হয়ে যায়। কারণ সেখানে পরিবারের অমতে বিয়ে করাটা শোভনীয় নয়। সৌদি আরবের রক্ষণশীল সমাজে পুরুষরা বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক। তাদের ইচ্ছামর্জির ওপর নির্ভর করে স্ত্রীকে তালাক দেওয়া না দেওয়ার বিষয়টি। এই সুযোগ নিয়ে হৃদয়হীন এক বর বিয়ের আসরেই স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখালেন। আর এর বলি হলেন এক নিরীহ মেয়ে।

সৌদির রক্ষণশীল সমাজে একজন বিবাহিত নারীর আবারও বিয়ে হওয়াটা খুবই কঠিন। সমাজের নানা বাধার মুখে পড়তে হয় তাকে। সেসবের কোনো তোয়াক্কা না করেই, কল্পনার নারীর অভাব পূরণ করতে না পারায়, সদ্যবিবাহিত স্ত্রীকে বিয়ের দিনই তালাক দিলেন ওই পাষ- স্বামী।

সৌদি আরবের ওকাজ পত্রিকার বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ ও ডেইলি মেইল জানিয়েছে, বিয়ের আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাওয়া ছেলেমেয়েরা নিজেদের দেখেননি। এরকম রীতিও দেশটিতে নেই, বিয়ের আগে ছেলেমেয়ের দেখাদেখি হবে। পরিবারের সিদ্ধান্তেই তারা বিয়ের পিড়িতে বসেন। এই রীতির মাশুল দিতে হলো একটি মেয়ের স্বপ্ন-সাধের বলিদানের মধ্য দিয়ে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। সমাজের এরকম অন্ধকার রীতিকে আইন করে নিষিদ্ধ করারও দাবি উঠেছে।



মন্তব্য চালু নেই